Monday, March 20, 2017

স্বাধীনতার স্বপ্ন বহন করা অসম্পূর্ণ একটি ভ্রমণ [আগরতলা ১৯৬২]

১.
১৯৬২ সালের ফেব্রুয়ারীর প্রথম সপ্তাহ। সূর্যাস্তের বেশ কিছু সময় পর ঢাকা শহরের একটি গলির মুখে লাল নাম্বার প্লেট লাগানো একটি গাড়ি দাঁড়ানো। খানিক পর একটি বাড়ি থেকে দুজন মানুষ বেরিয়ে গাড়ির দিকে হেঁটে আসছে। আবছা আঁধারেও বোঝা যাচ্ছে একজন বেশ দীর্ঘাকায় মজবুত গড়নের, গায়ে চাদর মোড়ানো। অন্যজন একটু ক্ষীণ স্বাস্থ্যের। চাদর মোড়ানো ব্যক্তি বসলেন গাড়ির পেছনের সিটে, সঙ্গী বসলেন চালকের পাশের আসনে।

গাড়ি চলতে শুরু করলো। গন্তব্য কুর্মিটোলা রেলস্টেশন। পেছনের যাত্রী সিটের উপর কাত হয়ে শুয়ে পড়লেন যেন কেউ বাইরে থেকে দেখতে না পায়। গাড়ির জানালা বন্ধ করা আছে। রাস্তায় তেমন গাড়িঘোড়া নেই। কিছুক্ষণ পরে সামনে পড়লো ক্যান্টনমেন্টের চেকপোস্ট। প্রতিটি গাড়িকে এখানে দাঁড় করিয়ে চেক করা হয়।

হেডলাইটের আলোতে সেন্ট্রিকে দেখা যাচ্ছে। গাড়ির গতি কমাতে হবে, সেন্ট্রি গাড়ির দরোজা খুলে চেক করবে। যাত্রীর পরিচয় জিজ্ঞেস করতে পারে। কিন্তু এই গাড়িটা কিছুতেই দেখা চলবে না। গাড়িটা চেক না করার জন্যই সরকারী নাম্বার প্লেটের দরকার ছিল। লাল নেমপ্লেট দেখলে হয়তো সেন্ট্রি গাড়ির দরজা খুলবে না, যাত্রীর পরিচয় নেবে না।  গাড়ির গতি এমনভাবে কমাতে হবে যেন সেন্ট্রি নেমপ্লেটে রং দেখতে পায়। একটুও ভুল করা চলবে না। ভুল হলে যে সর্বনাশ তার ক্ষমা নেই।

চেকপোস্ট এলো। গাড়ির গতি কমলো। সেন্ট্রি এগিয়ে এসে হাত তুললো। প্রতিটি সেকেন্ডের ভগ্নাংশ অনিশ্চিত। চালক যাত্রী সবার শ্বাসরুদ্ধ । কিন্তু না, গাড়িটা থামার আগেই সেই হাতটি আবার নড়ে উঠে ক্লিয়ার সিগন্যাল দিল। রাস্তা পরিষ্কার। আর কোথাও থামতে হবে না। গাড়ি ক্যান্টনমেন্টের গেট  পার হয়ে গেলে চেপে থাকা তিনটা ফুসফুস এতক্ষণে অক্সিজেন পেল। ছুটে চললো গাড়ি কুর্মিটোলা রেল স্টেশনের দিকে।

পেছনের চাদর মুড়ে শুয়ে থাকা আগন্তুক যাত্রী উঠে বসলেন এবার। মোটা ফ্রেমের চশমাটা ঠিক করে নিলেন। সড়ক বাতির আবছা আলোয় যে চেহারাটি ভেসে উঠলো সেটা পাকিস্তান সরকারের জন্য সবচেয়ে অস্বস্তি সৃষ্টিকারীর মুখ। সেই দুর্দমনীয় রাজনৈতিক সিংহের নাম শেখ মুজিবুর রহমান। পূর্ব পাকিস্তানের এই সিংহকে বেশীদিন জেলখানার বাইরে রাখা সরকার নিরাপদ মনে করে না- সেই সরকার আইয়ুব খানের মতো জাদরেল সামরিক উর্দির হলেও।

২.
পাকিস্তানের জন্মলগ্ন থেকেই শেখ মুজিবের সাথে জেলখানার একটা গভীর সম্পর্ক তৈরী হয়ে গিয়েছিল। নিয়মিত জেলখানার আতিথ্য গ্রহন করতে হতো বলে শেখ মুজিবের স্ত্রী একটা ব্যাগ সবসময়ই গুছিয়ে রাখতেন জেলখানার জন্য। এই ঘটনার সময় শেখ মুজিব আইয়ুব খানের প্রথম দফার ১৪ মাস জেলের মেয়াদ পেরিয়ে কিছুদিনের জন্য মুক্ত ছিলেন ৭ ডিসেম্বর ১৯৬০ থেকে। কিন্তু সেই মুক্তি আংশিক। জেলের বাইরে থাকতে পারলেও শহরের বাইরে যাওয়া বারণ তাঁর। অন্তরীণ আদেশ। শুধু তিনি নন, পূর্ব পাকিস্তানের সকল রাজনীতিবিদের উপর নিষেধের খাড়া।  আইয়ুব সরকার নতুন এক সামরিক শাসনতন্ত্র প্রণয়ন করার চেষ্টা করছিল। সেটার প্রতিবাদ উঠার চেষ্টা করতেই পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে আবারো ধরপাকড়। দুদিন আগেই সোহরাওয়ার্দীকে গ্রেফতার করে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছিল করাচী জেলে। আরো অনেককে গ্রেফতার করা হচ্ছিল।  পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কড়া নজরদারীতে আছেন শেখ মুজিবও।

সেই অসম্ভব রুদ্ধশ্বাস সময়েও শেখ মুজিব একটি দুঃসাহসী পরিকল্পনা করলেন। চিরকাল প্রথাগত রাজনৈতিক পন্থায় বিশ্বাসী হলেও এই প্রথম সুভাস বসুর পথে নিজের চিন্তাকে প্রসারিত করলেন। সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে সরকার উৎখাত করে দেশের স্বাধীনতা অর্জন। তখনো পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের চিন্তায় স্বাধীনতা ব্যাপারটি আসেনি। কিন্তু শেখ মুজিবের মাথায় স্বাধীনতা শব্দটি ঢুকে বসে আছে ১৯৪৮ সালের ১১ই মার্চ থেকে।

রাজনীতিবিদদের উপর জেনারেল আইয়ুব খানের নির্বিচার অত্যাচারকে প্রথাগত রাজনীতি দিয়ে মোকাবেলা করা সম্ভব হচ্ছিল না। শত শত নেতা যদি জেল খেটে প্রাণও দেয় তবু মুক্তি আসবে না। তাই শেখ মুজিব মরিয়া হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বিদেশের মাটি থেকে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দেবেন।

কিন্তু এই পরিকল্পনা তিনি খুব গোপনীয়তার সাথে রক্ষা করেছেন। অতি অল্প সংখ্যক নেতা জানতেন। যারা জানতেন তাদের একজন তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। এই পরিকল্পনার সাথে কিছু উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তাও জড়িত ছিলেন। রুহুল কুদ্দুস সিএসপি(স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ক্যাবিনেট সেক্রেটারী), আহমদ ফজলুর রহমান সিএসপি এবং মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী নামে সিলেটের একজন চা বাগান মালিক।

সিদ্ধান্ত হয়েছিল শেখ মুজিব প্রথমে ভারতে পাড়ি দেবেন। তারপর সেখান থেকে লণ্ডনে গিয়ে বিশ্বজনমত গড়ে তুলে আন্দোলনের নেতৃত্ব দেবেন।  ভারতীয় দুতাবাসের সাথে ইতিমধ্যে যোগাযোগ করা হয়েছে রুহুল কুদ্দুসের মাধ্যমে। ভারতের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পেলে শেখ মুজিব আগরতলা যাবেন, সেখানে মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরী আগে থেকেই বেসামরিক কতৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে সব ব্যবস্থা করে রাখবেন। শেখ মুজিব আগরতলা যাবেন কুলাউড়া দিয়ে। এখান থেকে ট্রেনে করে সীমান্ত স্টেশনে পৌছে সেখান থেকে হেঁটে ওপারে যাবেন।

কুলাউড়া যাবার ব্যবস্থা করার জন্য যাকে দায়িত্ব দেয়া হলো তিনি মমিনুল হক খোকা। বঙ্গবন্ধুর ফুপাতো ভাই এবং সার্বক্ষণিক সঙ্গী। তিনি পঞ্চাশের দশক থেকেই তাঁর ব্যক্তিগত এবং পারিবারিক জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে আছেন। একই বাসাতেই থাকেন শেখ মুজিব পরিবারের সাথে। ১৯৫৩ সালে ঢাকায় আরমানিটোলার রজনী বোস লেনে শেখ মুজিব প্রথম তাঁর বাসাতেই উঠেছিলেন পরিবার নিয়ে।

খোকার জন্য ব্যাপারটা সহজ ছিল না। নজরদারী এড়িয়ে কুলাউড়া যেতে হলে ঢাকার বাইরে গিয়ে টঙ্গি থেকে ট্রেন ধরা উচিত। ফুলবাড়িয়ায় তখন কড়া পাহারা। ধরা পড়ে যাবার সম্ভাবনা। ওদিকে টঙ্গি অনেক দূর। তাই ফুলবাড়িয়া এবং টঙ্গিকে বাদ দিয়ে আবার নতুন কৌশল গ্রহন করে কুর্মিটোলা থেকে ট্রেনে ওঠার একটা পরিকল্পনা গ্রহন করা হলো। তবে শান্তিনগরের বাসা থেকে কুর্মিটোলা পর্যন্ত পথটা গাড়িতে যেতে হবে।

কিন্তু গাড়িতে যেতেও একটা সমস্যা আছে। গাড়িটাকে ক্যান্টনমেন্টের ভেতর দিয়ে চেকপোস্ট পার হয়ে যেতে হবে। সুতরাং এমন একটি গাড়ি দরকার যেটা চেক করা হবে না। ভেবে চিন্তে মমিনুল হকের মনে পড়লো হারুন নামের এক বন্ধুর কথা। হারুনের ভগ্নিপতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদের কর্মকর্তা। লাল নাম্বার প্লেটের সরকারী গাড়ি আছে তাঁর। সেই গাড়ির পক্ষে চেকপোস্ট পার হওয়া সহজ। তাঁকে বিশ্বাস করা যায়। হারুনের কাছে চাইতেই গাড়ি সাহায্য পাওয়া গেল।

ঢাকা থেকে কুলাউড়া যাত্রাপথের সহায়তাকারী হিসেবে এই পরিকল্পনার সাথে জড়িত ছিলেন আরো দুজন। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী তারেক চৌধুরী (অভিনেতা সোহেল চৌধুরীর পিতা) এবং মমিনুল হকের বন্ধু রেজা আলী (সিলেটের মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরীর ভাগ্নে)। এরা দুজনই শেখ মুজিবের অকুন্ঠ ভক্ত। বলা হলো নির্ধারিত তারিখে ওই দুজন ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশন থেকে রাতের একটা ট্রেনে প্রথম শ্রেণীর বগিতে চড়ে রওনা দেবেন। কুর্মিটোলা পৌঁছে তারেক ট্রেনের জানালা দিয়ে হাতের টর্চ জ্বালিয়ে সংকেত দেবেন। সেই সংকেত দেখে শেখ মুজিব বুঝবেন কোন বগিতে উঠতে হবে। শেখ মুজিব ওঠার পর সেই বগি থেকে আলী রেজা যাবেন। কুর্মিটোলায় ট্রেন খুব অল্প সময়ের জন্য থামে। খুব দ্রুততার সাথে যাত্রী বিনিময় ঘটাতে হবে। পরিকল্পনা করার পর রুহুল কুদ্দুসের বার্তার অপেক্ষা। রুহুল কুদ্দুস ফোন করে জানাবেন মমিনুল হককে। সরকারী নজরদারীর কারণে শেখ মুজিবের কিছু কিছু যোগাযোগের কাজ মমিনুল হকের মাধ্যমে করা হতো।

কয়েকদিন পর রুহুল কুদ্দুস টেলিফোন করে মমিনুল হককে জানালেন জরুরী ভিত্তিতে দেখা করতে। কুদ্দুস সাহেব থাকতেন ঢাকা কলেজের কাছে ধানমণ্ডির ১ নম্বর সড়কের কাছের একটা বাড়িতে। দেখা করার পর তিনি জানালেন – 'মোয়াজ্জেমের কোন খবর পাচ্ছি না, তার তো আগরতলা গিয়ে শেখ মুজিবকে রিসিভ করার জন্য অপেক্ষা করার কথা। এদিকে দিল্লীর কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে সিগন্যাল এসে গেছে। শেখ মুজিবের অবিলম্বে  আগরতলা পৌঁছানো দরকার'।

খবর পেয়ে শেখ মুজিব দেরী করলেন না। নির্ধারিত দিনে পরিবারের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে একেবারে অনিশ্চিত একটা ভবিষ্যতের পথে পা বাড়ালেন। জীবনে অনেক জেল জুলুমের শিকার হলেও এই প্রথম দেশের বাইরে একটা অনিশ্চয়তাপূর্ণ জীবনের জন্য পা বাড়াচ্ছেন। নিজের জীবনের উপর বাজি ধরা নতুন কিছু না, কিন্তু নতুন একটা স্বপ্ন নিয়ে দেশের স্বাধীনতার স্বপ্নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে এই প্রথম পলাতক জীবনে পা বাড়ানো।

কুর্মিটোলা পৌঁছে জানলেন ট্রেন আসতে আরো কিছুক্ষণ সময়। অপেক্ষার সময়টুকু ভাবনায় ডুবে থাকলেন। জীবনের অনিশ্চয়তার কথা ভেবে কী লাভ। দেশটাই তো অনিশ্চয়তার পথে হাটতে শুরু করেছে ১৯৫৮ সাল থেকেই। তারো আগে পূর্ববর্তী নেতারা একের পর এক ব্যর্থ হয়েছেন, ক্ষমতার কোন্দলে জড়িয়ে পড়েছেন, দল বিভক্ত করেছেন। এইসব বিভক্তি সুযোগ দিয়েছে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকদের। কিন্তু এই দেশ আমাদের, এই দেশ শাসনের অধিকার আমাদেরই বেশী। পশ্চিমের হাত থেকে মুক্তি আমাদের পেতেই হবে। সে মুক্তির জন্য যত রক্ত লাগে দেবো, সবার আগে আমার রক্ত দেবার জন্য প্রস্তুত। মরতে আমি ভয় পাই না। আমার মৃত্যু দিয়েও যদি স্বাধীনতার স্বপ্ন এগিয়ে যায় আমি তাতেই সন্তুষ্ট।

শেখ মুজিবের ভাবনায় ছেদ পড়লো ট্রেনের হুইসেল শুনে।

ট্রেন প্ল্যাটফর্মে আসার আগেই তিনি গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়ালেন। শীতের রাত হলেও উত্তেজনায় শরীর উষ্ণ হয়ে আছে। তবু চাদরটা ভালো করে জড়িয়ে নিলেন নিরাপত্তার স্বার্থে। ট্রেন পুরোপুরি থামার আগেই একটি বগির জানালা দিয়ে টর্চের আলো দেখা গেল। তিনি সেদিকে এগিয়ে গেলেন। সোজা গিয়ে ওই বগিতে উঠে পড়লেন। প্রায় সাথে সাথে ওই বগি থেকে নেমে এলেন একজন। তিনি আলী রেজা। সবকিছু পরিকল্পনামাফিক ঘটলো। ট্রেন ছেড়ে দিল।

কিন্তু সপ্তাহখানেক পর একদিন সেহরীর সময় শেখ মুজিবের বাড়ির দরজায় কড়া নাড়লো কেউ। কড়া নাড়া শুনে বাড়ির বাসিন্দারা আতংকিত হলো। বাড়িতে বেগম মুজিব আর ছোট ছেলেমেয়েরা বাদে পুরুষ বলতে মমিনুল হক খোকা। তাঁকে শেখ মুজিব পরিবারকে দেখাশোনা করার দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন। এত রাতে পুলিশ ছাড়া আর কেউ হতে পারে না। বেগম মুজিব আর খোকা সেহরী খাওয়ার জন্য উঠেছিলেন খানিক আগে। আরো জোরে কড়া নাড়া হতে খোকা ভয়ে ভয়ে দরোজা ফাঁক করে চমকে উঠে বললেন- মিঞা ভাই! বেগম মুজিব এগিয়ে এসে দেখলেন চাদর মোড়ানো পাঞ্জাবি লুঙ্গি পরা উষ্কোখুষ্কো চুল নিয়ে শেখ মুজিব দাঁড়িয়ে আছেন।

ঘরে ঢুকেই বেগম মুজিবকে বললেন, 'আমাকে খেতে দাও আগে, আমি খুব ক্লান্ত, সারা পথ হেঁটে এসেছি'।

খাওয়াদাওয়া সেরে সংক্ষেপে সব কথা খুলে বললেন। সীমান্ত পার হতেই সমস্যায় পড়ে গিয়েছিলেন শেখ মুজিব। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী তাঁকে আটক করেছিল। কথা ছিল মোয়াজ্জেম হোসেন চৌধুরীর ভারতীয় কতৃপক্ষের সাথে সব ঠিক করে রাখবেন। কিন্তু তিনি সেটা করেননি কোন কারণে। যদিও সব খুলে বলার পর ভারতীয়রা কোন অসৌজন্যমূলক আচরণ করেনি, তবু শেখ মুজিবকে স্বাধীনতা আন্দোলন পরিচালনার জন্য সেখান থেকে লণ্ডন যেতে দিতে রাজী হয়নি। ভারতীয় কতৃপক্ষ বলেছিল আগরতলা থেকেই পাকিস্তান বিরোধী প্রচারণা করতে। শেখ মুজিব রাজী হননি তাতে এবং ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।

৩.
আরো ছয় বছর পরে ১৯৬৮ সালে যখন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে বহুল আলোচিত 'আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা' দায়ের করা হয়, সেই মামলার নামের সাথে 'আগরতলা' শব্দটি যুক্ত হবার কারণ ছিল বঙ্গবন্ধুর সেই পরিকল্পিত অসমাপ্ত আগরতলা অভিযান। যে ভ্রমণ পাকিস্তানী আগ্রাসী শাসকের কবল থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথ খুঁজতে বেরিয়েছিল।


তথ্যসুত্র :
১. অস্তরাগে স্মৃতি সমুজ্জল : মমিনুল হক খোকা
২. বঙ্গবন্ধুর জীবন ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মুনতাসির মামুন, দৈনিক জনকন্ঠ ১৭ মার্চ ২০১২
৩. India, Mujibur Rahman, Bangladesh Liberation & Pakistan : Sashanka S. Banerjee

No comments: