পাঠকের কি মৃত্যু হয় নাকি বিবর্তন হয়?
একসময় আমি দস্যু বনহুরের ভক্ত ছিলাম। কৈশোরের রোমাঞ্চকর নায়ক বনহুর। ক্লাস এইট পার হয়ে নাইনে ওঠার পর কুয়াশায় পেয়ে বসে। কুয়াশার ঘোর কাটতে না কাটতে মাসুদ রানা এসে উঁকি ঝুকি দিতে শুরু করে ক্লাস টেনে। মাসুদ রানা সর্বোচ্চ সময় ধরে রাখে ভার্সিটির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত। পাশাপাশি সেবার অন্যন্য ক্লাসিক অনুবাদ, ওয়েষ্টার্ন।
ইন্টারে পড়ার সময় পাশাপাশি হুমায়ুন আহমেদের আছর হয় নন্দিত নরকে পড়ার পর। ইন্টার পাশ করার পর চোখ খুলে দুনিয়া ব্যাপি হাজারো বইয়ের জগতে। তবে সেবা প্রকাশনীর জন্য আজীবন নষ্টালজিক থাকবো, মাসুদ রানার জন্যও। গুরুগম্ভীর বইতে যখন মন বসে না তখন পেপারব্যাক খুব টানে। পড়া হয়না যদিও বহুদিন। একসময় পত্রিকার ষ্টলে দাড়িয়ে অর্ধেক পত্রিকা পড়ে ফেলতে ইচ্ছে করতো সেই যাযাদি, পূর্বাভাস, বিচিন্তা, খবরের কাগজের যুগে।
শফিক রেহমানের নষ্টামিতে নিউজপ্রিন্ট ম্যাগাজিনই ছেড়ে দিলাম পড়া। আজকের কাগক, ভোরের কাগজ হয়ে প্রথম আলোতে যখন থিতু হলাম, বিচিত্রা বন্ধ হয়ে যাবার পর ২০০০ এ মজে গেছি যখন, একদিন আবিষ্কার করি পত্রিকা পড়ার সময় হয় না আমার। আধপড়া বইগুলো পড়ে থাকে শেলফের আনাচে কানাচে।
একদিন দেখলাম পত্রিকা পড়ার সময় হয় না আমার। তখন একদিন আবিষ্কার করি ব্লগ। দৈনিক তিনটা পত্রিকা পড়ে থাকে হাতের নাগালে, একটাও পড়া হয় না। এখন পড়ি ব্লগ। ব্লগে বুদ হয়ে গেছে পত্রিকা পাঠক।
পাঠক বিবর্তিত হয়ে যায় এভাবে। ব্লগের নেশা কেটে গেলো কোন দিকে ছুট দেবে পাঠক?
No comments:
Post a Comment