পৃথিবীতে নির্বোধের সংখ্যা হিসেব করলে মুসলমানদের পাল্লা নিঃসন্দেহে সবচেয়ে ভারী। এ কথা শুনে বলতে পারেন মুসলমান কেন, আর কোন ধর্ম নেই?
শুধু ধর্ম নয়, জাতের হিসেবে পৃথিবীতে নির্বোধের সংখ্যা হিসেব করলে বাঙালীদের পাল্লা নিঃসন্দেহে সবচেয়ে ভারী। এবার বলবেন বাঙালী কেন, অন্য কোন জাত নেই?
আপনি যদি একমত হন, আমি খুশী। যদি একমত না হন, তবে গলা টিপে ধরার বদলে যুক্তি হাজির করুন। তার আগে বাকী অংশ পড়ুন।
এই ধর্মের মানুষগুলো এক আল্লাহর উপর বিশ্বাস, এক রাসুলের উপর বিশ্বাস, এক কোরানের উপর বিশ্বাসের কথা বললেও ধর্ম নিয়ে নিজেদের মধ্যে হাজারো বিভক্তি তৈরী করে রেখেছে, সেই বিভক্ত দলগুলো শত শত বছর ধরে নিজেদের মধ্যে কাটাকাটি খুনাখুনি করছে। এরা যতটা অন্য ধর্মের সাথে যুদ্ধ করেছে তার চেয়ে বহুগুন বেশী যুদ্ধ নিজেদের মধ্যে করেছে, এবং করছে। এই একুশ শতকে এসেও দেখা যাচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে অস্থিতিশীল অঞ্চলগুলো সব মুসলমান অধ্যুষিত।
যদি বলেন ওই সব অস্থিতিশীলতা খ্রিস্টান ইহুদি নাসারার ষড়যন্ত্র, তাহলে আপনি নির্বোধ। যদি বলেন নির্বোধ মুসলমানরা নিজেরা নিজেদের প্রাণ নিচ্ছে বোমা মেরে গুলি মেরে, তাহলে স্বীকার করে নিলেন ওই মুসলমানরা নির্বোধ। আমেরিকা ইরাক থেকে চলে যাবার অনেকদিন পরেও ইরাকে আত্মঘাতী বা গাড়ি বোমা হামলায় গড়ে প্রতিদিন ১০০ জনের উপর মারা যেতো। যে গর্দভটা বোমা ফাটিয়েছে সে নিশ্চয়ই বেহেশতী হুরের লোভে পিতৃপ্রদত্ত প্রানটা নষ্ট করে আরো একশো জনকে মারলো। ইসলামের নীতি অনুসারে বোমাবাজ গর্দভটা দোজখে যাবে, আর যাদের সে মেরেছে, তারা বেহেশতে।
এরকম ঘটনা পাকিস্তান থেকে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে অসংখ্যবার ঘটেছে, ঘটছে, ঘটবে। সুতরাং মুসলমানদের বিরাট একটা অংশ নির্বোধের দল। এই নির্বোধেরা মধ্যপ্রাচ্যে যেমন আছে, তেমনি আছে বাংলাদেশেও। বাংলাদেশকে হাজার বছর আগে মুসলমানী করানো হলেও এরা এত বছর পর আবারো ইসলামী বিপ্লব কায়েম করে মুসলমানী করানোর জন্য বোমা সন্ত্রাস অস্ত্রবাজির মহড়া চালিয়ে যাচ্ছে রাজনীতির ছদ্মবেশে।
এই জাতটারও প্রায় একই সমস্যা। আদিম কাল থেকে পৃথিবীর সবচেয়ে উর্বর জায়গা হলো এই বাংলাদেশ। হিমালয় পর্বতমালা থেকে যতগুলো নদী নেমেছে তার প্রায় সবগুলোই এই দেশের পেট চিরে বঙ্গোপসাগরে গিয়েছে। ফলে হাজার হাজার মাইল থেকে সংগৃহিত ময়লা আবর্জনাগুলো বন্যার জলে মিলেমিশে নদী বেয়ে নেমে এসে এদেশের মাটিকে পলিমাটির উর্বরতায় সমৃদ্ধ করেছে। এখানে একই জমিতে বছরে তিন চারবার ফসল ফলে। জমিতে শস্যবীজ ছিটকে দিলেই আপনাতেই চারা গজিয়ে ওঠে। বিলের মাছে পুকুর ভর্তি হয়ে যায় অথবা পুকুরের মাছে বিল। নদী নালা খালবিল সবকিছু জুড়েই খানাপিনার চাষবাস। আবহাওয়া না গরম না ঠাণ্ডা। বসবাসের জন্য এত আরামদায়ক জায়গা দুনিয়াতে বিরল। তাই দলে দলে লোক এখানে বাস করতে থাকে আদিমকাল থেকেই।
দূরদেশ থেকে বেড়াতে এসে এখানে বিয়ে করে ঘরসংসারী হয়ে থেকে যেত বিদেশী লোকজন। নানান জাতির রক্তের মিশালে এদেশে বিশুদ্ধ জাতি ধারণাটাই নষ্ট হয়ে যায়। এখন যেমন কেউ সাঁতরে আমেরিকা বা কোন উন্নত দেশের তীর ছুঁতে পারলেই হয়, সেই দেশ ছেড়ে সহজে আসতে চায় না। একসময় এই বাংলাদেশও তেমন ছিল।
কিন্তু এই জাতের সমস্যা কখন থেকে শুরু হলো? যখন তারা রাজনীতি শিখলো। রাজনীতি শেখার পর তারা শিখলো কুটনীতি। আসলে হবে কুটনামি। রাজনীতি দিয়ে তারা ভিনদেশী আগ্রাসী শক্তিকে তাড়ানোর কায়দা শিখলো। ভিনদেশী শক্তি তাড়াবার পর তারা নিজেরা ক্ষমতার মালিক, দেশের মালিক হলো। এবার আর বিদেশী নাই। এবার নিজেদের মধ্যে খেলা। নিজেদের মধ্যে খেলতে গিয়ে তারা রাজনীতিকে ব্যবহার করে সুবিধা করতে পারলো না, ফলে তাদের দরকার হলো কুটনীতি বা কুটনামি। একসময় এই কুটনামিকে তারা রাজনীতি বলে ডাকতে লাগলো। ফলে আসল রাজনীতি হারিয়ে গেল প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেল রাজনীতি নামের কুটনামি।
বাংলাদেশে এখন সবাই নিজেকে রাজনীতিবিশারদ মনে করে। সবাই সবার চেয়ে বেশী বুঝে। বেশী বুঝতে গিয়ে অন্যের ক্ষতি করার জন্য কখনো কখনো নিজের পাছায়ও আঙুল ঢুকিয়ে দেয়। শুধু আঙুল না, আঙুল, আংটা, বড়শি, এমনকি গিরাসহ বাঁশ। সবকিছু। তারপর ব্যথা অসহ্য হলে সেই তাড়িয়ে দেয়া ভিনদেশীদের কাছে নালিশ করে। তাদেরকে সালিশ করার জন্য ডাকে। তারা বাঙালীর পাছা থেকে আংটা, বড়শি খুলে ক্ষতের উপর মলম লাগায়, শান্ত্বনা দেয়, উপদেশ দেয়। তখন বাঙালী দলেরা প্রতিযোগিতামূলক গর্ব করে বলে আমার পাছায় মলম বেশী দিছে, আমার পাছার ক্ষতি বেশী হইছিল। এইবার বলুন, এই জাত নির্বোধ কিনা?
(বলে রাখি, নির্বোধ শব্দটার কয়েক রকম অর্থ আছে। তার মধ্যে প্রচলিত অর্থ হলো, বোকা। এখানে নির্বোধ শব্দের অর্থটা বোকা নয়। একেবারে আক্ষরিক। নির্বোধ=মানুষের জন্য যার কোন বোধ নেই।)
আপনি কোনটি?
ক্ষমতা নিয়ে কাড়াকাড়ি করে যারা সাধারণ মানুষের জীবন অতিষ্ট করে তারা নির্বোধ। যারা এই কাড়াকাড়ির চিপায় পড়ে বেঘোরে প্রাণ দেয় তারা দুর্ভাগা। এদেশে নির্বোধের চেয়ে দুর্ভাগার সংখ্যা অনেকগুন বেশী হলেও নির্বোধেরাই দুর্ভাগাদের উপর চাবুক ঘোরাবে।
এই নির্বোধেরা আন্দোলনের নামে ট্রেনের লাইন উপড়ে ফেলে হাজার হাজার নিরীহ মানুষকে মাঝপথে আটকে রেখেছে যাদের খাবার, পানি, মোবাইলের চার্জ সব শেষ। এমনকি প্রস্রাব পায়খানা সব বন্ধ। ৪২ ঘন্টা পরেও মুক্তি পায়নি। এখানে নারী, শিশু, হার্টের রোগী সবাই আছে। এই নির্বোধেরা নির্বাচন করে একদিন ক্ষমতায় বসে বড় বড় কথা বলবে। দুর্ভাগা দেশের দুর্ভাগা মানুষ এই দুর্ভোগ ভুলে আবারো হাত তালি বাজাবে।
ভাবছেন, শাসকদের কথা বললাম না কেন? শাসকদের কথা বলাই বাহুল্য। শাসকেরা বাই ডিফল্ট নির্বোধ হয়। বাংলাদেশের ষোল কোটি দুর্ভাগা মানুষ এখন লাখ খানেক নির্বোধের অত্যাচারে জর্জরিত। এরা বাঙালী ও মুসলমান।
No comments:
Post a Comment