কোথাও না কোথাও আমাদের থামতে হবে। জীবনের গতির ধর্মই তেমন। থামার সময়টা কতখানি দীর্ঘ তার উপর নির্ভর করে জীবন মৃত্যু। যদি অনন্তকাল থেমে থাকে কোন স্টেশানে মনে করতে হবে ওটাই ছিল তার গন্তব্য। একেকটি স্টেশান একেকটি ক্ষণ, হতে পারে কোন একটি বছর কিংবা মাস অথবা দিবস রজনী। জীবনের যাত্রাপথে শত শত হাজার হাজার স্টেশান পেরিয়ে আমরা অনির্ধারিত কোন স্টেশনে গিয়ে চিরতরে থেমে যাবো। প্রত্যেকটা জীবিত প্রাণীই তাই। সেই শেষ ষ্টেশনটি আসার আগে আমরা যে স্টেশনগুলো ফেলে এসেছি তার মধ্যে কোন কোনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ন স্টেশন, যেখানে আমরা অধিকসময় পার করেছি অনেক আনন্দ নিয়ে, আবার কোন কোন স্টেশান ছিল যন্ত্রনাদায়ক। সে কথা আমরা ভাবতে চাই না। কোন কোন ষ্টেশানে আমাদের যাত্রাবিরতি ছিল একেবারেই অনির্ধারিত অনাকাংখিত।
তোমার সাথে আমার যে স্টেশনে দেখা সেটা আমার জন্য নির্ধারিত স্টেশন ছিল না। তবু আমি তোমাকে দেখে থমকে গিয়েছিলাম এবং নেমে পড়েছিলাম। যে দরোজায় কোন গার্ড ছিল না সেই দরোজা দিয়েই নেমেছিলাম। তুমি তোমার ট্রেন মিস করে অনির্ধারিত কোন গন্তব্যের আশায় বসে ছিলে। যেই আমি স্টেশানে নামলাম তুমি হাত বাড়িয়ে দিলে। আমরা দুজন অনির্ধারিত এক সম্মেলনে মিলিত হলাম। তুমি বললে অপ্রত্যাশিত কিন্তু বহুল কাংখিত। আমি বললাম, অপ্রত্যাশিত কিন্তু অনাহুত নয়। আমাদের ইচ্ছে করছিলনা আর কোন ট্রেনে চড়ে আর কোন গন্তব্যে পৌঁছাতে। কিন্তু আমার টিকেট রয়ে গেছে পকেটে, যে টিকেটে আমি এই ষ্টেশানে অবৈধ। আমাকে দ্রুত ফিরতে হবে। কিন্তু তোমাকে একা ফেলে আমি ফিরতে পারছিলাম না। আমার এই দ্বিধাদ্বন্দ্ব তোমাকে আহত করেছে হয়তো। তুমি নীরবে আমার হাত ছেড়ে দিলে। বেদনা লুকিয়ে বললে আমাকে চলে যেতে। আমি তোমার আবেদনে ব্যাথাতুর হলাম। উঠে পড়লাম ট্রেনে আবার। তোমাকে বিদায় জানাতে জানালা দিয়ে তাকালাম। দেখলাম তুমি মুখ ফিরিয়ে বসে আছো যেন আমি কোনকালেই এই ষ্টেশানে নামিনি।
No comments:
Post a Comment