বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের দলিলপত্র ত্রিশ বছর আগে প্রকাশিত হলেও অধিকাংশ বাঙালীর তা পড়া হয়নি। যদিও 'দলিলপত্র' শব্দটি যুক্ত আছে এখানে দলিলপত্রের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়া ব্যক্তিদের সাক্ষাতকার, বিবৃতি নেয়া হয়েছে। সেই সব বিবৃতির শতভাগ সত্যতা আমরা নিশ্চিত করে বলতে পারি না। কেউ কেউ মিথ্যে সাক্ষী দিয়েছেন নানামূখী স্বার্থে। কিছু কিছু সাক্ষাতকার পরস্পরবিরোধী। একই ঘটনা নিয়ে যখন একাধিক ব্যক্তির বিবৃতি দেখা যায় তখন সেই বক্তব্যগুলোর মধ্যে অনেক পার্থক্যও দেখা যাচ্ছে। তথ্যের ভুল এবং অসঙ্গতিগুলো যাচাই করার জন্য আরো একাধিক সুত্রের সাহায্য নিয়ে বিবেচনা করা উচিত। দলিলপত্রে বর্ণিত সব ঘটনাকে তাই শতভাগ শুদ্ধ বলা যাবে না। মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্রের সচেতন মিথ্যাগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য আরেকটি প্রকল্প হাতে নেয়া উচিত।
বাংলাদেশ সরকার প্রকল্পটি গ্রহন করে ১৯৭৩ সালে, কিন্তু কাজ শুরু হয় ১৯৭৮ সালে। প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালে পঞ্চদশ খণ্ড প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে । এই সময়কালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার দিনরাত আমূল বদলে যায়, সরকার পরিবর্তিত হয় একাধিকবার, প্রতিটি সরকার ভিন্ন ভিন্ন মতের অনুসারী। যার ফলে প্রকল্পের মধ্যে যোগ্যতম মানুষেরা থাকা সত্ত্বেও মিথ্যে সাক্ষ্যগুলো যুক্ত হয়ে গেছে কিছু কিছু জায়গাতে। এ যাবত যেসব মিথ্যের যোগানদারের কথা পাওয়া গেছে তাদের সবাই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সেসব মিথ্যের মধ্যে অংশগ্রহন ছিল খোদ তৎকালীন সরকার প্রধানেরও।
বাংলাদেশ সরকার প্রকল্পটি গ্রহন করে ১৯৭৩ সালে, কিন্তু কাজ শুরু হয় ১৯৭৮ সালে। প্রথম খণ্ড প্রকাশিত হয় ১৯৮২ সালে পঞ্চদশ খণ্ড প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে । এই সময়কালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার দিনরাত আমূল বদলে যায়, সরকার পরিবর্তিত হয় একাধিকবার, প্রতিটি সরকার ভিন্ন ভিন্ন মতের অনুসারী। যার ফলে প্রকল্পের মধ্যে যোগ্যতম মানুষেরা থাকা সত্ত্বেও মিথ্যে সাক্ষ্যগুলো যুক্ত হয়ে গেছে কিছু কিছু জায়গাতে। এ যাবত যেসব মিথ্যের যোগানদারের কথা পাওয়া গেছে তাদের সবাই উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এবং সেসব মিথ্যের মধ্যে অংশগ্রহন ছিল খোদ তৎকালীন সরকার প্রধানেরও।
বাংলাপিডিয়া অনুসারে প্রকল্পটিতে তথ্যগুলো যেভাবে সাজানো হয়েছে-
দলিল এবং তথ্য প্রামাণ্যকরণের জন্য সরকার নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন। এর গঠনকাঠামো ছিল নিম্নরূপ: চেয়ারম্যান প্রফেসর মফিজুল্লাহ কবীর, সদস্য সচিব হাসান হাফিজুর রহমান, সদস্যবৃন্দ: প্রফেসর সালাহউদ্দীন আহমদ, প্রফেসর আনিসুজ্জামান, ড. সফর আলী আকন্দ, ড. এনামুল হক, ড. কে.এম করিম, ড. কে.এম মোহসীন ও ড. শামসুল হুদা হারুন। ইতিহাস রচনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে এই কমিটি শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধ সংক্রান্ত দলিল ও তথ্য প্রকাশকেই অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
কিন্তু দলিলপত্র সংগ্রহের সীমা স্বাধীনতা যুদ্ধকেন্দ্রিক হওয়া সত্ত্বেও, মুক্তিযুদ্ধের পশ্চাতে বিশাল পটভূমিরও রয়েছে সমান গুরুত্ব। মুক্তিযুদ্ধকে এই পটভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। এই পটভূমির ঘটনাবলী যাকে মুক্তি সংগ্রাম বলা যায় তার অনিবার্য পরিণতি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। অর্থাৎ মুক্তিসংগ্রামের স্বরূপ জানা ছাড়া ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। এই কারণে দুখন্ডে পটভূমি সংক্রান্ত দলিলপত্র প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রধানত বিশেষ ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ এবং বিষয়ভিত্তিক (themetic) ভাবে খন্ডগুলি পৃথক করা হয়েছে। যেমন-
প্রথমখন্ড: পটভূমি (১৯০৫-১৯৫৮);
দ্বিতীয় খন্ড: পটভূমি (১৯৫৮-১৯৭১);
তৃতীয় খন্ড: মুজিবনগর: প্রশাসন;
চতুর্থ খন্ড: মুজিবনগর: প্রবাসী বাঙালিদের তৎপরতা;
পঞ্চম খন্ড: মুজিবনগর: বেতার মাধ্যম;
ষষ্ঠ খন্ড: মুজিবনগর: গণমাধ্যম;
সপ্তম খন্ড: পাকিস্তানি দলিলপত্র (সরকারি ও বেসরকারি);
অষ্টম খন্ড: গণহত্যা, শরণার্থী শিবির ও প্রাথমিক ঘটনা; নবম খন্ড: সশস্ত্র সংগ্রাম (১);
দশম খন্ড: সশস্ত্র সংগ্রাম (২);
একাদশ খন্ড: সশস্ত্র সংগ্রাম (৩);
দ্বাদশ খন্ড: বিদেশি প্রতিক্রিয়া, ভারত;
ত্রয়োদশ খন্ড: বিদেশি প্রতিক্রিয়া: জাতিসংঘ ও বিদেশি রাষ্ট্র;
চতুর্দশ খন্ড: বিশ্ব জনমত;
পঞ্চদশ খন্ড: সাক্ষাৎকার;
ষোড়শ খন্ড: কালপঞ্জী, গ্রন্থপঞ্জী ও নির্ঘণ্ট। (তবে পরিকল্পনায় থাকলেও ষোড়শ খন্ডটি প্রকাশিত হয় নি এবং সর্বশেষে পঞ্চদশ খন্ডটি প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে।)
এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ পৃষ্ঠার দলিল সংগ্রহ করা হলেও প্রকাশ করা হয়েছে মাত্র পনের হাজারের বেশি নির্বাচিত দলিল।
দলিল এবং তথ্য প্রামাণ্যকরণের জন্য সরকার নয় সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন। এর গঠনকাঠামো ছিল নিম্নরূপ: চেয়ারম্যান প্রফেসর মফিজুল্লাহ কবীর, সদস্য সচিব হাসান হাফিজুর রহমান, সদস্যবৃন্দ: প্রফেসর সালাহউদ্দীন আহমদ, প্রফেসর আনিসুজ্জামান, ড. সফর আলী আকন্দ, ড. এনামুল হক, ড. কে.এম করিম, ড. কে.এম মোহসীন ও ড. শামসুল হুদা হারুন। ইতিহাস রচনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হলে এই কমিটি শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা যুদ্ধ সংক্রান্ত দলিল ও তথ্য প্রকাশকেই অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
কিন্তু দলিলপত্র সংগ্রহের সীমা স্বাধীনতা যুদ্ধকেন্দ্রিক হওয়া সত্ত্বেও, মুক্তিযুদ্ধের পশ্চাতে বিশাল পটভূমিরও রয়েছে সমান গুরুত্ব। মুক্তিযুদ্ধকে এই পটভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন করা যায় না। এই পটভূমির ঘটনাবলী যাকে মুক্তি সংগ্রাম বলা যায় তার অনিবার্য পরিণতি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। অর্থাৎ মুক্তিসংগ্রামের স্বরূপ জানা ছাড়া ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধকে যথাযথভাবে ব্যাখ্যা করা অসম্ভব। এই কারণে দুখন্ডে পটভূমি সংক্রান্ত দলিলপত্র প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রধানত বিশেষ ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ এবং বিষয়ভিত্তিক (themetic) ভাবে খন্ডগুলি পৃথক করা হয়েছে। যেমন-
প্রথমখন্ড: পটভূমি (১৯০৫-১৯৫৮);
দ্বিতীয় খন্ড: পটভূমি (১৯৫৮-১৯৭১);
তৃতীয় খন্ড: মুজিবনগর: প্রশাসন;
চতুর্থ খন্ড: মুজিবনগর: প্রবাসী বাঙালিদের তৎপরতা;
পঞ্চম খন্ড: মুজিবনগর: বেতার মাধ্যম;
ষষ্ঠ খন্ড: মুজিবনগর: গণমাধ্যম;
সপ্তম খন্ড: পাকিস্তানি দলিলপত্র (সরকারি ও বেসরকারি);
অষ্টম খন্ড: গণহত্যা, শরণার্থী শিবির ও প্রাথমিক ঘটনা; নবম খন্ড: সশস্ত্র সংগ্রাম (১);
দশম খন্ড: সশস্ত্র সংগ্রাম (২);
একাদশ খন্ড: সশস্ত্র সংগ্রাম (৩);
দ্বাদশ খন্ড: বিদেশি প্রতিক্রিয়া, ভারত;
ত্রয়োদশ খন্ড: বিদেশি প্রতিক্রিয়া: জাতিসংঘ ও বিদেশি রাষ্ট্র;
চতুর্দশ খন্ড: বিশ্ব জনমত;
পঞ্চদশ খন্ড: সাক্ষাৎকার;
ষোড়শ খন্ড: কালপঞ্জী, গ্রন্থপঞ্জী ও নির্ঘণ্ট। (তবে পরিকল্পনায় থাকলেও ষোড়শ খন্ডটি প্রকাশিত হয় নি এবং সর্বশেষে পঞ্চদশ খন্ডটি প্রকাশিত হয় ১৯৮৫ সালে।)
এই প্রকল্পের আওতায় প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ পৃষ্ঠার দলিল সংগ্রহ করা হলেও প্রকাশ করা হয়েছে মাত্র পনের হাজারের বেশি নির্বাচিত দলিল।
সুতরাং বলা চলে এই প্রকল্পটি নিয়ে আরো কাজ করার অবকাশ আছে। গবেষণা এখনো শেষ হয়নি। বিশ্লেষণের অনেক বিষয় এখনো অবিশিষ্ট আছে। প্রকাশিত খণ্ডগুলোর অসঙ্গতিগুলো নিয়ে আলোচনার অবকাশ আছে। নতুন প্রজন্মের মধ্যে বিভ্রান্তি এড়ানোর জন্য এই কাজটা করা জরুরী।