Saturday, February 25, 2012

১৪ ফেব্রুয়ারী: থুথু দিন, বিশ্ববেহায়ার ফুলে

আগুন ঝরানো ফাগুন দিন পেরিয়ে আজ নাকি ভালোবাসা দিবস!! প্রিয়জনের সাথে ফুল প্রেম মিষ্টি উপহার বিনিময়ের মধুর সময়!! শুধু কি মধু? তেতো কিছু নেই? আছে। সেই তেতো কথা বলি। ১৯৮৩ সালের এই দিনে লেজেহোমো এরশাদের টিয়ার গ্যাস-রাইফেল-বন্দুকের ভালোবাসায় রক্তাক্ত হয়েছিল ঢাকার রাজপথ। বলি হয়েছিল কমসে এক ডজন প্রাণ।

"১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী মিছিল করে স্মারকলিপি পেশ করতে সচিবালয়ের দিকে যায়। মিছিলটি যখন হাইকোর্ট এলাকায় পৌঁছেছে তখন মিছিলের ওপর অতর্কিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে পুলিশ বাহিনী। নিরস্ত্র ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর পুলিশ লাঠি, টিয়ারগ্যাস, জল কামান ব্যবহার করেই ক্ষান্ত হয়নি, গুলিও চালায়। গোটা এলাকা রণক্ষেত্রে রূপান্তরিত হয়। একসময় ছাত্ররা আশ্রয় নেয় শিশু একাডেমীতে। সেখানে তখন শিশুদের একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলছিলো। পুলিশ সেখানেও ঢুকে যায় অস্ত্রহাতে। কোমলমতি শিশুরাও সেদিন রক্ষা পায়নি এরশাদের পেটোয়া বাহিনীর হাত থেকে। প্রায় সারাদিনব্যাপী এই অসম সংঘর্ষে জাফর, জয়নাল, দীপালী সাহা, আইয়ুব, ফারুক, কাঞ্চন প্রমুখ নিহত হন। সব মিলিয়ে ডজনের মতো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।"

সেই কবিলুল বিশ্ববেহায়া হোমো এরশাদ এখনো জীবিত। প্রেম ভালোবাসায় কতোটা সক্রিয় না জানলেও রাজনীতির এক্কা দোক্কার কোলে চড়ে সক্রিয় আছে, ভালো আছে, সুখে আছে বলে জানি। সেই জানাটা বড় লজ্জার।

তবে এরশাদকে নিয়ে যারা নীতিহীন রাজনৈতিক ঐক্য গড়েছে তাদের লজ্জা নেই। যারা একসময় এরশাদকে থুথু দিয়েছিল তারাই গত বিশ বছরে এরশাদের সাথে একই মঞ্চে গলাগলি করেছে, করছে, করবে।

কেবল আমাদেরই লজ্জা। জাফর জয়নাল আমাদের দিকে তাকয়ে বিদ্রুপের হাসি হাসছে। আমাদের প্রতিশোধ নেয়া হয়নি। তাই আমরা সকল প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্রসমাজ যুগে যুগে এরশাদকে থুথু দিয়ে আপ্যায়ন করে যাই।

ভালোবাসার দিনে গর্বিত প্রেমিক এরশাদের ফুল নেবার মতো কোন নারী অবশিষ্ট আছে কি? যদি থেকে থাকেন- হে অজানা অদেখা নারী, একটি আবেদন শুনুন। আপনি এরশাদের ফুল নিয়ে তাতে অন্ততঃ এক দলা থুথুতে ভরিয়ে দিন টবে সাজাবার আগে। ওই সামান্য ঘেন্নাটুকুতেও জাফর, জয়নাল, দীপালী সাহা সহ এরশাদের পেটোয়া বাহিনীর হাতে নিহত আমাদের সকল পূর্বসূরী ছাত্রদের আত্মা খানিকটা শান্তি পাবে।

No comments: