দিনের অন্ততঃ একটা ঘন্টা বই পড়ার জন্য রাখার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। তার মানে এই নয় যে আমি ২৪ ঘন্টাই খুব ব্যস্ত। খুব ব্যস্ত না হলেও এক নাগাড়ে এক ঘন্টা সময় পাই না। সংসারী মানুষ মাত্রেই এই ঝামেলায় থাকে। পড়াশোনা বা লেখালেখি জাতীয় কাজে ব্রেক দেয়া মানে সেই ঘন্টাটা শেষ। আমার কাছে সেরকমই। একবার মুড নষ্ট হয়ে গেলে ফিরে আসা কঠিন। সঙ্গত কারণেই বিশ পঁচিশ বছর আগে যেরকম বই পড়তে পারতাম এখন পারি না।
কোন কোন রাতে বই পড়ার মুড নষ্ট হয়ে গেলে গান শুনি। ঘুমোবার আগে বাতি নিভিয়ে শুয়ে শুয়ে গান শোনার চেষ্টা করি। দেয়াল টিভির একটা ফোল্ডারে পছন্দের কয়েকশো গান বেছে জমা করে রেখেছি। গানগুলো অনেকবার শোনা। তবু অনিয়মিত নির্বাচনে (র্যানডম সিলেকশান) চালিয়ে দিলে শুনতে ভালো লাগে। প্রতিটা গানের সাথেই আমার কোন না কোন স্মৃতি জড়িত। চোখ বন্ধ করে সেই সব স্মৃতির দেশে বেড়াএ চলে যাই। কোন গানের পর কোন গান আসবে আগে থেকে জানা না থাকলে একরকমের বৈচিত্র্যও আসে। গান শোনার সময় মাঝে মাঝে আমার ছেলে মেয়ে দুজনও পাশে এসে যায়। এরাও গানের পাগল। ছোটদের গান বাদ দিয়ে বড়দের গান শুনতে শুরু করছে আজকাল। সেদিন আমাকে ফরমায়েশ করছে, বাবা 'কাভি কাভি' গানটা দাও, ওটা ভালো লাগে। মনে মনে বলি, বাপ্রে ওটা তোদের দাদার প্রিয় গান, এখন মাঝে মাঝে শুনি আমি, তোদের ভেতরেও ঢুকে গেছে ওটা?
কয়েকদিন আগেও সেরকম এক রাতে গান শুনতে শুনতে ঘুম এসে যাচ্ছিল প্রায়। এমন সময় 'ক্ষ' ব্যাণ্ডের গাওয়া বহুল আলোচিত বিতর্কিত 'আমার সোনা বাংলা'র প্রাথমিক সুর বাজতে শুরু করলো। গানটা অন্তরা থেকে শুরু। সূচনা সঙ্গীত শুনে আমি ভাবছিলাম গানটা রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসেবে শুনবো, নাকি জাতীয় সঙ্গীত। কিন্তু আমার পাশে শুয়ে থাকা চার বছরের পুচকাটা ভাবাভাবির ধার ধারলো না, সে চট করে গায়ের চাদর ফেলে দিয়ে সটান দাঁড়িয়ে গেল মাথা ছুঁই ছুঁই মশারির ভেতরে। মুখে কোন কথা নেই। গম্ভীর চেহারায় হাত দুটো পরস্পর আকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। ক্ষ ব্যাণ্ড যদিও বলেছে তারা এটাকে রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসেবে গেয়েছে, কিন্তু আমার পুত্র সেটা মানতে রাজী নয়। অতএব বাকীদেরও বিছানা ছেড়ে দাঁড়িয়ে যেতে হয়।
গান শেষ হলে ঘটনা জানলাম। পুচকা যদিও এখনো স্কুলে যেতে শুরু করেনি, কিন্তু তার কেজি পড়ুয়া বোনের স্কুলে দেখেছে জাতীয় সঙ্গীত গাইলে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। সে জিনিসটা মাথায় রেখে দিয়েছে এবং জায়গামত দাঁড়িয়ে গেছে। কথাটা অনস্বীকার্য যে ন্যায়-নিয়ম-নীতির প্রশ্নে শিশুদের কাছ থেকেও শেখার ব্যাপার আছে।
তো, এই শিশুরা যখন আমাদের মতো বড় হবে তখনো কি অপাপবিদ্ধ বিশ্বাস আর নিয়মগুলো অটুট রাখতে পারবে? যদি পারতো তাহলে ভণ্ডামি আর নষ্টামির পৃথিবী ওদের ভবিষ্যত অপচয় করতে পারতো না। এরকম আশাবাদ রেখেই যাই না কেন!
কোন কোন রাতে বই পড়ার মুড নষ্ট হয়ে গেলে গান শুনি। ঘুমোবার আগে বাতি নিভিয়ে শুয়ে শুয়ে গান শোনার চেষ্টা করি। দেয়াল টিভির একটা ফোল্ডারে পছন্দের কয়েকশো গান বেছে জমা করে রেখেছি। গানগুলো অনেকবার শোনা। তবু অনিয়মিত নির্বাচনে (র্যানডম সিলেকশান) চালিয়ে দিলে শুনতে ভালো লাগে। প্রতিটা গানের সাথেই আমার কোন না কোন স্মৃতি জড়িত। চোখ বন্ধ করে সেই সব স্মৃতির দেশে বেড়াএ চলে যাই। কোন গানের পর কোন গান আসবে আগে থেকে জানা না থাকলে একরকমের বৈচিত্র্যও আসে। গান শোনার সময় মাঝে মাঝে আমার ছেলে মেয়ে দুজনও পাশে এসে যায়। এরাও গানের পাগল। ছোটদের গান বাদ দিয়ে বড়দের গান শুনতে শুরু করছে আজকাল। সেদিন আমাকে ফরমায়েশ করছে, বাবা 'কাভি কাভি' গানটা দাও, ওটা ভালো লাগে। মনে মনে বলি, বাপ্রে ওটা তোদের দাদার প্রিয় গান, এখন মাঝে মাঝে শুনি আমি, তোদের ভেতরেও ঢুকে গেছে ওটা?
কয়েকদিন আগেও সেরকম এক রাতে গান শুনতে শুনতে ঘুম এসে যাচ্ছিল প্রায়। এমন সময় 'ক্ষ' ব্যাণ্ডের গাওয়া বহুল আলোচিত বিতর্কিত 'আমার সোনা বাংলা'র প্রাথমিক সুর বাজতে শুরু করলো। গানটা অন্তরা থেকে শুরু। সূচনা সঙ্গীত শুনে আমি ভাবছিলাম গানটা রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসেবে শুনবো, নাকি জাতীয় সঙ্গীত। কিন্তু আমার পাশে শুয়ে থাকা চার বছরের পুচকাটা ভাবাভাবির ধার ধারলো না, সে চট করে গায়ের চাদর ফেলে দিয়ে সটান দাঁড়িয়ে গেল মাথা ছুঁই ছুঁই মশারির ভেতরে। মুখে কোন কথা নেই। গম্ভীর চেহারায় হাত দুটো পরস্পর আকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। ক্ষ ব্যাণ্ড যদিও বলেছে তারা এটাকে রবীন্দ্রসঙ্গীত হিসেবে গেয়েছে, কিন্তু আমার পুত্র সেটা মানতে রাজী নয়। অতএব বাকীদেরও বিছানা ছেড়ে দাঁড়িয়ে যেতে হয়।
গান শেষ হলে ঘটনা জানলাম। পুচকা যদিও এখনো স্কুলে যেতে শুরু করেনি, কিন্তু তার কেজি পড়ুয়া বোনের স্কুলে দেখেছে জাতীয় সঙ্গীত গাইলে দাঁড়িয়ে যেতে হয়। সে জিনিসটা মাথায় রেখে দিয়েছে এবং জায়গামত দাঁড়িয়ে গেছে। কথাটা অনস্বীকার্য যে ন্যায়-নিয়ম-নীতির প্রশ্নে শিশুদের কাছ থেকেও শেখার ব্যাপার আছে।
তো, এই শিশুরা যখন আমাদের মতো বড় হবে তখনো কি অপাপবিদ্ধ বিশ্বাস আর নিয়মগুলো অটুট রাখতে পারবে? যদি পারতো তাহলে ভণ্ডামি আর নষ্টামির পৃথিবী ওদের ভবিষ্যত অপচয় করতে পারতো না। এরকম আশাবাদ রেখেই যাই না কেন!
No comments:
Post a Comment