['মাকড়সা'র আল্লাহ বিষয়ক লেখায় নীচের তিন লাইনের কমেন্টটা পোষ্ট করার পর আরো কয়েক লাইন লিখার ইচ্ছে হলো। তাই পুরো লেখাটা দিয়ে দিলাম পোস্ট আকারে]
“খেলিছ এ বিশ্বলয়ে, বিরাট শিশু আনমনে…….”
আমি সামান্য মানুষ যখন গুগলে ‘আফ্রিকা’ লিখে একটা ক্লিক করি, ০.২২ সেকেন্ডের মধ্যে আফ্রিকা সম্পর্কে ৪৫ কোটি তথ্য হাজির হয়। বিজ্ঞানের সামান্য খেলা। আর যিনি পুরো বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন, তাঁর খেলার মাঠ আর ক্ষমতার পরিধি কি কল্পনা করা যায়?
যদি ৫০ বছর আগেও কোন মানব সন্তান হাতের এক ইশারায় সেকেন্ডের মধ্যে বিশ্বের যে কোন বিষয়ের উপর ১ কোটি তথ্য হাজির করবে বলতো তাঁকে পাগলা গারদে পাঠানোর ব্যাপারে দ্বিধা করতো না খোদ বিজ্ঞানীরাও। কিন্তু প্রযুক্তির অগ্রগতি আমাদের পুরোনো ধারনাগুলোকে দ্রুত বদলে দিচ্ছে। একসময় আমিও সংশয়বাদী ছিলাম। আস্তিক ও নাস্তিকতার মাঝামাঝি। অনেক প্রশ্নের উত্তর হুজুরেরা দিতে পারতো না। বরং কৌতুহল বেশী দেখানোর কারনে নাস্তিক হিসেবে গন্য হতাম। আল্লাহ নাকি বেশী কৌতুহল পছন্দ করেন না। কিন্তু নিজে নিজে পড়াশোনা করে জেনেছি বিজ্ঞান আল্লাহ নেই কথাটা কোথাও বলেনি, যেমনটা বলেনি আল্লাহ আছে। কিন্তু বিজ্ঞান আমাকে যা শিখিয়েছে, তাতে বুঝেছি কোথাও কেউ বসে কলকাঠি নাড়ছে। নাহলে মহাকাশের হাজার কোটি নক্ষত্রজগত শতকোটি বছর ধরে এত নিয়ম শৃংখলা মেনে চলাচল করে কীভাবে।
যেমন মাঝে মাঝে আমি ঠাট্টা করে বলি, বিশ্বের আকৃতি বোধহয় গোল। নাহলে সবকিছুর মধ্যে প্রদক্ষিন করার প্রবনতা কেন? চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে, পৃথিবী সুর্যের, সুর্য নীহারিকার, নীহারিকাও ঘুরছে কিছু একটাকে ঘিরে। আবার অনু-পরমানুর ক্ষেত্রেও এই ঘোরার প্রবনতা আছে। কোথায় যেন পড়েছি পরমানুর মধ্যে প্রোটনের চারপাশে ইলেক্ট্রনের ঘুর্নির গতি নাকি সেকেন্ডে ১৩০০কিমি। গতি যেটাই হোক, কিন্তু এই যে ঘোরার প্রবনতা তার কোন একটা মানে নিশ্চয়ই আছে। যার উত্তর আমরা এখনও পাইনি। তবে এই প্রদক্ষিন প্রবনতার কারনে বিশ্বের আকৃতি গোলাকার হতে পারে বলে মনে হয়। চারকোনা তিনকোনা হলে, ঘুরতে পারতো না এভাবে।
ইন্টারনেটে সার্চ ইন্জিনের ক্ষমতা দেখে আমার অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। গুগলের সাথে সেই শুরু থেকেই আছি। এত বেশী নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি, যে কোন তথ্য, এমনকি বানানটা পর্যন্ত যাচাই করি গুগল দিয়ে। গুগলের তথ্য হাজিরের সেই ক্ষমতা দেখে মনে হলো মানুষ যদি নিমেষে পুরো বিশ্বের যে কোন তথ্য হাজির করতে পারে, আল্লাহ যে অনেক বেশী পারে কোন সন্দেহ নেই। তাছাড়া আগামীতে যে প্রযুক্তি আসছে তাতে যে কোন সাধারন মানুষও হাতের মুঠোয় পৃথিবীর যে কোন জায়গার বর্তমান অবস্থানের ‘লাইভ’ ছবি দেখবে, এখন আমরা যা google earth-এ ‘ডেড’ ছবি দেখি।
কিন্তু যারা ধর্মের গুরু, তারা কিন্তু আমাদের বিজ্ঞান থেকে দুরে রাখার চেষ্টা করে। বিজ্ঞান তারা নিজেরাও পড়েনা, আমাদেরকেও নিরুৎসাহিত করে পড়তে। তাদেরকে ঈশ্বর বা আল্লাহ আছে কোন প্রমান দিতে বললে, মুখস্ত ধর্মগ্রন্থের উদ্ধৃতি বাদে আর কোন প্রমানের কথা বলতে পারে না। মানুষকে বিশ্বাসযোগ্য কিছু বলার মতো খুজে পায় না। কারন তারা বিজ্ঞানকে মনে করে ধর্মের শত্রু । অথচ আমি দেখেছি ঈশ্বর বিশ্বাসের ক্ষেত্রে আস্তিকদের সবচেয়ে বড় বন্ধু হলো বিজ্ঞান। বলা যায় বিজ্ঞানের কারনেই আমি আস্তিক হয়েছি।
No comments:
Post a Comment