১.
পৃথিবীর প্রতিটি কুয়াশার কণায় এক টুকরো আলো আর এক টুকরো অন্ধকার লুকিয়ে থাকে। তোমার অন্ধকার আমরা দেখি না, তোমার আলো-তেই আমরা হাসি, তোমার আলো-কেই আমরা ভালোবাসি হে নিশাচর কূয়াশা।
২.
ছুটির দিনের অফিসেও সময়গুলো উড়ে উড়ে চলে গেল কালের হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে।
৩.
আমিও লং মার্চে যাবো!
এই কুসভ্য নগর ছেড়ে সুদূর অরণ্যে
----------------------------------------------------------------------------------------
হ্যাঁ কবি, পঁচিশ বছর তবু কেটে গেছে
আমার খুব ইচ্ছে হতো তুমি নাটোরের বনলতা সেন হবে
আর পাখির বাসার মতো দুটো চোখ তুলে আকুল হয়ে জিজ্ঞেস করবে
-এতদিন কোথায় ছিলেন?
আমার খুব ইচ্ছে হতো তুমি অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে থাকবে
আর আমি তোমার এলোচুল সরিয়ে চিবুকে তর্জনী ছুঁয়ে দিলে তুমি প্রবল মাথা নেড়ে বলবে
-এতদিন আসেননি কেন?
আমার খুব ইচ্ছে হতো, তোমাকে সামনে বসিয়ে অনন্তকাল তাকিয়ে
তোমার দুচোখের সৌন্দর্য প্রাণভরে দেখতে।
আমার খুব ইচ্ছে হতো আমার বাংলা খাতার সবগুলো পাতা
কেবল তোমার নামের হরফ লিখেই ভরিয়ে ফেলতে।
আমার খুব ইচ্ছে করতো তোমার মেঘরং চুলের ভেতর নাক ডুবিয়ে নিঃশ্বাস নিতে
আমার খুব ইচ্ছে করতো দুহাত দিয়ে তোমার চোখের পাতা স্পর্শ করতে।
আমার সবগুলো ইচ্ছের কবর হয়ে গেল
যখন তুমি একদিন আমাকে একা রেখে কোথাও চলে গেলে।
তুমি চলে যাবার পর জীবনানন্দের বই খুলে পড়তে থাকি-
"তারপর কতবার চাঁদ আর তারা,
মাঠে মাঠে মরে গেল, ইঁদুর — পেচাঁরা
জোছনায় ধানক্ষেতে খুঁজে
এল-গেল। –চোখ বুজে
কতবার ডানে আর বায়ে
পড়িল ঘুমায়ে
কত-কেউ! — রহিলাম জেগে
আমি একা — নক্ষত্র যে বেগে
ছুটিছে আকাশে
তার চেয়ে আগে চলে আসে
যদিও সময়–
পঁচিশ বছর তবু কই শেষ হয়!–"
একদিন আমাকে তুমুল বিস্ময়ে ডুবিয়ে দিয়ে শেষ হয় প্রতীক্ষার পচিশ বছর।
আমি তখনো জানতাম না পঁচিশ বছর পর সেই কবর ফুঁড়ে জেগে উঠবে ভালোবাসার ভষ্ম।
আবার কোনদিন পুরোনো বাগানে ফোটাতে চাইবে নতুন ফুল।
"তারপর — একদিন
আবার হলদে তৃণ
ভরে আছে মাঠে- -
পাতায় শুকনো ডাঁটে
ভাসিছে কুয়াশা
দিকে দিকে, চড়ায়ের ভাঙা বাসা
শিশিরে গিয়েছে ভিজে — পথের উপর
পাখির ডিমের খোলা, ঠান্ডা-কড়কড়!
শসাফুল — দু-একটা নষ্ট শাদা শসা
মাকড়ের ছেঁড়া জাল, শুকনো মাকড়সা
লতায় — পাতায়;
ফুটফুটে জোছনারাতে পথ চেনা যায়;
দেখা যায় কয়েকটা তারা
হিম আকাশের গায় — ইঁদুর পেঁচারা
ঘুরে যায় মাঠে মাঠে, ক্ষুদ খেয়ে ওদের পিপাসা আজও মেটে,
পঁচিশ বছর তবু গেছে কবে কেটে!"
হ্যাঁ কবি পঁচিশ বছর তবু গেছে কেটে!
[ঋন স্বীকার: কবি জীবনানন্দ দাশ]
পৃথিবীর প্রতিটি কুয়াশার কণায় এক টুকরো আলো আর এক টুকরো অন্ধকার লুকিয়ে থাকে। তোমার অন্ধকার আমরা দেখি না, তোমার আলো-তেই আমরা হাসি, তোমার আলো-কেই আমরা ভালোবাসি হে নিশাচর কূয়াশা।
২.
ছুটির দিনের অফিসেও সময়গুলো উড়ে উড়ে চলে গেল কালের হাওয়ায় ভাসতে ভাসতে।
৩.
আমিও লং মার্চে যাবো!
এই কুসভ্য নগর ছেড়ে সুদূর অরণ্যে
----------------------------------------------------------------------------------------
হ্যাঁ কবি, পঁচিশ বছর তবু কেটে গেছে
আমার খুব ইচ্ছে হতো তুমি নাটোরের বনলতা সেন হবে
আর পাখির বাসার মতো দুটো চোখ তুলে আকুল হয়ে জিজ্ঞেস করবে
-এতদিন কোথায় ছিলেন?
আমার খুব ইচ্ছে হতো তুমি অভিমানে মুখ ঘুরিয়ে থাকবে
আর আমি তোমার এলোচুল সরিয়ে চিবুকে তর্জনী ছুঁয়ে দিলে তুমি প্রবল মাথা নেড়ে বলবে
-এতদিন আসেননি কেন?
আমার খুব ইচ্ছে হতো, তোমাকে সামনে বসিয়ে অনন্তকাল তাকিয়ে
তোমার দুচোখের সৌন্দর্য প্রাণভরে দেখতে।
আমার খুব ইচ্ছে হতো আমার বাংলা খাতার সবগুলো পাতা
কেবল তোমার নামের হরফ লিখেই ভরিয়ে ফেলতে।
আমার খুব ইচ্ছে করতো তোমার মেঘরং চুলের ভেতর নাক ডুবিয়ে নিঃশ্বাস নিতে
আমার খুব ইচ্ছে করতো দুহাত দিয়ে তোমার চোখের পাতা স্পর্শ করতে।
আমার সবগুলো ইচ্ছের কবর হয়ে গেল
যখন তুমি একদিন আমাকে একা রেখে কোথাও চলে গেলে।
তুমি চলে যাবার পর জীবনানন্দের বই খুলে পড়তে থাকি-
"তারপর কতবার চাঁদ আর তারা,
মাঠে মাঠে মরে গেল, ইঁদুর — পেচাঁরা
জোছনায় ধানক্ষেতে খুঁজে
এল-গেল। –চোখ বুজে
কতবার ডানে আর বায়ে
পড়িল ঘুমায়ে
কত-কেউ! — রহিলাম জেগে
আমি একা — নক্ষত্র যে বেগে
ছুটিছে আকাশে
তার চেয়ে আগে চলে আসে
যদিও সময়–
পঁচিশ বছর তবু কই শেষ হয়!–"
একদিন আমাকে তুমুল বিস্ময়ে ডুবিয়ে দিয়ে শেষ হয় প্রতীক্ষার পচিশ বছর।
আমি তখনো জানতাম না পঁচিশ বছর পর সেই কবর ফুঁড়ে জেগে উঠবে ভালোবাসার ভষ্ম।
আবার কোনদিন পুরোনো বাগানে ফোটাতে চাইবে নতুন ফুল।
"তারপর — একদিন
আবার হলদে তৃণ
ভরে আছে মাঠে- -
পাতায় শুকনো ডাঁটে
ভাসিছে কুয়াশা
দিকে দিকে, চড়ায়ের ভাঙা বাসা
শিশিরে গিয়েছে ভিজে — পথের উপর
পাখির ডিমের খোলা, ঠান্ডা-কড়কড়!
শসাফুল — দু-একটা নষ্ট শাদা শসা
মাকড়ের ছেঁড়া জাল, শুকনো মাকড়সা
লতায় — পাতায়;
ফুটফুটে জোছনারাতে পথ চেনা যায়;
দেখা যায় কয়েকটা তারা
হিম আকাশের গায় — ইঁদুর পেঁচারা
ঘুরে যায় মাঠে মাঠে, ক্ষুদ খেয়ে ওদের পিপাসা আজও মেটে,
পঁচিশ বছর তবু গেছে কবে কেটে!"
হ্যাঁ কবি পঁচিশ বছর তবু গেছে কেটে!
[ঋন স্বীকার: কবি জীবনানন্দ দাশ]
No comments:
Post a Comment