Sunday, April 19, 2009

একখান ঝাড়ি এবং একটি শিক্ষামূলক প্রেম

"তুমি একটা বেয়াক্কেল, এই সাত সকালে এতগুলো ছেলেমেয়ের সামনে আমাকে বেইজ্জত করলে, তোমার জন্য সেই সাতটা থেকে আমি দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে প্রথম ট্রেনটা চলে গিয়ে দ্বিতীয় ট্রেনও চলে গেছে। একটু পর দশটার ট্রেন ছাড়ার সময় হবে, আর তুমি এতক্ষনে আসছো, তোমার কোন কান্ডজ্ঞান নাই, সময়জ্ঞান নাই, তুমি একটা অপদার্থ, একটা মেয়েকে কিভাবে সম্মান দেখাতে হয় তার কিছুই জানো না তুমি, আমি আজ আর ভার্সিটি যাবো না যাবো না যাবো না, তুমি যতই বল আমি যাবো না, আমার সারাটা দিন তুমি মাটি করে দিলা, তোমাকে আমি ক্ষমা করবো না, কিছুতেই না। কী করে পারলে তুমি... অ্যাঁ, কী করে? এমন একটা সুন্দর সকাল কী করে মাটি করে দিলে তুমি? কাল রাতে পইপই করে বলার পরও তোমার কানে ঢোকেনি আমরা সাতটার ট্রেনে ভার্সিটি যাবো, তোমার জন্য আগে এসে সিট রাখবো, তারপর দুজনে সারাদিন ক্লাস বাদ দিয়ে ক্যাম্পাসের আশপাশে হেঁটে বেড়াবো, গল্প করবো, কবিতা শোনাবো, দুপুরে শহরে ফিরে চাইনিজ খাবো, তারপর বিকেলটা ফয়েজলেকে কাটিয়ে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরবো। মাকে বলে এসেছি আজ অনেক পরীক্ষা আছে ফিরতে দেরী হবে, কত কী পরিকল্পনা ছিল সব নষ্ট করে দিলে তুমি! তোমার মতো বেরসিক লোককে বলাটাই ভুল হয়েছে আজ ১৪ ফেব্রুয়ারী, ভালোবাসা দিবস।"

তিন মিনিটের বিরতিহীন মুখবর্ষনের পর সুরঞ্জনা থামলো, ঘুরলো এবং চলে গেল। এই ছিল আমার সাথে সুরঞ্জনার শেষ কথা। তাকে আর ফেরাতে পারিনি। মাত্র দুই ঘন্টার লেট কামিং একটা প্রেমকে সারা জনমের জন্য ঠান্ডা মেরে দিল।

অকুস্থলঃ চট্টগ্রাম রেলষ্টেশান। সময়ঃ সকাল ৯.১৫। তারিখঃ ১৪ফেব্রুয়ারী ১৯৯৩ খ্রীষ্টাব্দ।

ঘটনা থেকে শিক্ষনীয় কিছু পেলেন?

No comments: