বহুদূর এক গ্যালাক্সি থেকে তাঁর দূরবীনে ধরা পড়ল ছায়াপথ গ্যালাক্সির জীবাণুসম নক্ষত্রের ক্ষুদে একটা গ্রহ।
তিনি জানেন না সৌরজগতের নিন্মবর্গীয় অঞ্চলে অবস্থিত সেই নীল গ্রহের নাম পৃথিবী। সেই গ্রহের ভেতরে আরো কয়েকটা গ্রহের সৃষ্টি হয়েছে মহাসাগরের বিভাজনে। এশিয়া একটা গ্রহ, ইউরোপ- আমেরিকা একটা গ্রহ, আফ্রিকা আরেকটা গ্রহ। একেকটা গ্রহে একেক নিয়ম। এক গ্রহের নিয়ম অন্য গ্রহে খাটে না। এক গ্রহে যেটা মানবতা, অন্য গ্রহে সেটা মানবঘাতকতা। এক গ্রহে যেটা ক্ষুধা, অন্য গ্রহে সেটা তামাশা।
এই গ্রহগুলোতে অনেকগুলো বিচিত্র উপগ্রহ আছে যেমন কঙ্গো, সুদান, ইসরায়েল, বার্মা, আফগানিস্তান, গাজা, মালি ইত্যাদি (আরো অনেক)। এইসব উপগ্রহের নিয়মকানুন আবার বাকী উপগ্রহের সাথে মেলে না। অন্য দেশে যেগুলোকে বলা হয় মানবাধিকার, ওই দেশগুলোতে সেটা মানবঘাতিকার। এখানে নিয়মিত খু*ন*খারাবি চালানোই রীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।
আবার গ্রহ সমাজের মধ্যে বড় বড় কয়েকটা মহাগ্রহ আছে যেমন আমেরিকা, চীন, রাশিয়া। তাদের হাত অনেক লম্বা। অক্টোপাশের মতো অনেকগুলো শূড় আছে। শূড়গুলো এত বিশাল যে তারা যে কোন গ্রহ উপগ্রহ গ্রাস করে ফেলার ক্ষমতা রাখে।
তো….. এইসব গ্রহ উপগ্রহে মানুষ নামের কয়েকশো কোটির একটা প্রজাতি রাজত্ব করে, যারা প্রায়ই স্বজাতির ধ্বংস ডেকে আনে। সেটাকে আবার আত্মরক্ষার অধিকার বলে প্রচার করে। সেই নীল গ্রহের ধূসর পর্দায় প্রায়ই দেখা যায়, একদল দুর্বল ক্ষুধার্ত অনাহারী শিশু খাদ্য সংগ্রহ করছে, আরেকদল বৈরি পোশাক পরা মানবঘাতি তাদের ওপর ধু(গু)লিবর্ষণ করছে।
দূরবীনে চোখ রেখে যিনি সেই নীল গ্রহের উজবুক নিয়মকানুনের বিষয়টা বোঝার চেষ্টা করছিলেন তিনি বহুদূর এক গ্যালাক্সির ভিন্ন প্রজাতির এক গবেষক। ওই গ্যালাক্সির হিসেবে মাত্র এক দিবস (এই পৃথিবীর হিসেবে এক শতাব্দী) এই গ্রহের নিয়মকানুন বোঝার চেষ্টা করতে গিয়ে বেচারা একদম বেদিশা হয়ে পড়ল এবং বোঝার সকল আশা জলাঞ্জলি দিয়ে অন্য গ্রহের খোঁজে দূরবীন ঘুরিয়ে নিল।
তিনি অবশ্য গাঙ্গেয় পলি জমে গড়ে ওঠা বাংলাদেশ নামক দেশটার দিকে কখনো দূরবীনের আলো ফেলেননি, তাহলে চেয়ার উল্টে অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারতেন। যেখানে শীর্ষ চোরেরা দেশের নীতি নির্ধারক হয়। স্বেচ্ছাচারিতাকে গণতন্ত্র বলে মনে করা হয়। যুগ যুগ ধরে ক্ষমতাবানদের অরাজকতা ও লুটপাটের অধিকার স্বাভাবিক নিয়ম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে।
তিনি আরো খেয়াল করলে দেখতে পেতেন, ওই দেশে কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু তাদের ঘরে কোনো আয়না নেই। সবাই শুধু অন্যের চেহারা দেখে, নিজের চেহারা কেউ দেখে না।
No comments:
Post a Comment