Monday, May 20, 2013

চিড়িয়া-খানা

১.
অনেকদিন কিছু লেখা হয়নি। লেখালেখি থেকে ছুটি নিয়ে ফেলেছি নানাবিধ ব্যস্ততায়। ব্যস্ততার চেয়েও বেশী বাস্তব কথা হবে অস্থিরতা। লেখালেখির জন্য যেরকম মানসিক সুস্থিরতা দরকার তার কোনটাই নেই গত কয়েকমাস ধরে। অথচ দিন যাপনে তার কোন ছাপ নেই। প্রতিদিন অফিস করছি, বাড়ি ফিরছি, খাচ্ছি, ঘুমোচ্ছি, নেমন্তন্ন রক্ষা করছি, বাজার সদাই করছি, ধোঁয়া ওড়াচ্ছি, জীবিকার চোদ্দগুষ্টি উদ্ধার করছি, সবই ঠিক আছে। তবু কি যেন ঠিক নেই। কোথাও যেন সরে গেছে কিছু একটা। কয়েকমাস আগের আমি যেন ঠিক আমিতে নাই। বিশ্বাস হারিয়েছি বিশ্বস্ত কোন জিনিসের উপর।

২.
আমি একটা চিড়িয়াখানায় কাজ করি। নাহ ঠিক হলো না। বলা ভালো আমি চিড়িয়াখানার একজন সদস্য। এখানে আরো অনেক চিড়িয়ার সাথে আমিও দিন যাপন করি। চিড়িয়াখানা জায়গাটা খারাপ না। অন্ততঃ হিংস্র জানোয়ারের কাছ থেকে নিরীহ জানোয়ারগুলো নিরাপদ থাকে। আমাদের একবেলা খাবার দেয়া হয়। সেই খাবার খেয়েই আমরা বেঁচে থাকি। আসলে এক বেলায় যতটুকু দেবার কথা, তার চেয়ে কম দেয়া হয়। ফলে সবগুলো জানোয়ার দুর্বল হয়ে পড়েছে। কিন্তু এর মধ্যেও কিছু কিছু বুদ্ধিমান জানোয়ার জায়গা করে নিয়েছে। তৈলাক্ত বানর। না তারা কোন বাঁশ বেয়ে ওঠে না। তারা বরং বাঁশে তেল মেখে অন্য জানোয়ারের পাছায় মসৃনভাবে সেঁদিয়ে দেয়। এতে ওই জানোয়ারের যাই হোক, কতৃপক্ষ বিমলানন্দ পায়। আমাদের চিড়িয়াখানার একটা প্রিয় শ্লোগান হলো, পাছা সামাল। দূর থেকে তৈলাক্ত বানর দেখামাত্র সবাই সমস্বরে গুঞ্জন করে ওঠে - পাছা সামাল। 

একদিন বাঁশ দেয়ার মতো কোন জানোয়ার অবশিষ্ট না থাকাতে দুই তৈলাক্ত বানর বসে বসে ঝিমোচ্ছিল বাঁশে হেলান দিয়ে। তখন চিড়িয়া কতৃপক্ষ সেই বাঁশদুটি তাদের পেছনে প্রবেশ করিয়ে চিড়িয়াখানার গেটের দুই পাশে খাড়া করে রাখলো। ওই ঘটনার পর থেকে চিড়িয়াখানায় আর কোন তৈলাক্ত বাঁশ বা বানর দেখা যায়নি।

৩.
ল যাই! এই চিড়িয়াখানা ছেড়ে অন্য কোথাও!