Sunday, January 1, 2012

একটি অনুমিত ষড়যন্ত্র

সামান্য একটা বোতামের কাছে হেরে গিয়েছিল আবুল হোসেন।

গত অর্ধশতকে তার এরকম ঘটনা ঘটেনি। ঘটনাটা একবার ঘটলে দুর্ঘটনা বলা যেতো। কিন্তু পরপর তিনবার ঘটার পর মনে হলো এটা দুর্ঘটনা নয়, নিশ্চিত ষড়যন্ত্র।

প্রথমবার যখন বোতামটা ছিঁড়লো তখন সে ডেস্কের সামনে। বসের সাথে কথা বলে চেয়ারে বসামাত্র ফটাস্। কপাল! এটা কিরকম বেইজ্জতি ঘটনা হলো! তবু কপালগুনেই রুমে আর কেউ ছিল না। খুলে পড়া বোতামটা তাড়াতাড়ি পকেটে নিয়ে একটা ফিতে দিয়ে প্যান্টটার রফা করে সেদিনকার মতো বাড়ি ফিরলো।

কিছুদিন পর আবারো ঘটলো একই ঘটনা। এবার সে লিফটে। ভাগ্যিস এবারও সাথে আর কেউ ছিল না। সহকর্মীদের দৃষ্টি এড়িয়ে রুমে ঢুকে দরোজা বন্ধ করে ফিতা খুঁজতে লাগলো। কিন্তু ড্রয়ারে কোন ফিতা নাই, টেবিলে কেবল একটা ফাইল। এই ফাইল থেকে যা কামাবার সব কামানো শেষ। ওটার লালফিতাটা খুলে লাগিয়ে নিল কেউ রুমে আসার আগে।

তৃতীয় ঘটনাটা ঘটে গেলো টয়লেটের অন্দরে। এবার বোতামটা সরাসরি কমোডের ভেতর ডুব মেরে চার চোখ মেলে তাকিয়ে হাসতে থাকলো। এখন উপায়? এই বোতাম তো আর ফেরত নেয়া যায় না। চোরের মতো রুমে ফিরে দেখে টেবিলে কোন ফাইলও নাই আজকে। কোথাও একটা সুতোর চিহ্ন নাই এই চকচকে রুমে।

হঠাৎ মনে পড়লো স্কুলে বয়সের একটা বুদ্ধি.........ড্রয়ার খুলে স্ট্যাবলার নিয়ে তিনটা পিন মেরে বন্ধ করে দিল প্যান্টের জানালা। আপাততঃ বেইজ্জতি থেকে রক্ষা পাওয়া গেল। কিন্তু বাসায় যাবার আগ পর্যন্ত টয়লেটে যাওয়া বন্ধ।

সে-ই শেষ। দুর্ঘটনাটা চতুর্থবার ঘটার সুযোগ পেল না। কারণ পরদিন থেকে আবুল হোসেন প্যান্টের সাথে স্থায়ীভাবে বেল্ট পরতে শুরু করে। তবু সামান্য একটা বোতামের কাছে হেরে যাওয়ার অনুদঘাটিত রহস্যটা দীর্ঘদিন তার মনোবেদনা হয়ে জেগে রইল।

No comments: