মেজমামা অনেকদিন পর বিদেশ থেকে ফিরছেন। সেই যে পাঁচ বছর আগে দেশ ছেড়েছেন আর কোন খবর নাই। মামাতো ভাইবোনেরা বাপের চেহারা পর্যন্ত ভুলে যাবার দশা। মামাতো ভাইরা তখনো ছোট। তাই আমরা দুই ভাগ্নে ঢাকা গেলাম এক মামাতো ভাইকে নিয়ে। এয়ারপোর্ট থেকে মহাসমারোহে মামাকে নিয়ে আসবো। ঢাকায় খালার বাসা। ওখানে উঠলাম। পরদিন সকালে এয়ারপোর্টে গেলাম মামাকে আনতে। মামা আমাদের দেখে খুব খুশী। জড়িয়ে ধরলেন আনন্দে। আর মামাতো ভাই জাবিরকে তো রীতিমত কোলে তুলে নিলেন। জাবির লজ্জায় মিশে যাচ্ছে। ক্লাস নাইন পড়ুয়া ছেলের তো লজ্জাই লাগার কথা। কিন্তু মামা ওকে শেষবার দেখেছে ক্লাস থ্রিতে, এখনো তাকে বড় ভাবতে পারছে না বলে কোলে নেবার চেষ্টা। আমরা দুই খালাতো ভাই মুখ টিপে হাসি।
ফিরলাম মালিবাগের খালার বাসায়। আজ চট্টগ্রাম ফেরা যাবে না। আগামী কাল ফিরবো। এই রাতটা শেষ রাত। খালার বাসাটা বেশী বড় না। তবে ছোট হলেও চারটা রুম আছে। প্রথম ঘরটা বসার ঘর, তবে এখানে একটা খাটও পাতা আছে। এটা পুরুষ মেহমানদের জন্য বরাদ্দ। তার পাশের ঘরটায় খালু থাকেন। তার পাশের ঘরে খালা আর খালাতো বোনেরা থাকে। চতুর্থ ঘরটা দুই খালাতো ভাইয়ের পড়া এবং ঘুমানোর। চারটা ঘরই সংলগ্ন, একটা ঘর থেকে অন্য ঘরে আসা যাওয়া করা যায়। আমরা চার খালাতো ভাই একত্র হলে ঈদের আনন্দ। বড় খালাতো ভাই আমিন আর আমি চট্টগ্রামের। দুই খালাতো ভাই শাহেদ আর মুহিত ঢাকায় পড়ে। আমরা সবাই তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের নানান ধাপে। বয়সের তারতম্য থাকলেও মনের কোন তারতম্য ছিল না। চারজন একসাথে ঘুরি একসাথে খাই, একসাথে আড্ডাই, কিন্তু রাতে একসাথে ঘুমানো যায় না অত বড় খাট নেই বলে। গত দুই রাত শাহেদ আর আমিন এই ঘরে। মুহিত আর আমি বসার ঘরের অতিথি খাটে ঘুমিয়েছি। অতিথি ঘরের খাটটা এই ঘরের একদম লাগোয়া, দরোজার পাশে জানালাও আছে দুই ঘরের মাঝে। ফলে ভিন্ন খাটে শুয়েও একসাথে কথাবার্তা চলে, আড্ডা মারা যায় নির্বিবাদে। কিন্তু আজ মেজ মামাকে ছেড়ে দিতে হলো বসার ঘরের খাটটা। ফলে মুহিতকে শুতে হবে তার বাবার সাথে।
সন্ধ্যার পর থেকে এটা নিয়ে তার মুখ গোমড়া। মেজ খালু ভীষণ কড়া মানুষ। যমের মত ভয় পায় ঘরের সবাই। উনি বসার ঘরে থাকলে খালাতো ভাইয়েরা পেছনের দরোজা দিয়ে ঘরে ঢুকে। মেজ খালুর সাথে ঘুমানোর চেয়ে একটা বাঘের গুহায় ঘুমানো উত্তম বলে মনে করে মুহিত। এমনকি আমরা অতিথিরাও বাঘের চেয়ে কম ভয় পাই না খালুকে। ফজরের নামাজের সময় উঠেই ডাক দেয়, 'নামাজ পড়ার টাইম হইছে, মোমিন মুসলমান উঠে পড়েন'। আমরা অতিথিরা শুনেও না শোনার ভাণ করে মটকা মেরে পড়ে থাকি লেপকাথা কানে গুঁজে। অতিথিদের জন্য কোন শাস্তি নেই নামাজ না পড়লে। কিন্তু ছেলেদের জন্য কড়া ডোজ।
পাশে ঘুমালে তো কান ধরে তুলে দেবে। বেচারা মুহিতের জন্য মায়াই লাগলো। সে অনেক চেষ্টা করছে আমাদের খাটে জায়গা নিতে। কিন্তু এই দুর্বল খাটে তিনজনেরই জায়গা হয় না। শীতকাল বলে কোনমতে চাপাচাপি করে ম্যানেজ করা গেছে। চারজন তো প্রশ্নই ওঠে না। তবু মুহিত পারলে আমাদের খাটের নীচে শুয়ে থাকবে তবু বাপের সাথে এক খাটে শুতে রাজী না। যতই গাঁইগুই করুক রাতে শোবার আগে বাঘের গুহা থেকে শুধু 'মুহিত কই' বলে একবার ডাক এলো, অনতিবিলম্বে সুড়সুড় করে বাঘের গুহায় ঢুকে গেল মুহিত। আমরা ওকে শান্ত্বনা দিলাম, একটা মাত্র রাত, এ আর এমন কি। তাছাড়া ওই ঘরটাও খুব দূরে না। আমাদের খাট আর ওদের খাটের মধ্যে দশ ফুটের ব্যবধান। মেজমামার খাট আমাদের খাটের দুই ফুটের মধ্যে। মেজমামার সাথে থাকবে জাবির।
আমরা ঘটনা বুঝতে পারলাম না। পিচ্চিকে জিজ্ঞেস করার আগেই ভোঁ দৌড়। বুঝতে পারিনি, কারণ আমরা চারজনই দুপুরে বাইরে গিয়েছিলাম খেয়েদেয়ে। মামা আর জাবির খেয়ে ভাতঘুম দিয়েছিল। যাই হোক পিচ্চিপাচ্চিদের কথা বাদ। আমরা বড়দের গপ শুরু করলাম বাতি নিভিয়ে। আগে কখনো তিনজন শুইনি এই খাটে। শুয়ে বুঝলাম, খাটটা তিনজনের ওজন নেবার মতো যথেষ্ট মজবুত না। সাবধানে থাকতে হবে। একটু নড়লেই 'ক্যাঁও' করে বিদঘুটে একটা শব্দ করছে। শব্দটা শুধু এই ঘরে সীমাবদ্ধ থাকলেই হতো। এটা আশপাশের ঘরের লোকদের কাছেও পৌঁছে যাচ্ছে। খালুর আবার একটু শব্দ হলেও ঘুম ভেঙ্গে যায়। তাছাড়া শীতকাল, ফ্যানট্যান বন্ধ থাকাতে শব্দটা আরো প্রকট লাগছে।
আসলে প্রায় সকল মধ্যবিত্ত খাটই অল্পবিস্তর শব্দ করে মনে হয়। শীতকালেই সেটা টের পাওয়া যায়। কেননা একটু পর খেয়াল করে শুনলাম, পাশের ঘরে মেজ খালুর খাটও সামান্য 'ক্যাঁচ' করে উঠলো। শুধু তাই না, মেজ খালাদের ঘর থেকেও একবার মৃদু 'কট কট কটররর' শব্দ শুনলাম যেন। পিচ্চিপাচ্চি খালাতো বোনগুলো সব এক খাটে ঘুমায়। ওদের নড়াচড়ার শব্দ। শুধু শব্দ নেই আমাদের সবচেয়ে নিকটবর্তী খাট যেখানে মেজমামা ঘুমোচ্ছে নিঃশব্দে। পাশে জাবির। সবচেয়ে ভালো খাটটা বসার ঘরেই দেয়া হয়েছে।
কিন্তু না। বেশীক্ষণ নিঃশব্দ থাকলো না পাশের ঘরটি। দুই ঘরের জানালা দিয়ে প্রথমে একটা সুমিষ্ট সুর ভেসে আসলো। আমাদের তিনজনের গপ একটুর জন্য থেকে গেল শব্দটা শুনে।
-কিসের শব্দ?
-ব্যাপার কি?
-কে বাজায় বাশী?
একটু বিরতি নিল সুরটা। আবারো পোঁ করে বেজে উঠলো। এবার আগের চেয়ে আরেকটু উচু স্কেলে। তিনজনই কান খাড়া করলাম আবারো। আমিন ভাই উঠে বসতে চাইলে আমাদের খাটটা তার তিনগুন বাড়তি স্কেলে 'ক্যাঁও' করে যে কান্না ছাড়লো, ওই বাঁশী হার মানলো তাতে। তাড়াতাড়ি আমিন ভাই শুয়ে পড়লো। সেই বাঁশীর সুর ক্রমান্বয়ে বাড়তে বাড়তে পোঁ থেকে ভোঁ স্কেলে আসলো। এবার শোনা যেতে লাগলো পোঁ-ভোঁ, পোঁ-ভোঁ, পোঁ-ভোঁ.........।
শাহেদ সবার আগে ধরতে পারলো ব্যাপারটা। সে ফিসফিস করে বললো, মেজমামা!
আমরা জিজ্ঞেস করলাম, মেজমামা কি?
শাহেদ বললো, বাঁশীটা মেজমামা বাজাচ্ছে। নাসিকা বংশী।
এই কথা শুনে আমাদের তিনজনের এমন বিকট হাসি পেল যে মেজখালুর ভয়ে চাপতে গিয়ে বিপাকে পড়ে গেলাম। আপনারা জানেন, মানুষ যখন জোর করে হাসি চাপতে চায় তখন শরীরে একধরনের কম্পন তৈরী হয়, সেই কম্পন যত নিয়ন্ত্রন করতে চাইবেন, তার শক্তি তত বেড়ে যাবে। আমাদের তিনজনের হাসি চাপার কম্পনে সমগ্র খাটটা এমন ক্যাঁও, ক্র্যাঁও ইত্যাদি ত্রাহি চিৎকার শুরু করলো যে পাড়ার নিশিডাকা কুকুরগুলো পর্যন্ত কিছুক্ষণ থমকে গিয়েছিল।
আমরা মুখ দিয়ে কোন শব্দ করছি না। কিন্তু খাটটা আট মাত্রার ভূমিকম্প নিয়ে কাঁপছে আর চিৎকার করছে। সেই চিৎকার ছড়িয়ে পড়ছে ঘর থেকে ঘরে, এমনকি ঘর ছেড়ে বাইরে। কমপক্ষে মিনিট দুয়েক ক্যাঁও, ক্র্যাঁও, ক্যাঁও, ক্র্যাঁও,- ক্যাঁও, ক্র্যাঁও, ক্যাঁও, ক্র্যাঁও.........চলার পর থামলো। ফিসফিস করে একজন আরেকজনকে ধমক দিয়ে বললাম, এই চুপ কর, আর না, কেউ জেগে যাবে।
তিনজনই নিয়ন্ত্রণ করলাম। কিন্তু মামার পোঁ-ভোঁ, পোঁ-ভোঁ, পোঁ-ভোঁ চলছেই। এর মধ্যে খেয়াল করলাম, মেজখালুর ঘরে 'ক্যাঁচ ক্যাঁচ' শব্দটা দ্রুতলয়ে বাজতে শুরু করেছে। নিশ্চয়ই মুহিত হারামজাদা একা একা হাসছে মামার বাঁশী শুনে। ওদিকে মেজখালার ঘর থেকেও ভেসে আসতে থাকলো এক নাগাড়ে কট কট কটররর ধরণের শব্দ। নিশ্চয়ই খালাতো বোনগুলোও ওখানে হাসছে। এতক্ষণে আমরা বুঝলাম পিচ্চি কেন বলেছিল- আজ রাতে বাঁশী বাজবে। ওরা নিশ্চয়ই দুপুরে শুনেছে মামার বাঁশীর সুর। কী ফাজিল মেয়েরে!
আমরা মুখ দিয়ে কোন শব্দ করছি না। কিন্তু খাটটা আট মাত্রার ভূমিকম্প নিয়ে কাঁপছে আর চিৎকার করছে। সেই চিৎকার ছড়িয়ে পড়ছে ঘর থেকে ঘরে, এমনকি ঘর ছেড়ে বাইরে। কমপক্ষে মিনিট দুয়েক ক্যাঁও, ক্র্যাঁও, ক্যাঁও, ক্র্যাঁও,- ক্যাঁও, ক্র্যাঁও, ক্যাঁও, ক্র্যাঁও.........চলার পর থামলো। ফিসফিস করে একজন আরেকজনকে ধমক দিয়ে বললাম, এই চুপ কর, আর না, কেউ জেগে যাবে।
তিনজনই নিয়ন্ত্রণ করলাম। কিন্তু মামার পোঁ-ভোঁ, পোঁ-ভোঁ, পোঁ-ভোঁ চলছেই। এর মধ্যে খেয়াল করলাম, মেজখালুর ঘরে 'ক্যাঁচ ক্যাঁচ' শব্দটা দ্রুতলয়ে বাজতে শুরু করেছে। নিশ্চয়ই মুহিত হারামজাদা একা একা হাসছে মামার বাঁশী শুনে। ওদিকে মেজখালার ঘর থেকেও ভেসে আসতে থাকলো এক নাগাড়ে কট কট কটররর ধরণের শব্দ। নিশ্চয়ই খালাতো বোনগুলোও ওখানে হাসছে। এতক্ষণে আমরা বুঝলাম পিচ্চি কেন বলেছিল- আজ রাতে বাঁশী বাজবে। ওরা নিশ্চয়ই দুপুরে শুনেছে মামার বাঁশীর সুর। কী ফাজিল মেয়েরে!
আমি বাকী দুজনকে হাসতে বারণ করে নিজেকে নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিলাম বিদ্যুত মিত্রের সুত্র দিয়ে। কিন্তু মেজ খালুর ঘরে মুহিতের একা একা হাসতে থাকার দৃশ্যটা কল্পনা করে আমার পেটটা হাসির চাপে আবারো একটু কেঁপে গেল। সেই কম্পনে খাটটা আবারো 'ক্যাঁও' করলো। আমার পাশে আমিন ভাই, আমার পেটের কম্পন টের পেয়ে পাশে আমিন ভাইও কেঁপে উঠলো, আবারো ক্যাঁও। এরপর শাহেদও বাকী থাকে কি করে। ফলে আবারো ভূমিকম্প শুরু হলো, এবার আরো প্রবলবেগে। এরকম হাসিগুলো প্রচণ্ড সংক্রামক। তিনটা ঘরে তিনটা খাট তিন রকমের ক্যাও- ক্র্যাঁত শব্দে পুরো বাসাটাকে কাঁপিয়ে ফেলতে লাগলো। অথচ কারো মুখে কোন শব্দ নেই।
অবধারিতভাবে খালুর ঘুম ভাঙ্গা ধমক শোনা গেল মুহিতকে লক্ষ্য করে। "কী হইসে, এত হাসির কি? ঘুমা"। খালুর ধমকে আমাদের হাসি থেমে গেল। ভয়ে চুন হয়ে শুয়ে আছি। মশারির উপর ডিম লাইটের মৃদু আলো। সেই আলোর একটা ছায়া মশারিতে পড়েছে টের পেয়ে আরো ভয়ে গুটিয়ে গেছি। নিশ্চয়ই মেজ খালু আমাদের দেখতে এসেছে। চোখ বন্ধ করে মটকা মেরে আছি। কিন্তু আমি হঠাৎ চোখ মেলে যা দেখলাত তাতে পুরাই পাত্থর।
আমাদের খাটের ক্যাঁও ক্যাঁও শব্দের তোড়ে মেজমামার পোঁ-পোঁ, ভোঁ-ভোঁ কখন যে থেমে গেছে কেউ খেয়াল করিনি। খাটের পাশে ডিমলাইটের ছায়ার লুঙ্গির গিট ঠিক করতে থাকা মানুষটা মেজমামা। মশারির ভিতর উকি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছেন ঘুমন্ত মানুষের খাট থেকে এত শব্দ কিভাবে বের হচ্ছে। সম্ভবতঃ তিনজনেরই চোখ খুলে গিয়েছিল এবং তিনজনের এতক্ষণ চেপে রাখা হাসির বোমাটা মেজমামাকে দেখে এমন জোরে বিস্ফোরণ ঘটলো যে আমাদের ভগ্নপ্রায় খাটটা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ভূতলে আছড়ে পড়লো তিনজন জোয়ান মর্দ পুরুষকে নিয়ে।
আস্ত খাটটা ভূমিতে লুটিয়ে পড়ার পরও আমাদের হাসির ভূমিকম্প কিছুতে বাগ মানছে না। শেষে গলা দিয়ে একরকমের গররর গররর শব্দ বের হওয়া শুরু করলো। মামা ঘাবড়ে গেল তিন ভাগ্নের এই অবস্থা দেখে। মামা চীৎকার করে ডাকলেন, মুহিতরে, অ মুহিত, জলদি তোর বাপকে ডাক, এগুলারে নিশিতে পাইছে রে। এখনি ডাক্তার বৈদ্য কিছু ডাক।
অবধারিতভাবে খালুর ঘুম ভাঙ্গা ধমক শোনা গেল মুহিতকে লক্ষ্য করে। "কী হইসে, এত হাসির কি? ঘুমা"। খালুর ধমকে আমাদের হাসি থেমে গেল। ভয়ে চুন হয়ে শুয়ে আছি। মশারির উপর ডিম লাইটের মৃদু আলো। সেই আলোর একটা ছায়া মশারিতে পড়েছে টের পেয়ে আরো ভয়ে গুটিয়ে গেছি। নিশ্চয়ই মেজ খালু আমাদের দেখতে এসেছে। চোখ বন্ধ করে মটকা মেরে আছি। কিন্তু আমি হঠাৎ চোখ মেলে যা দেখলাত তাতে পুরাই পাত্থর।
আমাদের খাটের ক্যাঁও ক্যাঁও শব্দের তোড়ে মেজমামার পোঁ-পোঁ, ভোঁ-ভোঁ কখন যে থেমে গেছে কেউ খেয়াল করিনি। খাটের পাশে ডিমলাইটের ছায়ার লুঙ্গির গিট ঠিক করতে থাকা মানুষটা মেজমামা। মশারির ভিতর উকি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করছেন ঘুমন্ত মানুষের খাট থেকে এত শব্দ কিভাবে বের হচ্ছে। সম্ভবতঃ তিনজনেরই চোখ খুলে গিয়েছিল এবং তিনজনের এতক্ষণ চেপে রাখা হাসির বোমাটা মেজমামাকে দেখে এমন জোরে বিস্ফোরণ ঘটলো যে আমাদের ভগ্নপ্রায় খাটটা শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে ভূতলে আছড়ে পড়লো তিনজন জোয়ান মর্দ পুরুষকে নিয়ে।
আস্ত খাটটা ভূমিতে লুটিয়ে পড়ার পরও আমাদের হাসির ভূমিকম্প কিছুতে বাগ মানছে না। শেষে গলা দিয়ে একরকমের গররর গররর শব্দ বের হওয়া শুরু করলো। মামা ঘাবড়ে গেল তিন ভাগ্নের এই অবস্থা দেখে। মামা চীৎকার করে ডাকলেন, মুহিতরে, অ মুহিত, জলদি তোর বাপকে ডাক, এগুলারে নিশিতে পাইছে রে। এখনি ডাক্তার বৈদ্য কিছু ডাক।
No comments:
Post a Comment