Wednesday, November 25, 2009

একটি গল্পের সুত্রপাত-

একটা গল্প লিখতে ইচ্ছে করছে। কি গল্প হবে এখনো জানি না। তবে গল্পের চটকদার একটা নাম ঠিক করা হয়েছে- "অপ্রত্যাশিত বিদ্যুতের চমক"। গল্পটা হতে হবে সংক্ষিপ্ত, কিন্তু প্রানবন্ত। গল্পের মধ্যে সর্বোচ্চ দুজন চরিত্র থাকবে যার একজন পুরুষ আরেকজন নারী। অথবা দুজন পুরুষ কিংবা দুজন নারী। না, দুজন নারীকে নিয়ে ছোট গল্প লেখা যাবে না। কারন দুজন নারী একত্রিত হলে গল্প অনেক বড় হয়ে যাবে, সাধারনতঃ নারীগন স্বল্পভাষী হয় না। সুতরাং গল্পের আকার সংক্ষিপ্ত রাখতে দুজন পুরুষ কিংবা এক নারী এক পুরুষকে নিয়ে লেখাই শ্রেয়।

দুজন পুরুষকে নিয়ে গল্প দাঁড় করানো অবশ্য কঠিন। কারন পুরুষেরা পরস্পরের সাথে কথা বলে কম। অপরিচিত হলে তো মুখে রা টি নেই। তারচে বরং অচেনা নারী ও অচেনা পুরুষকে নিয়ে গল্প তৈরী করা যায়। দুই লিঙ্গের মধ্যে বিপরীত ও সহজাত আকর্ষনের কারনে গল্প হয়ে উঠতে পারে রোমান্টিক। কিন্তু না, রোমান্টিক গল্প লিখবো না। নারী ও পুরুষের দেখা হলেই কি রোমান্টিক গল্প হতে হবে? নারী পুরুষের মধ্যে অন্য সম্পর্ক হতে পারে না? আরো বেশী অর্থপূর্ন কোন সম্পর্ক? কি সেটা? প্রেম ছাড়া আর কি আছে? প্রেম কি পদ্যের মতো ছন্দময়? প্রেম ছাড়া অনুরাগের আর কোন প্রকাশ নেই? হয়তো আছে। সেটা পাঠকের মনে মনেও থাকতে পারে।

একটা কাজ করা যাক। গল্পটা না লিখে বরং পাঠককে গল্পের প্লট নিয়ে একটা ধারনা দেয়া যাক। পাঠকই ঠিক করুক প্রেমহীন একটা মধুর অর্থপূর্ন সম্পর্ক।

..........................................................................................................................
ধরা যাক একটি লোকাল ট্রেনের বগি। ধলঘাট ষ্টেশান থেকে ট্রেনে উঠেছে রূপম। কাঁধে একটা চামড়ার ব্যাগ। ব্যাগের ভেতর একগাদা বই। জানালার পাশে বসে রূপম নিবিষ্ট মনে বইয়ের ভেতরে ডুবে আছে। জানালা দিয়ে ছুটে যাচ্ছে সবুজের অপূর্ব সমারোহ। সূর্য তখন হেলে পড়েছে পশ্চিম দিগন্তের পানে। বিকেলের সোনালী রোদে গ্রামগুলো যেন ধুয়ে যাচ্ছে। হেমন্তকাল তখন। হালকা কুয়াশার আস্তরন ভেসে আছে ধানক্ষেতের উপর।

মিনিট পনের পর কদলপুর ষ্টেশান থেকে একই বগিতে ট্রেনে উঠলো এক তরুনী। নাম জয়া। রূপম যেখানে বসেছে তার চেয়ে একটু দুরের একটা সীটে বসে পড়লো সে। যদিও লক্করঝক্কর লোকাল ট্রেন, তবে ট্রেনে ভীড় একেবারেই নেই। কারন এই সময়ে শহরমুখী যাত্রী থাকে না বললেই চলে। শহর এখনো অনেক দুর। এভাবে চললে ঘন্টা দুয়েক লাগার কথা। পথে আরো আটটা ষ্টেশান ধরার কথা। আরেকটা বড় জংশনে আধা ঘন্টার মতো থামার কথা একটা এক্সপ্রেস ট্রেনকে পার করে দিতে। ততক্ষনে সন্ধ্যে পেরিয়ে যাবে।

তবে এই তথ্যগুলো তরুন তরুনী দুজনেরই অজানা। কারন তরুন বিদেশ থেকে এসে বন্ধুর বাড়ীতে বেড়াতে গিয়েছিল। কোন কিছুই চেনে না সে। সে জানে কেবল এই ট্রেন যেখানে থামবে সেখানে তাকে নেমে যেতে হবে। ওখানে তার জন্য দাড়ানো থাকবে একটা গাড়ী। আর তরুনী এই পথে কখনো ট্রেনে চড়েনি। সে মামার বাড়ীতে থেকে পড়াশোনা করে। মামীর সাথে রাগ করে বেরিয়ে পড়েছে যেদিকে দুচোখ যায় চলে যাবে। ট্রেনটা ছুটে যাচ্ছে ঝমঝম করে, দিগন্ত চিরে।
.............................................................................................................................

পাঠকের মনে ভাবনার সুত্র ধরিয়ে দিয়ে লেখক চা খেতে চলে যান। গল্পটির সাইজ মোটামুটি ১০০০ শব্দের ভেতর রাখার ইচ্ছে লেখকের। তার মধ্যে ২০০টি শব্দ লেখা হয়েছে। লেখকের ধারনা চা খেয়ে আসতে আসতে পাঠক গল্পটি শেষ করে ফেলতে পারে মনে মনে। পাঠকের দেয়া সমাপ্তি দিয়ে গল্পটি শেষ করলে কেমন হয়? কি আছে পাঠকের মনে....? বাকী ৮০০ শব্দে কি ঘটতে পারে?

No comments: