অবশেষে The Revenant দেখে ফেললাম কাল রাতে। ডি'ক্যাপ্রিও আর টম হার্ডি দুজনই অসাধারণ করেছে। চিত্রায়নগুলো এত অসাধারণ হয়েছে যে কিছু কিছু ল্যাণ্ডস্কেপ বাঁধিয়ে রাখার মতো। এই কাহিনী নিয়ে আরেকটি ছবি হয়েছিল ১৯৭১ সালে Man in the Wilderness নামে। Hugh Glass এর সত্য ঘটনার উপর ভিত্তি করে সিনেমাটি বানানো হয়েছে। আগাগোড়া থ্রিলিং সিনেমা! ছোট স্ক্রিনেই গায়ে কাঁটা দেয়, বড় পর্দায় নিশ্চয়ই আরো ভয়াবহ বাস্তবানুগ অনুভুতি হবে। ভালুকের আক্রমনে মারাত্মক আহত একজন মানুষ প্রায় পঙ্গু অবস্থায় হামাগুড়ি দিয়ে ছয় সপ্তাহে ২০০ মাইল বিপদ সংকুল পথ পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে পেরেছে এটা সত্যিই অবিশ্বাস্য একটা ঘটনা। কিন্তু ঘটনাটি সত্যি ঘটেছিল ১৮২৩ সালে এবং Hugh Glass বেঁচেছিল ১৮৩৩ সাল পর্যন্ত।
তবে সিনেমায় কিছু ফাঁক ছিল, হলিউডের সিনেমায় যা সচরাচর থাকে। যেমন-১) ২০০ মাইলের বিপদ সংকুল পথের প্রায় পুরোটাই বরফাচ্ছাদিত দেখানো হয়েছে। অন্যন্য প্রতিকূলতার সাথে প্রচণ্ড তুষারপাত, বরফগলা নদী, বরফজমা পর্বত ইত্যাদি পাড়ি দিতে হচ্ছে Glassকে। প্রায় সমস্ত যাত্রাই বরফের মধ্য দিয়ে। বাস্তবে এরকম হয়েছিল কিনা জানা সম্ভব না। কিন্তু এতটা বরফাচ্ছাদিত দেখানোর মানে Glass এর যাত্রাকে যতটা সম্ভব দুর্গম করে উপস্থাপন করা। যে অবস্থায় একজন মানুষের পক্ষে বেঁচে থাকা অসম্ভব বলা চলে। বেঁচে থাকার আরো অনেক প্রতিকূল সমস্যা আছে, শুধু বরফকেই বেছে নেয়া হয়েছে কেন, এই প্রশ্ন দর্শকের মনে জাগতেই পারে।
৩) ভালুকের আক্রমনের যে ধরণ দেখানো হয়েছে তাতে Glass এর সমস্ত শরীর চুরমার হয়ে গেছে। তার গায়ের উপর উঠে ভালুকটাকে কুন্দন করতে দেখা গেছে। তাতে মেরুদণ্ডের হাড় চুরচুর হয়ে যাবার কথা। কিন্তু দেখা গেছে সে বিনা চিকিৎসাতেই কয়েকদিন বাদে হামাগুড়ি ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে। লাঠি দিয়ে হেটে পর্বত পাড়ি দিচ্ছে।
৪) Glass এর যাত্রাপথ নিশ্চয়ই খুব দুর্গম ছিল। কিন্তু সিনেমায় সেই দুর্গমতাকে এত বেশী কঠিন করে দেখানো হয় যেটা মানুষের পক্ষে অবিশ্বাস্য। যেমন হামাগুড়ি দিয়ে সে একটা পাহাড়ের খাড়া চুড়া থেকে দেখতে পায় অদূরে একটা নদী বয়ে যাচ্ছে কলকল করে। পাহাড়টা একদম খাড়া। ওখান থেকে নামার কোন পথ দেখায়নি সিনেমাতে। কিন্তু পরের দৃশ্যে নায়ককে দেখা গেল নদীতে হামাগুড়ি দিয়ে জল পান করতে।
৪) Glass এর যাত্রাপথ নিশ্চয়ই খুব দুর্গম ছিল। কিন্তু সিনেমায় সেই দুর্গমতাকে এত বেশী কঠিন করে দেখানো হয় যেটা মানুষের পক্ষে অবিশ্বাস্য। যেমন হামাগুড়ি দিয়ে সে একটা পাহাড়ের খাড়া চুড়া থেকে দেখতে পায় অদূরে একটা নদী বয়ে যাচ্ছে কলকল করে। পাহাড়টা একদম খাড়া। ওখান থেকে নামার কোন পথ দেখায়নি সিনেমাতে। কিন্তু পরের দৃশ্যে নায়ককে দেখা গেল নদীতে হামাগুড়ি দিয়ে জল পান করতে।
৫) হলিউডি থ্রিলার সিনেমার একটা সমস্যা হলো তারা খাড়া বিপদের উপর বিপদ হাজির করতে থাকে। একটা সামাল দিতে না দিতেই আরেকটা এসে হাজির। মাঝে কোন গ্যাপ থাকে না। এতটা ধারাবাহিক আক্রমন সামাল দেয়া শুধু সিনেমার নায়কদের পক্ষেই সম্ভব। আগাগোড়া টেনশানে রেখে সিনেমা শেষ করতে হবে। তবেই বক্স অফিস হিট করবে। সম্ভবত এই চিন্তা থেকেই সিনেমাগুলো এমন ধারায় তৈরী হয়।
ছবিটা অস্কার পেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পেলে আশ্চর্য হবো না। কিন্তু আমার মতে এই ছবির অস্কার পাওয়া উচিত না। এই ছবি দেখতে গিয়ে মনে পড়লো Into the Wild ছবিটার কথা। সেই এক অসম্ভব মর্মান্তিক, অসাধারণ সুন্দর নির্মান। ওই ছবির তুলনায় এটি অনেক কম বিশ্বাসযোগ্য।
আমি Into the Wild কে ১০ এ ৮ দিলে The Revenant কে দেবো ১০ এ ৬।
আমি Into the Wild কে ১০ এ ৮ দিলে The Revenant কে দেবো ১০ এ ৬।
No comments:
Post a Comment