Saturday, May 24, 2014

বৈদেশিক

গত সপ্তাহে হঠাৎ করে বিশ্বব্যাংকের নেতৃত্বে ইইউ এবং ডিএফআইডির কয়েকজন সিনিয়র স্পেশালিস্ট আমার অফিসে এসেছিলেন কিছু বিষয় নিয়ে আলাপ করতে। প্রথমে ভেবেছিলাম সৌজন্য সাক্ষাতকার। কিন্তু কনফারেন্স রুমে এই বাঘা লোকগুলোর ধারাবাহিক জেরার মুখে টের পেলাম ব্যাপারটার সাথে জাতীয় স্বার্থ কত গভীরভাবে জড়িত। অতএব প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সতর্ক হয়ে যেতে হলো। বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সমস্যাগুলোর ব্যাপারে সঠিক তথ্য দেয়া যাবে না। অতএব, পেশাদার মিথ্যেবাদীর মতো বাংলাদেশের প্রশংসায় ভরিয়ে দিলাম কনফারেন্স রুম।

ভদ্রলোক এবং ভদ্রমহিলাগন প্রথমে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শন করেন, তারপর রপ্তানী প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল পরিদর্শন করতে গিয়ে দুটো এন্টারপ্রাইজকে বেছে নিয়েছিলেন, যার প্রথমটিতে আমি। যখন আমাকে প্রশ্ন করা হলো যদি সমজাত সুযোগ সুবিধা প্রতিবেশী দেশেও থাকে, তাহলে আমরা বিনিয়োগ সম্প্রসারণ করতে গিয়ে সেই দেশকে বেছে নেবো কিনা, তখনই আমি সতর্কতার প্রথম পদক্ষেপটি নিলাম। আমার উত্তর ছিল সুযোগসুবিধা সমপর্যায়ের হলেও বাংলাদেশের যে শ্রমশক্তি সেটাকে অতিক্রমের কোন শক্তি আপাততঃ কোন প্রতিবেশী দেশের নেই। এখানে আমরা অপ্রতিদ্বন্দ্বী। বাংলাদেশের কোন বিকল্প নেই গার্মেন্টস সেক্টরে। আমার উত্তর তাদের চোখের উজ্জলতা কমিয়ে দিয়েছিল কিনা খেয়াল করিনি, কিন্তু এটা বুঝতে পেরেছি যে বাংলাদেশের বিকল্প হিসেবে কোন একটা দেশকে খাড়া করানোর একটা ইঙ্গিত তাতে আছে।

কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, আমি বাংলাদেশের বিনিয়োগ প্রতিবন্ধকতাগুলোকে যতই আড়াল করার চেষ্টা করি, একজন বিদেশী কখনোই সেটা করবে না। এখানে ভাগ্যকে একটা ধন্যবাদ দিতে হয় ওই লোকগুলোর মুখোমুখি হবার জন্য কোন বিদেশীর বদলে আমাকেই নির্বাচিত করা হয়েছিল। নইলে বাংলাদেশের ইমেজের উপর একটা কষে চড় পড়ার সম্ভাবনা ছিল। কারণ এই রপ্তানী প্রক্রিয়া অঞ্চলেও আমরা সদাশয় কাস্টমস কতৃপক্ষের কাছ থেকে যেরকম অসহযোগিতা এবং দুর্বিষহ মনোভাব দেখতে পাই তাতে কোন বিনিয়োগকারীই সন্তুষ্ট নয়। ক্ষেত্রবিশেষে ব্যবসা করার জন্য আমাদেরকে ব্ল্যাকমেইলের স্বীকারও হতে হয়। এই যন্ত্রণা নিয়ে এখানে সুস্থ বিনিয়োগ আশা করা যায় না। দশ বছর আগে ভিয়েতনামকে আমাদের সাথে তুলনা করা গেলেও এখন সেটা অসম্ভবের পর্যায়ে চলে গেছে। এখানে বিনিয়োগ বৃদ্ধি কেবল শ্লোগানেই সীমাবদ্ধ থেকে যাবে যদি এসব সরকারী দুর্বৃত্তপনা বন্ধ না হয়।

আমি নিন্মোক্ত ভদ্রলোকদের সঠিক উদ্দেশ্য সম্পর্কে নিশ্চিত না হলেও তারা বিদায় নেবার সময় আমার বক্তব্য এবং তাদের পর্যবেক্ষণের ফলকে যে 'ইমপ্রেসিভ' সার্টিফায়েড করে গেছে, সেটা বাংলাদেশের জন্য তৃপ্তিকর ছিল।

Dr Duncan Overfield
Senior Regional Economic Adviser
Asia Regional Team, DFID
Current office New Delhi, India

Mr Thom Adcock
Economist, DFID
Current office Rangoon, Burma

Mr Alan Whiteworth
Senior Economist
Economic Growth Group
Current office Islamabad, Pakistan

Martha Lawrence
Senior Railway Specialist
Sustainable Development Network, Transport
World Bank
Current office Washington DC, USA

Piers Devenport
Political, Trade and Press Section
European Union
Current office Dhaka, Bangladesh

No comments: