Tuesday, February 28, 2017
Inglourious Basterds মগজে রক্তে স্নায়ুতে তোলপাড় করা হিম ঝড়
যে সিনেমায় ভ্রমণের আনন্দ
সেই সাথে আমার আছে আরো একটি বিশেষ কারণ। সিনেমা দেখার আনন্দ আমার কাছে শুধু একটি ঘটনা বা গল্পের দৃশ্যরূপ অবলোকন নয়। চিত্রায়িত দৃশ্যাবলীর ভূগোলেরও একটা ভূমিকা আছে তাতে। কোন কোন সিনেমার গল্প ভালো না হলেও তার দৃশ্যায়ন অসাধারণ হতে দেখেছি। যদি সেই দৃশ্য অদেখো কোন ভূগোলের চিত্র ধারণ করে তাহলে গল্পটি যাই হোক সেই সিনেমা আমি দেখবো। আমার কাছে প্রতিটি নতুন সিনেমা শুধু একটি গল্প শোনা নয়, একটি নতুন পৃথিবীও দেখা। অদেখা ভূখণ্ডে চিত্রিত নির্মিত অখাদ্য চলচ্চিত্রও আমি দেখতে রাজী যদি তার ক্যামেরার কাজ ভালো হয়, যদি এই গ্রহের একটি নতুন দৃশ্য আমার চোখের সামনে উপস্থিত করে।
Saturday, February 18, 2017
দুটি রাবীন্দ্রিক অনুভূতি
২. প্রবাসী মাত্রেই হয়তো এমন দেশপ্রেমে ভেসে যায় না, কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে দূরত্ব মানুষের ভেতরকার চেতনাকে অনেক বেশী স্পষ্ট করে তোলে যা নৈকট্যের কাছে দূর্লভ।
Tuesday, February 14, 2017
Antarctica: A Year on Ice.... সিনেমা নয়, দুর্লভ এক অভিজ্ঞতা সঞ্চয়
Monday, February 13, 2017
টুকরো একাত্তর
পাকিস্তানী সৈন্যরা ডাক্তার নার্স রোগীসহ ৫৯ জনকে পাটের দড়িতে বেঁধে একসাথে গুলি করে হত্যা করেছিল হাসপাতালের ভেতরেই। কাঁধে গুলি খেয়েও অল্পের জন্য বেঁচে যান আলম। তিনি বলছিলেন-
- আমি নুরুন নাহার আপার কথা ভুলতে পারি না। পাকিস্তানীরা গুলি করার আগ মুহূর্তে সোজা সামনের দিকে তাকিয়ে তিনি চিৎকার করে বলে উঠেছিলেন - "জয় বাংলা!"
নুরুন নাহার ওই হাসপাতালের একজন নার্স ছিলেন।
----------------------------------------------------------------------------------
Monday, February 6, 2017
ভ্রমণপিপাসু বাঙালী: শতবর্ষ আগে এবং শতবর্ষ পরে
আমাকে অনেকেই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন, "তুমি য়ুরোপে ভ্রমণ করিতে যাইতেছে কেন।' এ কথার কী জবাব দিব ভাবিয়া পাই না। ভ্রমণ করাই ভ্রমণ করিতে যাইবার উদ্দেশ্য, এমন একটা সরল উত্তর যদি দিই তবে প্রশ্নকর্তারা নিশ্চয় মনে করিবেন কথাটাকে নিতান্ত হাল্কারকম করিয়া উড়াইয়া দিলাম। ফলাফল বিচার করিয়া লাভ-লোকসানের হিসাব না ধরিয়া দিতে পারিলে, মানুষকে ঠাণ্ডা করা যায় না।
প্রয়োজন না থাকিলে মানুষ অকস্মাৎ কেন বাহিরে যাইবে, এ প্রশ্নটা আমাদের দেশেই সম্ভব। বাহিরে যাইবার ইচ্ছাটাই যে মানুষের স্বভাবসিদ্ধ, এ কথাটা আমরা একেবারে ভুলিয়া গিয়াছি। কেবলমাত্র ঘর আমাদিগকে এত বাঁধনে এমন করিয়া বাঁধিয়াছে, চৌকাঠের বাহিরে পা বাড়াইবার সময় আমাদের এত অযাত্রা, এত অবেলা, এত হাঁচি- টিক্টিকি, এত অশ্রুপাত যে, বাহির আমাদের পক্ষে অত্যন্তই বাহির হইয়া পড়িয়াছে; ঘরের সঙ্গে তাহার সম্বন্ধ অত্যন্ত বিচ্ছিন্ন হইয়াছে। আত্মীয়মণ্ডলী আমাদের দেশে এত নীরন্ধ্র নিবিড় যে, পরের মতো পর আমাদের কাছে আর-কিছুই নাই। এইজন্যই অল্প সময়ের জন্যও বাহির হইতে হইলেও সকলের কাছে আমাদের এত বেশি জবাবদিহি করিতে হয়। বাঁধা থাকিয়া থাকিয়া আমাদের ডানা এমনি বদ্ধ হইয়া গিয়াছে যে, উড়িবার আনন্দ যে একটা আনন্দ, এ কথাটা আমাদের দেশের বিশ্বাসযোগ্য নহে।
অল্প বয়সে যখন বিদেশে গিয়াছিলাম তখন তাহার মধ্যে একটা আর্থিক উদ্দেশ্য ছিল, সিভিল সার্ভিসে প্রবেশের বা বারিস্টার হাওয়ার চেষ্টা একটা ভালো কৈফিয়ত-- কিন্তু, বাহান্ন বৎসর বয়সে সে কৈফিয়ত খাটে না, এখন কোনো পারমার্থিক উদ্দেশ্যের দোহাই দিতে হইবে।
আধ্যাত্মিক উন্নতির জন্য ভ্রমণের প্রয়োজন আছে, এ কথাটা আমাদের দেশের লোকেরা মানিয়া থাকে। সেইজন্য কেহ কেহ কল্পনা করিতেছেন, এ বয়সে আমার যাত্রার উদ্দেশ্য তাহাই। এইজন্য তাঁহারা আশ্চর্য হইতেছেন, সে উদ্দেশ্য য়ুরোপে সাধিত হইবে কী করিয়া। এই ভারতবর্ষের তীর্থে ঘুরিয়া এখানকার সাধু-সাধকদের সঙ্গ লাভ করাই একমাত্র মুক্তির উপায়।
আমি গোড়াতেই বলিয়া রাখিতেছি, কেবলমাত্র বাহির হইয়া পড়াই আমার উদ্দেশ্য। ভাগ্যক্রমে পৃথিবীতে আসিয়াছি, পৃথিবীর সঙ্গে পরিচয় যথাসম্ভব সম্পূর্ণ করিয়া যাইব, ইহাই আমার পক্ষে যথেষ্ট। দুইটা চক্ষু পাইয়াছি, সেই দুটা চক্ষু বিরাটকে যত দিক দিয়া যত বিচিত্র করিয়া দেখিবে ততই সার্থক হইবে।
তবু এ কথাও আমাকে স্বীকার করিতে হইবে যে, লাভের প্রতিও আমার লোভ আছে; কেবল সুখ নহে, এই ভ্রমণের সংকল্পের মধ্যে প্রয়োজনসাধনেরও একটা ইচ্ছা গভীরভাবে লুকানো রহিয়াছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'যাত্রার পূর্বাপর' প্রবন্ধের এই অংশটিতে যা লিখেছিলেন এদেশে তার বাস্তবতা এখনো সততই বিদ্যমান। অথচ এই যুগে লক্ষ লক্ষ বাঙালী নানান কাজে বিশ্বজগত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। তবু বৈষয়িক সচেতন মানুষের চরিত্র একশো বছর আগে যা ছিল তা থেকে খুব বেশী আগায়নি। রবীন্দ্রনাথ যে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন আমরা এখনো সেই প্রশ্নের সম্মুখীন হই যদি না ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ার একটি 'কার্যকর' কারণ দর্শানো না হয়। কার্যকর শব্দটাকে বিশ্বাসযোগ্য শব্দ দিয়ে প্রতিস্থাপন করা যায় অনায়াসে। বিদেশ এ ভ্রমণ কেবলই একটি ভ্রমণ অথবা বিশ্বজগতের রূপরস দেখাটাই একটা কারণ হতে পারে তা এখনো অধিকাংশ বাঙালী মানতে নারাজ। তাই অন্যন্য কার্যকর কিংবা বিশ্বাসযোগ্য কারণকে উপস্থাপন করতে হয় অনেক ক্ষেত্রেই।
তারেক অনুদের মতো মুষ্টিমেয় কজন বিশ্বপরিব্রাজকের ক্ষেত্রে এই বাস্তবতা না খাটলেও সাধারন আম জনতা এখনো বিদেশ ভ্রমণ করে চাকরী, ব্যবসা, শিক্ষা কিংবা চিকিৎসার জন্য। শুধু ভ্রমণের উদ্দেশ্যে ভ্রমণের সামর্থ্য সবার নেই। কিন্তু আমার চেনা জানাদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে তাদের ক্ষেত্রেও দেখি কেবল আনন্দের জন্য, পৃথিবীর রূপ বৈচিত্র্যকে নিজের চোখে দেখার জন্য ভ্রমণ করে না। সাথে একট 'কাজ' নিয়ে যেতে হয়। কাজের অজুহাতেই অল্পকিছু ঘুরাঘুরি হয়, সেই ঘুরাঘুরির বিরাট একটা অংশ জুড়ে থাকে কেনাকাটা। অধিকাংশ বাঙালীর গন্তব্য কাছের দেশ ভারত, নেপাল, থাইল্যাণ্ড, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর। সেই দেশগুলো ভ্রমণ গন্তব্যের তালিকায় অতি অবশ্যই প্রকৃতির চেয়ে শপিং মলই প্রাধান্য পায়। কোন দেশে কী কিনতে পাওয়া যায় কিংবা কোন শহরে 'নাইট লাইফ' ভালো সেটা যাত্রার পূর্বে প্রধান অনুসন্ধিৎসু বিষয়।
বাঙালী প্রধানতঃ একটি কার্যকর জাতি। অকাজে কোথাও ভ্রমণ করে না। অপ্রয়োজনে সময় নষ্ট করে না।
Sunday, February 5, 2017
শৈশবের শীতঘ্রাণ
মিছিলে যোগ দেবার আগেই পুলিশের হাতকড়া। প্রথম কলেজ দিবসের সূচনা সামরিক শাসনের আপ্যায়নে। বড় হওয়া সহজ নয়, বুঝে যাই। প্রবাসী পিতার অবর্তমানে বড় হতে হতে শিখে যাওয়া হয় আরো অনেক কিছু। কলেজে কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কঠিন জীবনে। কঠিন জীবন, কঠিন যাপন। কঠিনেরে ভালোবেসে আরো বড় হওয়া। অনিশ্চিতের চোরাবালিতে ডুব দিয়ে সকাল দুপুর রাত। সহজ ছিল না বড় হওয়া। কবিতা আসে, কবিতা যায়। প্রেম আসে, ফসকে যায়। দীর্ঘ হয় অপেক্ষার দিনরাত। কত বড় হতে হবে কিছুই জানা হয় না। দশটায় বাড়ি ফিরে পড়ায় আমার মন বসে না কাঁঠাল চাঁপার গন্ধে। ভালো হতে চাই না, খারাপ হতে পারি না। বই ডাকে, বই আসে, বই আকড়ে ধরে, পিছু নেয়। কার প্রেমে পড়ে থাকি জানি না। কবিতা আসে, কবিতা যায়। যে ডাকে, তাকে বুঝি না। সেও বোঝে কিনা জানি না। ধোঁয়াশা কালচক্র। কালের চাকায় খাবি খেতে খেতে একদিন মুক্তি আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ ট্রেন যেদিন ক্যাম্পাস স্টেশান ছেড়ে আসে, তখন জানালা দিয়ে সবচেয়ে সুখী দীর্ঘশ্বাস ছিল, স্বাধীনতার। আর কোন পরীক্ষা বাকী নেই।