আমার একটা ডায়েরী আছে। সুন্দর বাধাই করা ডায়েরী। নিয়মিত ডায়েরী লেখার অভ্যেসে ভাটা পড়েছিল ব্যস্ততার কারনে। ডায়েরীর অভাবে। কালো রঙের ডায়েরীটা হাতে আসার পর নিয়মিত লিখতে শুরু করি আবার। প্রতিদিন হাবিজাবি লেখায় ভর্তি করে ফেলি ডায়েরীটা। এত হাজার বাক্য লেখার পরও ডায়েরীটা শেষ হয় না। আমারও লেখায় ক্লান্তি আসে না। আমি দেখতে পাই আমি ডায়েরীর মাঝপথে আছি। বহুদিন ধরে দেখে আসছি। মাঝপথে আসার পর থেকে ভয় ধরেছিল এই চমৎকার ডায়েরীটা শেষ হয়ে গেলে আরেকটা কোথায় পাবো। তার চেয়ে লেখার পরিমান কমিয়ে দেই। দীর্ঘকাল লিখতে পারবো।
কিন্তু অল্প অল্প করে লিখতে গিয়েও টের পেলাম লেখাও শেষ হচ্ছে না ডায়েরীটাও যেন বাড়ছে। অথচ ডায়েরী বন্ধ করলে আগের সাইজে চলে আসে। ডায়েরী খুললেই পাতাগুলো যেন বেড়ে যায়। আমার লেখাগুলো বুকে নিতে আনন্দ হচ্ছে বলে ডায়েরীটা পাতার পর পাতা বৃদ্ধি করে যাচ্ছে? এরকম একটা অলৌকিক বিশ্বাস প্রোথিত হয় আমার ভেতরে। সেই বিশ্বাসের বিস্ময়ে ডায়েরীকে নিরলস বলতে থাকি আমার প্রতিদিনের কথা।
সেদিন ঘুম ভেঙে টেবিলের কাছে এসে ড্রয়ার খুলে অবাক হলাম। কাল রাতে লেখা পুরোনো ডায়েরীটা আজ সকালে এসে কেমন নীল হয়ে গেছে। যেন নতুন একটা ডায়েরী কেউ আলগোছে রেখে গেছে। অথচ ভেতরের লেখা উপরের কভারের লোগেো, সব অবিকল একই। শুধু ডায়েরীর রং বদলে গেছে, আর ডায়েরীর পাতাগুলো শেষ হয়ে গেছে। আমার আজকে লেখার মতো একটা পাতাও খালি নেই। প্রতিটা পাতায় পুরোনো লেখার ফুলঝুড়িতে পূর্ন। ডায়েরীটা হাতে নিয়ে তাকালাম। পাতা খুললাম। কিন্তু ডায়েরীটা আমাকে যেন চিনলোই না। আমার কথা শোনার ধৈর্য তার ফুরিয়ে গেছে। অথচ এখনো অনেক কথা বলার বাকী ছিল।
No comments:
Post a Comment