এক টাকায় একটা ডিমবল। ছেলেবেলায় টেবিল টেনিস বলকে আমরা 'ডিমবল' ডাকতাম। বড় হবার পরও ডিমবল নামটা রয়ে গেছে। মেঝেতে ছুড়ে দিলে ডিমবলের ঠাশ ঠাশ করে লাফিয়ে ওঠার দৃশ্যটা আমার খুব প্রিয় ছিল। আমি টেবিল টেনিস তেমন খেলিনি। লন টেনিসও না।
ছেলেবেলায় আমরা লন টেনিসকে বলতাম 'লং টেনিস'। গুগল করে দেখেন শুধু আমি না, অনেক পত্রিকাতেও লং টেনিস লেখা। আমি কোন টেনিস তেমন খেলিনি কিন্তু টেনিস বল দিয়ে ক্রিকেট খেলেছি বিস্তর। প্রায় সবার ক্রিকেটে হাতে খড়ি হয় টেনিস বল দিয়ে। সাদা রঙের টেনিস বলগুলো ছিল সস্তা। পাঁচ টাকা দামের সবুজ রঙের টেনিস বলগুলো দামী। এই বলগুলো মসৃন পশমে ঢাকা।
আমাদের ব্যাট ছিল তক্তার তৈরী। পাতলা তক্তার এক পাশে সরু করে হাতে ধরার ব্যবস্থা করা হতো। উইকেট হিসেবে ব্যবহার করতাম থান ইট কিংবা বাঁশের কঞ্চি। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত তক্তার ব্যাটে খেলেছি। ক্রিকেটের পাশাপাশি চলতো ফুটবলও। বর্ষাকালে মাঠের কাদার মধ্যেও থপথপ করে টুর্নামেন্ট চলতো আমাদের। ফুটবলে আমি স্ট্রাইকার হতে চাইলেও ভাগ্য আমাকে গোল কিপারে নির্ধারন করে। কারণ একবার ক্লাবের দুঃসময়ে পেনাল্টি কিক ধরে ফেলেছিলাম। সেই থেকে আমার জায়গা গোলপোষ্ট।
ফুটবল ছেড়ে দিলাম ক্লাস নাইনে ওঠার পর, তখন ব্যাডমিন্টনের নেশা। ব্যাডমিন্টন ছিল সবচেয়ে প্রিয় খেলা। ফুটবল ক্রিকেট সব ছেড়ে ব্যাডমিন্টনে লেগে ছিলাম অনেক বছর। কিন্তু সব খেলার পাশাপাশি অবসর বিনোদন ছিল ডিমবল। সাদা গোল ডিমের উপরদিকে মেরুন রঙের চাইনীজ ছাপা ছিল আসল ডিমবলে।
একটা ডিম বলের দাম ছিল এক টাকা। হ্যাঁ এইটা কিভাবে যেন মনে আছে। পাখির ডিম নামে এক ধরনের গুলগুল রঙিলা ক্যাণ্ডি পাওয়া যেতো। এক প্যাকেটে অনেকগুলো। সেগুলোর দামও ছিল এক টাকা। ডিমবলের সুবিধা ছিল পকেটে নিয়ে ঘুরা যেত। এমনকি বেড়াতে গেলেও হাফপ্যান্টের পকেটে ফুলে থাকতো একটা ডিমবল। হাতের তালু দিয়ে মেঝের সাথে বাড়ি মেরে মেরে খেলতে খেলতে হাটতাম। শহরের যে কোন জায়গায় এটা চমৎকার নিজস্ব বিনোদন। তবে গ্রামে গেলে এটার কেরামতী শেষ। গ্রামে ছিল কাঁচামাটির মেঝে। সেখানে এই বল লাফাবে না। তাই গ্রামে গেলে ডিমবল বাদ। গ্রামের জন্য নেয়া হতো লাটিম। ডিমবলের জায়গাটায় ফুলে থাকতো লাল সবুজ লাটিম। ভাবতে কেউ অবাক হতে পারে, এই বয়সে এসে আমি আবারো সেই ১ টাকা দামের ডিমবল আর আট আনা দামের লাটিমকে মিস করতে শুরু করেছি।
মিস করতে শুরু করেছি যখন শিহানের জন্য আমার হারানো খেলনাগুলো খুঁজতে গেছি দোকানে। সাদা বল না পেয়ে কমলা রঙের টেবিল টেনিস বল কিনে এনে নিজেই খেলতে শুরু করি হাত দিয়ে। শিহান দেখে মজা পায়। সে এখনো খেলতে পারে না। কিন্তু আমাকে খেলতে বলে। আমি খেললেও আনন্দ তার। আমি শিহানকে পাশে বসিয়ে বড়দের ভঙ্গীতে আমার ছেলেবেলার স্মৃতিচারণ করে যাই। আমার বকরবকর শুনে সে আমোদিত। আরো বলো, আরো বলো করে অতিষ্ট করে দেয়। তখন আমি মনে না পড়া স্মৃতিগুলোকেও হাতড়ে কিছু বের করি। যেটুকু মনে আছে তার উপর রঙ চড়িয়ে গল্প করি ওর সাথে। ছেলেবেলাটা একটা স্মৃতির সমুদ্র। সেই সমুদ্রে হারানো মুক্তোগুলো খুঁজে বেড়ানো আমার প্রিয় অভ্যেস। বিক্ষিপ্ত হলেও তাকে অক্ষরাবদ্ধ করতে দেরী করি না তাই।ছেলেবেলায় আমরা লন টেনিসকে বলতাম 'লং টেনিস'। গুগল করে দেখেন শুধু আমি না, অনেক পত্রিকাতেও লং টেনিস লেখা। আমি কোন টেনিস তেমন খেলিনি কিন্তু টেনিস বল দিয়ে ক্রিকেট খেলেছি বিস্তর। প্রায় সবার ক্রিকেটে হাতে খড়ি হয় টেনিস বল দিয়ে। সাদা রঙের টেনিস বলগুলো ছিল সস্তা। পাঁচ টাকা দামের সবুজ রঙের টেনিস বলগুলো দামী। এই বলগুলো মসৃন পশমে ঢাকা।
আমাদের ব্যাট ছিল তক্তার তৈরী। পাতলা তক্তার এক পাশে সরু করে হাতে ধরার ব্যবস্থা করা হতো। উইকেট হিসেবে ব্যবহার করতাম থান ইট কিংবা বাঁশের কঞ্চি। ক্লাস সেভেন পর্যন্ত তক্তার ব্যাটে খেলেছি। ক্রিকেটের পাশাপাশি চলতো ফুটবলও। বর্ষাকালে মাঠের কাদার মধ্যেও থপথপ করে টুর্নামেন্ট চলতো আমাদের। ফুটবলে আমি স্ট্রাইকার হতে চাইলেও ভাগ্য আমাকে গোল কিপারে নির্ধারন করে। কারণ একবার ক্লাবের দুঃসময়ে পেনাল্টি কিক ধরে ফেলেছিলাম। সেই থেকে আমার জায়গা গোলপোষ্ট।
ফুটবল ছেড়ে দিলাম ক্লাস নাইনে ওঠার পর, তখন ব্যাডমিন্টনের নেশা। ব্যাডমিন্টন ছিল সবচেয়ে প্রিয় খেলা। ফুটবল ক্রিকেট সব ছেড়ে ব্যাডমিন্টনে লেগে ছিলাম অনেক বছর। কিন্তু সব খেলার পাশাপাশি অবসর বিনোদন ছিল ডিমবল। সাদা গোল ডিমের উপরদিকে মেরুন রঙের চাইনীজ ছাপা ছিল আসল ডিমবলে।
একটা ডিম বলের দাম ছিল এক টাকা। হ্যাঁ এইটা কিভাবে যেন মনে আছে। পাখির ডিম নামে এক ধরনের গুলগুল রঙিলা ক্যাণ্ডি পাওয়া যেতো। এক প্যাকেটে অনেকগুলো। সেগুলোর দামও ছিল এক টাকা। ডিমবলের সুবিধা ছিল পকেটে নিয়ে ঘুরা যেত। এমনকি বেড়াতে গেলেও হাফপ্যান্টের পকেটে ফুলে থাকতো একটা ডিমবল। হাতের তালু দিয়ে মেঝের সাথে বাড়ি মেরে মেরে খেলতে খেলতে হাটতাম। শহরের যে কোন জায়গায় এটা চমৎকার নিজস্ব বিনোদন। তবে গ্রামে গেলে এটার কেরামতী শেষ। গ্রামে ছিল কাঁচামাটির মেঝে। সেখানে এই বল লাফাবে না। তাই গ্রামে গেলে ডিমবল বাদ। গ্রামের জন্য নেয়া হতো লাটিম। ডিমবলের জায়গাটায় ফুলে থাকতো লাল সবুজ লাটিম। ভাবতে কেউ অবাক হতে পারে, এই বয়সে এসে আমি আবারো সেই ১ টাকা দামের ডিমবল আর আট আনা দামের লাটিমকে মিস করতে শুরু করেছি।
No comments:
Post a Comment