The House of Spirits (1993)
'ইসাবেল আলেন্দে' নামটি এদেশে পরিচিত না হলেও তাঁর নামের শেষাংশটুকুর জন্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। আমরা জানি চিলির সমাজতন্ত্রী প্রেসিডেন্ট সালভাদর আলেন্দে এক নিষ্ঠুর অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছিলেন ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে । তিনি সালভাদর আলেন্দের ভাতিজি।
প্রেসিডেন্ট নিহত হবার সময় তিনি পেরুতে চিলির দুতাবাসে কর্মরত ছিলেন। আলেন্দের আত্মীয়া হবার অপরাধে তাঁকেও হত্যার চেষ্টা করা হলে তিনি লিমা থেকে পালিয়ে ভেনিজুয়েলার কারাকাস চলে যান। সেখানে দীর্ঘ ১৩ বছর নির্বাসিত জীবনযাপন করেন।
ভেনিজুয়েলায় নির্বাসিত অবস্থায় ১৯৮১ সালে তিনি চিলি থেকে টেলিফোনে সংবাদ পান তাঁর ৯৯ বছর বয়স্ক পিতামহ মৃত্যুশয্যায় আছেন। কিন্তু তাঁকে দেখতে যাওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি তাঁকে দীর্ঘ একটি উদ্দীপনামূলক চিঠি লিখতে বসেন যে চিঠি তাঁকে মানসিকভাবে যদি চাঙ্গা রাখতে সক্ষম হয় শেষ সময়ে।
সেই চিঠিটাই পরবর্তীতে একটা উপন্যাসে বিবর্তিত হয়েছিল যে উপন্যাসটিতে উঠে এসেছিল চিলির রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিত্র। সেই রাজনৈতিক পরাবাস্তব উপন্যাসটি ইংরেজিতে The House of Spirits নামে অনুদিত হয়। পিনোচেটের আমলে পুরো ল্যাটিন আমেরিকাতে উপন্যাসটি প্রকাশ করতে রাজী হয়নি কোন প্রকাশক। পরে ইসাবেল স্পেন থেকে বইটি প্রকাশ করেন। প্রকাশের পরপর বইটি খুব সাড়া জাগিয়েছিল এবং বিশের অধিক সংস্করণ বের হয়, একাধিক ভাষায় অনুদিত হয়।
সেই প্রথম বইটির তুমুল জনপ্রিয়তায় তিনি ল্যাটিন সাহিত্যে উপন্যাসিক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে তাঁকে ল্যাটিন আমেরিকার ৩য় সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তম লেখক হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। কিছু কিছু সমালোচক ম্যাজিক রিয়েলিজমের আলোচনায় মার্কেজের পাশাপাশি তাঁর নামও উচ্চারণ করে থাকে। সেই প্রথম উপন্যাসটি চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত হয়েছিল ১৯৯৩ সালে।
সম্প্রতি সেই সিনেমাটি দেখার সুত্রে জানা গেল একদম অজানা এই লেখক সম্পর্কে। সিনেমায় মেরিল স্ট্রিপের অসাধারণ অভিনয়ের সাথে বাড়তি পাওনা ছিল এন্টোনিও বান্দেরাসের বিপ্লবী চেহারা। নতুন করে আগ্রহ জন্মালো চিলির সেই মর্মান্তিক অভ্যূত্থানের সাথে, যাকে আমরা প্রায়ই বাংলাদেশের পচাত্তরের ১৫ আগষ্টের সাথে তুলনা করে থাকি।
'ইসাবেল আলেন্দে' নামটি এদেশে পরিচিত না হলেও তাঁর নামের শেষাংশটুকুর জন্য আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে। আমরা জানি চিলির সমাজতন্ত্রী প্রেসিডেন্ট সালভাদর আলেন্দে এক নিষ্ঠুর অভ্যুত্থানে নিহত হয়েছিলেন ১৯৭৩ সালের ১১ সেপ্টেম্বরে । তিনি সালভাদর আলেন্দের ভাতিজি।
প্রেসিডেন্ট নিহত হবার সময় তিনি পেরুতে চিলির দুতাবাসে কর্মরত ছিলেন। আলেন্দের আত্মীয়া হবার অপরাধে তাঁকেও হত্যার চেষ্টা করা হলে তিনি লিমা থেকে পালিয়ে ভেনিজুয়েলার কারাকাস চলে যান। সেখানে দীর্ঘ ১৩ বছর নির্বাসিত জীবনযাপন করেন।
ভেনিজুয়েলায় নির্বাসিত অবস্থায় ১৯৮১ সালে তিনি চিলি থেকে টেলিফোনে সংবাদ পান তাঁর ৯৯ বছর বয়স্ক পিতামহ মৃত্যুশয্যায় আছেন। কিন্তু তাঁকে দেখতে যাওয়া সম্ভব নয় বলে তিনি তাঁকে দীর্ঘ একটি উদ্দীপনামূলক চিঠি লিখতে বসেন যে চিঠি তাঁকে মানসিকভাবে যদি চাঙ্গা রাখতে সক্ষম হয় শেষ সময়ে।
সেই চিঠিটাই পরবর্তীতে একটা উপন্যাসে বিবর্তিত হয়েছিল যে উপন্যাসটিতে উঠে এসেছিল চিলির রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ চিত্র। সেই রাজনৈতিক পরাবাস্তব উপন্যাসটি ইংরেজিতে The House of Spirits নামে অনুদিত হয়। পিনোচেটের আমলে পুরো ল্যাটিন আমেরিকাতে উপন্যাসটি প্রকাশ করতে রাজী হয়নি কোন প্রকাশক। পরে ইসাবেল স্পেন থেকে বইটি প্রকাশ করেন। প্রকাশের পরপর বইটি খুব সাড়া জাগিয়েছিল এবং বিশের অধিক সংস্করণ বের হয়, একাধিক ভাষায় অনুদিত হয়।
সেই প্রথম বইটির তুমুল জনপ্রিয়তায় তিনি ল্যাটিন সাহিত্যে উপন্যাসিক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে তাঁকে ল্যাটিন আমেরিকার ৩য় সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তম লেখক হিসেবে চিহ্নিত করেছিল। কিছু কিছু সমালোচক ম্যাজিক রিয়েলিজমের আলোচনায় মার্কেজের পাশাপাশি তাঁর নামও উচ্চারণ করে থাকে। সেই প্রথম উপন্যাসটি চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত হয়েছিল ১৯৯৩ সালে।
সম্প্রতি সেই সিনেমাটি দেখার সুত্রে জানা গেল একদম অজানা এই লেখক সম্পর্কে। সিনেমায় মেরিল স্ট্রিপের অসাধারণ অভিনয়ের সাথে বাড়তি পাওনা ছিল এন্টোনিও বান্দেরাসের বিপ্লবী চেহারা। নতুন করে আগ্রহ জন্মালো চিলির সেই মর্মান্তিক অভ্যূত্থানের সাথে, যাকে আমরা প্রায়ই বাংলাদেশের পচাত্তরের ১৫ আগষ্টের সাথে তুলনা করে থাকি।
Missing (1982)
চিলির অভ্যূত্থানের সময়কার একটি সাড়া জাগানো সত্য ঘটনা নিয়ে তৈরী হয়েছিল Missing নামের আরেকটি চলচ্চিত্র। নির্মিত হয়েছিল Thomas Hauser এর বই The Execution of Charles Horman: An American Sacrifice (1978) অবলম্বনে।
১৯৮২ সালে নির্মিত চলচ্চিত্রটি বিখ্যাত গ্রীক পরিচালক Costa Gavras এর অন্যতম সেরা কাজ। আলেন্দেকে হত্যার সময়কালে চিলির ভয়াবহ অস্থিরতার সময়ে Charles Horman এক আমেরিকান সাংবাদিক নিখোঁজ হয়েছিলেন চিলিতে। সেই ঘটনার ভিত্তিতে তৈরী করা সিনেমাটিতে যেসব তথ্য দেয়া হয়েছিল তাতে সিআইএ এবং আমেরিকান সরকারকে দায়ী করা হয়েছিল। আরো অনেক বছর পর আমেরিকান সরকার স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল ঘটনার সাথে জড়িত ছিল আমেরিকান সরকার এবং সিআইএ। বিচারে দণ্ডিত হয়েছিল রাষ্ট্রদুত সহ ১১ জন কর্মকর্তা। অথচ ছবিটা নির্মান করার পর চিলিতে নিষিদ্ধ হয়েছিল এবং আমেরিকার রাষ্ট্রদুতসহ জড়িত ব্যক্তিগণ Costa Gavras এর বিরুদ্ধে দেড়শো মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ মামলা করেছিল যা আদালতে খারিজ হয়ে গিয়েছিল। অভ্যূত্থানের পর নিক্সনের কাছে কিসিঞ্জার স্বীকার করেছিল সিআইএ জড়িত থাকার ব্যাপারে। কিন্তু এই স্বীকারোক্তি অনেক বছর চাপা পড়েছিল ক্লাসিফায়েট স্টিকারের নীচে। নব্বই দশকের শেষে ক্লিনটন সরকারের আমলো সেটাকে আনক্লাসিফায়েড করা হলে সমস্ত ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হয় জনসমক্ষে।
আজ আমরা সবাই জানি সিআইএ আলেন্দেকে যে কারণে হত্যা করে উৎখাত করেছিল, একই কারণে শেখ মুজিবকেও সপরিবারে হত্যা এবং উৎখাত করেছিল। সেখানেও নিক্সন কিসিঞ্জার, এখানেও। একই স্বার্থ দুই দেশেই।
চার্লস হরম্যানের নিখোঁজের ব্যাপারে সিআইএ-এর স্বীকারোক্তি - 'সে খুব বেশী জেনে ফেলেছিল'।
সেই 'বেশী' ছিল আলেন্দেকে উৎখাতে সিআইএ জড়িত আছে তা জেনে ফেলা।
জহির রায়হানও কি তেমন কিছু 'বেশী' জেনে গিয়েছিলেন?