অবসাদ। অনেকদিন হয়ে গেল। ক্লান্ত, অবসন্ন উৎসাহহীনতা। অবসাদ রাজ্যে অবসর। গলায় গলায় জ্বরব্যথা সন্ধ্যাকালীন অস্বস্তি। ঘড়িটা সরে গেছে দক্ষিনে। আগের মতো চট করে সময়ের প্রয়োজন হয় না। অখণ্ড অবসরে কিছুকাল। সময় এখানে স্থির। দক্ষিন দেয়ালে অস্পষ্ট ঘড়ি। নতুন দেয়ালের চলচ্ছবি মুগ্ধতা হারিয়ে ঝুলে থাকে একা। একদিন দুপুরবেলা, একেকদিন বিষন্ন সন্ধ্যা। মেঘের দল মিছিল করে ঝিরিঝিরি পাতায় আলোড়ন তোলে। পাতারা হলুদ হয়, মরে যায়, পড়ে থাকে পীচের গন্ধ বুকে নিয়ে।
আমি অনেকদিন তোমাকে দেখি না, খুঁজি না। আমি আর অতীত খুঁড়ি না। খননকাজের ব্যথায় শয্যাশায়ী। ধরাশায়ী হতে না চাইলে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকাই ভালো। দূরত্ব তোমার স্বস্তি, দুরত্ব আমার স্বস্তি। দুরত্বে সমাজ নিরাপদ থাকে। আমি আর অতীত খুঁড়বো না। মঙ্গলবার্তার জীর্ন পাতা অমসৃন সততা নিয়ে এখনো স্থির। তুমি আছো তাই তোমাকে নতুন করে পেতে হয় না।
চায়ের কাপ হাতে ঝুলবারান্দায় পাতাবাহারের ঝোঁপ, সন্ধ্যার আকাশে নিভু নিভু পশ্চিমা নক্ষত্র, সুগন্ধী মরিচ পাতা, সবজীর সজীবত্ব, হেলান দিয়ে অজুহাত সন্ধানী খালি চায়ের কাপ, একটা গান শোনো, আগে কখনো শোনোনি, নিকটস্থ প্রার্থনালয় থেকে ভেসে আসা সুর, আকাশ জেমকালি মেখে নিঃসঙ্গ প্রতিক্ষায়, কোন কথা বাকী থাকে কিনা, তখনো কেউ জানে না, ঘরে ঘরে বাতি জ্বলে উঠে, দীর্ঘশ্বাস চায়ের কাপে পতিত হলে নীরবতা আর কোন কথা বলে না। এখন সব গল্পের অবসান ঘটেনি। এখানে গল্পেরও সূচনা হয়নি। তবু চায়ের কাপ হাতে ঝুল বারান্দায় অনর্থক লিকারের স্পর্শ পাই ঠোটে।
জ্বর সেরেছে অবসাদ ছাড়েনি। স্মৃতি এখনো ঘুর্নি পাকায় শুকনো পাতায়। পনের দিনের ক্লান্তি, পনের বছরের শান্তির ঘুম। এবার ঘুমাবো আমি। এবার পাতায় পাতায় শিরায় শিরায় অবসন্নতার ছুটি।
No comments:
Post a Comment