Thursday, March 2, 2017

উনিশশো চুরাশির স্কুল বন্ধুরা

অভূতপূর্ব এক সম্মিলনীতে ৩৩ বছর আগে স্কুল ছেড়ে আসা কিছু সহপাঠী নিজেদের খুঁজে পেল কৈশোর আনন্দে। সহপাঠী মানে বন্ধু নয়, সব সহপাঠি বন্ধু হয় না, তবু সেই মেলায় আবারো যেন বন্ধুতার আনন্দ মিললো। সারাদিন আড্ডায় স্মৃতিচারণায় অনেকদিন পর অনেকখানি বদলে যাওয়া চেহারার ভুগোল মানচিত্র থেকে খুঁজে খুঁজে  আবারো পুরোনো নামে নতুন করে পরিচিত হওয়া সে এক রোমাঞ্চকর আবিষ্কার। এসএসসি পরীক্ষার পর ছিটকে যাওয়া বন্ধুগুলোর চেহারায় যখন গোফের রেখাও ওঠেনি, সেই মুখে কাঁচাপাকা দাড়ির জঙ্গলে অদ্ভুত লাগছিল কাউকে কাউকে, অচেনাও।

মনন মানস কার কতখানি বদলে গেছে জানি না। তবু পাহাড়ের কোল ঘেঁষে তৈরী শতবর্ষ প্রাচীন রেলওয়ে ক্লাবে যখন সবাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে গল্প করছিল হলঘরের ভেতরে, বাইরে, বাগানে, বারান্দায়, তখন আবারো একটা স্কুল যেন উঁকি দিল। বয়সের ভারে ন্যুজ্ব হয়ে পড়া অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকেরা যখন তিন দশক পুরোনো ছাত্রদের ডাকে আসতে লাগলো তখন আসরে সত্যি একটা স্কুল আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছিল। আমার স্কুল, আমাদের স্কুল। প্রিয় শিক্ষককে জড়িয়ে আনন্দে কেউ কেঁদে ফেললো। আহ, শেষবেলায় এসে এই স্মৃতির আড্ডাতে ভাসতে ভাসতে কখন যে সূর্যাস্ত হয়ে যায়, টেরও পাই না। দীর্ঘ দশ ঘন্টা যেন পাড়ি দিল আধঘন্টার দ্রুততায়। হঠাৎ করে ভচকে যাওয়া পা টেনে কষ্টকে সামলে তবু মাঝরাত পার করে দিতে ইচ্ছে করছিল।

বাঁ পায়ের খোঁচা খোঁচা ব্যথাটা সয়েও বলতে পারি একটা অনন্য আনন্দ দিন কেটেছিল ২৪শে ফেব্রুয়ারী ২০১৭। স্মৃতির খাতায় আরো একটি বড় যোগফল।

No comments: