Sunday, November 2, 2008

বিক্ষিপ্ত স্বগোতক্তি (রাজনীতি বিষয়ক)

শীয় রাজনীতির ব্যাপারে আমি বরাবর কনফিউজড টাইপের মানুষ। সক্রিয় রাজনীতি কখনই করিনি। কিন্তু প্রগতিশীল ঘরানার পড়াশোনা এবং চিন্তাচেতনার কারনে কমিউনিষ্ট হিসেবে ব্র্যান্ডিং-এর শিকার হয়েছি অনেকবার। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে মিছিলে মিটিং-এ অংশ নিয়েছি, কিন্তু কোন বিশেষ দলের হয়ে নয়, বরং কোন বিশেষ বিশেষ প্ল্যাটফর্মের সমর্থনে। যেমন এরশাদ বিরোধী জোট কিংবা জামাত-শিবির বিরোধী জোট। সাংস্কৃতিক জোটের আন্দোলনেও ছিলাম কয়েক বছর যেমন গ্রুপ থিয়েটার আন্দোলন। বুদ্ধি হবার পর থেকে বাংলাদেশে ধান্ধাবাজ রাজনীতিবিদদের দেখেই বড় হয়েছি। তাই কোন বিশেষ দলের প্রতি দুর্বলতা জন্মানোর ছিল না। বড় দলগুলোর মধ্যে বিএনপি-র প্রতি আমার কখনোই আস্থা ছিল না কারন দলটার ৯৯% মেড ইন ধান্ধাবাজ বলে আমার ধারনা। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রতি খানিকটা ঝোঁক ছিল পারিবারিকভাবেই। যদিও এদের ৬০ভাগেরও বেশী নেতা ধান্ধাবাজ বলে আমার ধারনা। আওয়ামী লীগকে জাতীয় নির্বাচনে দুবার ভোট দিয়েছি ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে। দুবারই আশাহত হয়েছি দুই কারনে। ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না আসার কারনে হতাশ হয়েছিলাম আর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের বাজে পারফরমেন্সে হতাশ হয়েছি। সেই হতাশা থেকে ২০০১ সালে ভোট কেন্দ্র যাইনি আর। ভবিষ্যতেও যাবো না বলে ঠিক করেছি যদি প্রচলিত ধারার রাজনীতি অব্যাহত থাকে।

এদেশে অনেক মানুষ আছেন যারা আওয়ামীলীগ করেন না কিন্তু শেখ মুজিবকে পছন্দ করেন। আবার শেখ মুজিবকে পছন্দ করলেও শেখ হাসিনাকে করেন না। আমিও তেমন। শেখ হাসিনাকে আমি শেখ মুজিবের অযোগ্য কন্যা বলে মনে করি। রাজনীতির প্রধান দুটো উপাদান হলো বাকপটুতা এবং ক্যারিশমা। দুটোর একটাও হাসিনার নেই। শেখ মুজিবের অনেক দুর্বলতা থাকলেও এই দুটি গুনের কারনেই সারা বাংলাদেশের অবিসংবাদী নেতা হতে পেরেছিলেন।

এদেশে আওয়ামী লীগের বিপরীতে যদি মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষ একটি দল বিএনপির মতো দাড়িয়ে যেতো, আমি খুশী হতাম। এমনকি বিএনপি যদি ১৯৮১ সালের বিএনপি হতো, তাও চলতো। কিন্তু ২০০৮ সালে আমরা যে বিএনপিকে দেখি তা বিএনপি’র খোলসে জামায়াতে ইসলামী।

তাই আমার মতো যারা তারা রাজনীতি শূন্যতায় বেশী স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। এটা রাজনীতির বিপরীত স্বার্থপরতা। আমি এখন সেই স্বার্থপরতার জগতে বাস করছি। টেলিভিশন খুললেই যেসব মুখের বাকোয়াজগিরি শুনতে হয় তাদের অনেকের ব্যক্তিগত অসততার কথা আমি জানি। এও জানি তারা যা বলছে তারা সেটা বিশ্বাস করে না। দিনের বেলা বনানীতে যে কথা বলেন রাতের বেলা উত্তরা ক্লাবে অন্য কথা, অন্য ধান্ধা। এসব দেখতে অস্বস্তি লাগে বলে টিভিতে হাসির নাটক বা কমেডি মুভি বাদে কিছু দেখতে ইচ্ছে হয় না। তাই ১/১১-ডে এই সরকার যখন রাজনীতির উপর ডান্ডা মেরে ক্ষমতায় আসলো, দারুন পুলকিত হয়েছিলাম আমি। ভেবেছিলাম - এই এসেছে ওরা, যাদের পথ চেয়ে বসে ছিলাম দিশা হারা। কিন্তু হায় যেই লাউ সেই কদু। সবই ফরমুলার খেলা। আমগো আমজনতার কুন রোল নাই সেই খেলায়।

No comments: