Sunday, April 18, 2010

ভাড়া কিংবা বিক্রি হইতে চাই

আমি একজন লেখক। ভালো বাংলা টাইপ করতে পারি। মাঝে মাঝে ইংরেজী কোটেশানও দিতে পারি। আমার কয়েকশো লেখা বাংলাদেশের নানান মিডিয়ায় প্রকাশিত। এবারের বইমেলায় আমার দুইখানা বই প্রকাশিত। মাঝরাতের টক শো'তে মাসিক ২/৩ বার হাজিরা থাকে। আমি একজন নিরপেক্ষ সহনশীল প্রগতিশীল ব্যক্তি। মুক্তিযুদ্ধে চেতন অচেতন জাতীয় ঐক্যে বিশ্বাসী। আগামী তিনমাস ফ্রী আছি। ভাড়া কিংবা বিক্রি হতে চাই। যে কেউ চাইলে অগ্রিম বুকিং দিতে পারেন বিশেষ গ্রীষ্মকালীন ডিসকাউন্টে। আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে.......

*******************************************************

'কেয়ামতের দেরী নাই, সব লক্ষন পরিষ্কার, ১৪০০ বছর আগেই বলে দেয়া হয়েছিল, এই বছরই শেষ, তারপর কেয়ামত'- ছেলেবেলা থেকেই শুনে আসছিলাম। হাইস্কুলে ওঠার পর স্কুলে বসে ভাবতাম, আর যাই হোক, বাসায় ফেরার আগে যেন কেয়ামত শুরু না হয়। কিন্তু একবার কেয়ামত শুরু হলো মাঝপথে থাকতেই, প্রচন্ড ঝড় তুফানে উড়িয়ে নেয় নেয় অবস্থা। ওরকম কালো কুচকুচে মেঘ জীবনেও দেখিনি আগে। বই-খাতা-পোষাকআশাক ভিজে গেলেও নিরাপদ আশ্রয়ে গেলাম না কারন কেয়ামতের ময়দানে পাহাড় পর্বত সব তুলার মতো উড়িয়ে নিয়ে যাবে। সামান্য দালানে আশ্রয় নিয়ে কি হবে। কিন্তু কি করে যেন বাসায় পৌছে গেলাম এবং কেয়ামতও ক্ষান্ত দিল। কেয়ামত আরো অনেক দেখেছি পরে, কিন্তু ৩০ বছর আগের সেই কেয়ামতের কথাটা আজো ভুলতে পারিনা।

কেয়ামতের আরেকটি লক্ষন নাকি লোকজন ধার্মিক হয়ে যাবে। ভন্ড মাতাল পাগল সকলেই ধর্মের গীত গাইবে। চারদিকে এখন ইসলামী জোশ এবং জুশ। সরবত থেকে ব্যাংকিং সর্বক্ষেত্রে ইসলামের ছোঁয়া। বাংলাদেশে তার সোল এজেন্সী দাবী করে জামাতে ইসলামী। একটা ভ্রুন প্রস্ফুটিত হবার পর থেকে দাড়ি গজানোর সময় পর্যন্ত এরা সেবা যত্ন দিয়ে ধর্মের পাল্লা ভারী করার মানসে হাসপাতাল স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে এনজিও ব্যাংক ইন্সুরেন্স পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা করে রেখেছে। মওদুদীর ইসলামকে মানুষের মগজে ঢুকিয়ে সেটাকেই ধর্ম হিসেবে চালাতে চেয়েছে।

কিন্তু একাত্তর তাদেরকে ছাড়েনি বলে সফলতা আসেনি। জামাতের যতটা ধার্মিক সুনাম, তারচেয়ে অনেক বেশী রাজাকার দুর্নাম। যদিও ক্যাডার পুষেছে হাজার হাজার, মানুষের মনে ঢুকতে পারেনি আদিপাপে। তাই আদিপাপ সারাতে নতুন পথে নেমেছে জামাত। সেলিব্রেটি লেখকের অভাবে তাদের পত্রিকা জনপ্রিয়তা পায় না। ফুটবল ক্রিকেটে বিদেশী খেলোয়াড় হায়ার করার প্রচলন থাকলেও পত্রিকাগুলোতে ভিন্নমতের লেখক বুদ্ধিজীবি হায়ার প্রচেষ্টার জনক নয়া দিগন্ত এবং দিগন্ত টিভি। কাতারে কাতারে প্রগতিশীল চামড়া হায়ার করে গ্রহনযোগ্যতার সীমাকে উর্ধ্বগামী করছে দিনের পর দিন।

ব্রাভো প্রগতিশীল ভাড়াটে লেখকদল!!! অর্থের চেয়ে নীতি কোনকালে বড় ছিল না, কি বলেন? একসময় জামাতীরাই তো বিএনপির ঘাড়ে চড়ে ক্ষমতার মসনদে আরোহন করবেন, তখন তো তাদের ছাড়া চলবে না।। সবাইকে হাত না রাখতে পারলে এদেশে বাস করা মুশকিল। চোর পুলিশ হাকিম উকিল সকলকে সন্তুষ্ট রাখতে পারলেই নিরাপদ রাত্রিযাপন।

ওহে ভাড়াটে লেখকগন। বালবাচ্চা নিয়ে ভালো থাকুন, নিরাপদ রাত্রিযাপন করুন।

No comments: