Friday, February 14, 2014

ফাল্গুনের প্রিয় দুটো দিন

১.
আমাদের অনেকের জীবনেই একেকটা কফি হাউজের আড্ডার গল্প আছে। পরিণত বয়সে আড্ডার বন্ধুগুলো আর একসাথে থাকে না। আমারো অনেক বন্ধু হারিয়ে গেছে। তবু এখনো কয়েকজনের সাথে যোগাযোগে আছি। একই এলাকায় না হোক, একই শহরে। একই শহরে না হোক একই দেশে। এমনকি একই দেশে না হোক একই গ্রহে।

কিন্তু কিছু বন্ধু একেবারেই ছিটকে গেছে যোগাযোগের পথ থেকে। তাদের কিছুই আমরা জানি না। হেরে যাওয়া মানুষের সংবাদ কেউ রাখে না। আজ সেরকম একজন বন্ধু হঠাৎ ফোন করলো। ওর কথা শুনতে শুনতে ভীষণ কষ্ট হলো অপরাধবোধ হলো। সুদূর আমেরিকায় বসবাস করা বন্ধুর খবর আমি এক ক্লিকে নিয়ে ফেলি অথচ একই শহরে বাস করা এই বন্ধুর ঠিকানাও জানি না। কষ্ট চেপে বন্ধুকে বললাম আয় আজ দুপুরে একসাথে ডালভাত খাই। বন্ধু রাজী হলে আমার মনে হলো এটাই তো ভ্যালেন্টাইন আনন্দ।

মাঝে মাঝে কি আমরা এই হেরে যাওয়া বন্ধুদের নিয়ে ভ্যালেন্টাইন পালন করতে পারি না? বছরে দুয়েকবার? অবশ্যই পারি।

[১৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৪]

২.
গত কয়েক বছর পহেলা ফাল্গুনে বিকেল থেকে সন্ধ্যের সময়টা ডিসি হিলে যাই পরিবার নিয়ে। ওশিন যখন ৩ বছরের কম তখন থেকেই আসতে শুরু করি। এই অনুষ্ঠান ওরও ভীষণ প্রিয়। ওর স্কুলের ঠিক সামনেই। এ বছর অফিস ফাঁকি দিতে পারিনি বলে সন্ধ্যের পর যেতে হলো। তখনো আলোয় ছায়ায় সুরের মায়ায় পাহাড়ের পাদদেশে দাঁড়িয়ে থাকা শতাধিক বর্ষ প্রাচীন শিরীষ গাছের পাখায় পাখায় বসন্তের মৃদুমন্দ বাতাস বসে থাকা সারি সারি মানুষের কানে কানে বলছিল- 'এই তো আমি এসে পড়েছি, এবার নতুনের গান শোনো'। আমরা বেঞ্চিতে বসে মাথা দুলিয়ে পায়ে তাল দিতে দিতে গান উৎসব উপভোগ করি।

সত্যি বলতে কি পহেলা বৈশাখের চেয়েও এই দিনটা প্রিয় আমার। আরামদায়ক আবহাওয়া। মার্জিত পরিবেশ। রুচিশীল মানুষের সমাবেশ। পহেলা বৈশাখের লক্ষ মানুষের বিশ্রী রকমের ধাক্কাধাক্কি হুড়োহুড়ি সমৃদ্ধ বিরক্তিকর গরম উৎসবের চেয়ে এই সীমিত মানুষের বসন্ত উৎসব ঢের ঢের সুন্দর আর উপভোগ্য। পারলে নববর্ষই বদলে নিয়ে আসতাম আজকের দিনে।

[পহেলা ফাল্গুন ১৪২০]

৩.
সবগুলো ইচ্ছেপুরণের অন্যরকম একটা দিন আজ। এই সময়ের সবচেয়ে সুন্দর ২৪টি ঘন্টা।

No comments: