জেলে যাবার পর ভেবেছিলাম তুমি একবার হলেও দেখতে আসবে। তোমাকে দেখতে পেলে জেল জীবনের সমস্ত কষ্ট একাকীত্ব এক লহমায় কেটে যেতো। প্রতিদিন বিকেল হলে অপেক্ষায় থাকতাম ভিজিটর রুমে ডাক আসবে। জেল জীবনের কষ্ট সয়ে নিচ্ছিলাম অপেক্ষায় অপেক্ষায়। পুলিশ যেদিন ধরে নিয়ে এলো তুমি তখন ঘরেই ছিলে। জানালায় পর্দার গিট দেয়া চিহ্নটা তাই বলে। তোমাদের সবুজ গেটটা পেরিয়ে আসার সময় প্রিজন ভ্যান থেকে বহুকষ্টে তাকিয়ে ছিলাম যদি জানালায় একটা মুখ দেখা যায়। কিন্তু তুমি হয়তো সেই ভর দুপুরে ভাতঘুমে কাতর।
হয়তো বিকেলে জেগে উঠে শুনেছো আমাকে পুলিশ নিয়ে গেছে। শুনে তুমি হয়তো ঘরে দোর দিয়ে একা একা কেঁদেছিলে গোপনে। তুমি আমার জন্য কেন কাঁদবে এটা একটা রহস্য। তবু আমি নিশ্চিত জানি তুমি কাঁদতে কাঁদতে চোখ ফুলিয়ে ফেলবে। ফুটবল খেলতে গিয়ে যেদিন পেরেক ফুটলো পায়ে, সেদিন তুমি কেমন কেঁদেছিলে পাগলের মতো, অপু হাসতে হাসতে বলছিল। তোমার মেজদা অপু, এখন লন্ডনে সংসারী হয়েছে।
তুমি আমার জন্য কাঁদবে এই আনন্দে জেলে যেতেও কষ্ট হলো না। কেউ একজন আমার জন্য প্রবল ভালোবাসা নিয়ে ফুলে ফুলে কাঁদছে এটা ভেবেও স্বর্গসুখ।
জেলের প্রাথমিক ধাক্কাটা কেটে গেল সেই ঘোরে। কিন্তু এক মাস যাবার পরও যখন ভিজিটর রুমে আমার ডাক এলো না, তখন বিষণ্ণতা আস্তে আস্তে গ্রাস করতে থাকে। একটা শূন্যটা আমাকে ক্রমশ চাপ দিতে দিতে কোণঠাসা করে ফেলতে থাকে। তুমি কি আমার খবর পাওনি?
সমস্ত পাড়া দেখছিল পুলিশ ঘরে ঢুকে আমাকে নিয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় লোকজন জড়ো হয়ে দেখছে রাজনীতির কূটকৌশলের কাছে পরাজিত আমাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এই গ্রেফতারে আমার কোন অপমান ছিল না। আমি একদিন গৌরবের সাথে ফিরে আসবো সেই বিশ্বাসের সাথে তোমার কান্নাদৃশ্যটা যুক্ত হয়ে জেলজীবনের প্রতি আকর্ষণই বোধ করেছি।
কোনদিন ছাড়া পেলে তুমি আমার জন্য কিভাবে কাতর হয়ে ছুটে আসবে, আগের মতো লুকিয়ে দেখা না করে, প্রকাশ্যে রিকশায় চড়বে, সেই সাহসের আনন্দটাও জন্ম নিতে থাকে ভেতরে ভেতরে। আসলে ওই সব কাল্পনিক আনন্দেই জেল-জীবনটা সহনীয় হয়ে উঠেছিল।
কিন্তু একমাস দুমাস চারমাস ছমাস গেল। কোন খবর নেই।
নিশ্চয়ই তোমাকে বাড়িতে আটকে রেখেছে। তাই আমাকে দেখতে আসতে পারছো না। একবার তোমার খুব জ্বর হলো, মারাত্মক উথালপাতাল জ্বর, বাসা থেকে হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হলো তোমাকে। তুমি এক সপ্তাহ ক্লিনিকে মৃত্যুর সাথে ধুঁকছো, আমি কিছুই জানি না! এক সপ্তাহ পর আমি জানলাম তুমি ক্লিনিকে। তুমি তখন সেরে উঠেছো প্রায়। আমি খবর পেয়ে ছুটে গেলাম। আমাকে দেখে তোমার দুই চোখে যে আলোর দ্যুতি ছড়িয়েছিল আমি কখনোই ভুলবো না। কেমন বনলতা সেনের মতো ভেজা কন্ঠে বলে উঠেছিলে, 'এতদিন পরে এলেন!'
জেল জীবনে ছমাস পার হবার পর থেকে এই বিশ্বাসটা দাঁড় করালাম, তারপর একটু ভালো লাগলো-
[i]আসতে না পারলেও নিশ্চয়ই তুমি এখন আমার কথা ভাবছো। ভোরে জেগে উঠে ভাবি, তুমি ঘুমোচ্ছে এখন। শেষরাতের ঘুমে আমাকে নিয়ে কোন স্বপ্ন দেখছো কি? কে জানে? আমি কখনো তোমাকে স্বপ্নে দেখিনি।[/i]
[i]জেলখানার ফ্লোরে বসে দুপুরে খেতে খেতে ভাবি তুমি এখন ভিজে চুলে চুপ করে খাবার টেবিলে বসে আছো। মাসী তোমাকে বলছে, মাছের টুকরোটা নিয়ে খেতে, পুকুরের তাজা মাছ। কিন্তু তুমি আনমনা হয়ে ভাবছো আরেকজনের কথা, জেলখানায় গারদের ভেতর যে চালকুমড়ার পাতলা ঝোল দিয়ে কাঁকর মেশানো মোটা চালের ভাত খাচ্ছে। কতো কষ্ট তার। খাওয়া লাটে উঠলো তোমার। মাছটা ছুঁতেই পারলে না। [/i]
এই ভাবনাটুকু আমাকে খুব শক্তি দেয়। সেই জঘন্য পচা গন্ধওয়ালা চালের ভাতও অবলীলায় খেয়ে নেই। তুমি আমার কথা ভাবছো - এটা কতোবড় শক্তি! ভালোবাসার এত প্রভাব। কতোদূর থেকেও আমাকে খাইয়ে দিচ্ছে।
কেমন আছো তুমি? মনে মনে তোমাকে কতোবার জিজ্ঞাসা করেছি। তুমি কি শুনতে পেতে? এরকম ডাক কেউ শোনে না। তবু তুমি আমার বুকের ভেতরে শক্তি যুগিয়ে যাও আরো ছমাস। এভাবে একটা বছর পার হয়ে দশ দিনের দিন আমার মুক্তির কাগজ আসে।
জেল থেকে বেরিয়ে একটা রিকশা নিয়ে পরিচিত রাস্তা বেয়ে আমি সোজা তোমাদের বাসার সামনে হাজির হলাম। নিজের বাড়িতে যাবার আগে তোমাকে দুশ্চিন্তা মুক্ত করে যাই, ভাবলাম আমি। তোমার বিষণ্ণ মুখটা, চোখের নীচে জমে থাকা কালিটা দেখতে ভীষণ ইচ্ছে হলো আমার। আমার জন্য দুশ্চিন্তায় অনিয়মিত আহারে মুখটা শুকিয়ে গেছে নিশ্চয়ই।
কিন্তু রিকশা তোমাদের বাসার সামনে থামার সাথে সাথে পেছনে আরেকটা রিকশা এসে দাঁড়ালো। আবছা অন্ধকারে বুকের ভেতর ছ্যাঁত করে উঠলো যখন খেয়াল করি রিকশা থেকে নামলে তুমি। সাথে এক তরুণ। ছেলেটা প্রদীপ না? আমার পুরনো বন্ধু। দুজনে কি দারুণ আনন্দে আছো! খুব হাসছিলে দুজনেই কিছু একটা নিয়ে। মুখে তোমার কোন মলিনতা নেই। আমার গত এক বছরের সব কল্পনা মুহূর্তেই ভেসে গেল।
তোমাদের পোশাক চেহারা হাসি সবকিছু এত বেশী উজ্জ্বল যে আমাকে ওখানে নিতান্ত বেমানান লাগলো। চট করে রিকশায় উঠে আমি হুড ফেলে মুখ লুকোলাম। রিকশাওয়ালাকে ইশারা করি আরেকটু এগিয়ে যেতে। তুমি দেখার আগেই পালাই।
বাসায় গিয়ে শুনলাম সব ঘটনা। প্রদীপের সাথে তোমার বাগদান হয়ে গেছে গত সপ্তাহে। আমার তখন ইচ্ছে হলো আবার একটা খুন করে জেলখানায় ফেরত যেতে। তোলপাড় যন্ত্রণায় মাথা ছিঁড়ে যায়, রাত কাটে নির্ঘুম।
কদিন বাদে র্যাব এসে আমাকে যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেয়। হাসপাতালে দাদুকে দেখে মাঝরাতে বাড়ি ফেরার পথে আমাকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ঠ্যাং ভেঙে জেলখানায় ফেরত দেয়। আমার পকেটে নাকি গুলিভরা রিভলভার পাওয়া গেছে। ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম ঈদের খরচ তুলতে। আমার সঙ্গী সাথীদের খোঁজ দিতে পারিনি বলে আমার গিরাগুলো আস্ত রাখেনি। মারের চোটে অজ্ঞান আমি জেগে উঠে দেখি সত্যি আমার পকেটে মরচে ধরা একনলা একটা লোহার পিস্তল। এত বড় কেরামতি আমি জীবনে আর একটিও দেখিনি।
আমার জেল জীবনে আরো পাঁচ বছর যুক্ত হলো। রাজবন্দী থেকে ছিঁচকে ডাকুতে অবনতি হয়েও এবার আমি আরো ভালো থাকবো, কারণ আমি নিশ্চিত জানি আমাকে দেখতে আসবে না কেউ। দ্বিতীয় জেলজীবনে প্রত্যাশার কোন বাতিঘর নেই আমার। আর জানোই তো প্রত্যাশার মতো ফ্যাসাদ আর কিছুই হয় না।
প্রিয় মনীষা, এই চিঠি তোমাকে পাঠানোর কোন মানে হয় না। ছিঁড়ে ফেলবো জেনেও একরোখা ক্ষেদগুলো উড়িয়ে দেয়ার জন্যই লেখা।
ইতি-
অবনীশ
Monday, August 29, 2011
Saturday, August 20, 2011
অসমাপ্ত ভ্রমণ
সমাপ্তিটা একটা আশংকা নয়। অনিবার্য পরিণতি। মানুষের জীবন ফলবান বৃক্ষদের মতো নয়। ফলবান বৃক্ষ বছরে একবার ফল দিয়ে জীর্নশীর্ন হয়ে নতুন জীবনের অপেক্ষায় থাকে। নতুন বছরে এসে আবারো ফুল ফলের সৌরভে ভরিয়ে দেয়। মানুষের জীবনে সুখটা সীমিত। যে মানুষ ৬০ বছর বেঁচে থাকে সে বড়জোর ১০ বছর সুখী জীবন কাটায়। কেউ কেউ দুবছর কেউ বা দুমাসও পায় না। সুখের চরিত্রটা আলোর মতো। উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত ঘর যখন অন্ধকারে মুখ লুকোয়, তখন আলোটা কেবল স্মৃতিমাত্র। আলোকে ধরে রাখার সাধ্য নেই কারো। সুখই তেমনি, তাৎক্ষনিক অনুভূতি। আমি একদা সুখী জীবন কাটিয়েছি, এই স্মৃতিচারণটা সেই অনুভূতিকে ফিরিয়ে আনতে পারে না।
অপ্রস্তুত সমাপ্তিতে খুব ক্ষতি হয়ে যায়। যার সমাপ্তি তার নয়, তার চেয়ে বেশী ক্ষতি হয় তার উপর নির্ভরশীলদের। অপ্রস্তুত সমাপনীকে এড়াবার কোন উপায় আছে? নাই।
অনেকগুলো অসমাপ্ত ভ্রমণ রয়ে গেছে। হিমালয় যাবার বাসনা বহুকালের। ছেলেবেলায় কাঞ্চনজংঘা নামে একটা কিশোর উপন্যাস পড়েছিলাম। সেই থেকে মাথার ভেতর কাঞ্চনজংঘা দেখার ভুত চেপেছিল। দার্জিলিং গিয়ে সেই সাধটা পুরন করা কোন ব্যাপার না এখন। তবু যাওয়া হয়নি। হিমালয়ের আরেক কন্যা ভূটান যাবার চেষ্টা করছি গত পাচ বছর। ছুটিছাটার অভাবে তাও হয়নি। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের উপর পড়াশোনা করার পর দেখতে পাই পৃথিবীর আদিম অবস্থারা খানিক চিত্র এই দ্বীপগুলোতে আছে। সেখানেও যাওয়ার সুযোগ পেলাম না আজো। এরকম আরো অনেক ভ্রমণ অসমাপ্ত থেকে যাবে। সম্প্রতি মরে যাওয়া আরেকটি স্বপ্ন ভ্রমণের অপ্রস্তুত সমাপ্তি দেখে রীতিমতো বিষাদগ্রস্থ। আমার কোন ভ্রমণই সফলতা পেলো না। মানুষের জীবনটাই আসলে অসমাপ্ত ভ্রমণ। আক্ষেপ করে কাজ নেই।
তার চেয়ে অজয় শুনি আরেকটা।
আমি ফুলকে যেদিন ধরে বেঁধে আমার সাজি ভরেছি
আমি সেদিন থেকে জেতা বাজি হেরেছি।
আমি ঝড়কে যেদিন কেঁদে সেধে আমার মাঝি করেছি
আমি সেদিন থেকে সেদিন থেকে জেতা বাজি হেরেছি
মুক্তো ছিল ঝিনুকে আমি হাতে তুলে নিয়েছি
বুঝিনি সেদিন বড় সাধের বুকে দুলিয়ে দিয়েছি
এখন শূণ্য ঝিনুক ছিন্ন হৃদয় একি আলো ধরেছি
মিথ্যে ফাগুন সাজিয়ে আমি কোকিল বধুকে কাছে ডাকি
তাই নিজের চোখে জল এনে সে আমায় দিয়েছে ফাঁকি
নাগের মাথায় যে মনি মানায় তাকে ছিঁড়ে এনেছি।
মনি যে সবার সাজে না, সে মনিকে ম্লান দেখে জেনেছি
এখন অন্ধ নাগের বিষে বিষে দেহমনপ্রান ভরেছি।
অপ্রস্তুত সমাপ্তিতে খুব ক্ষতি হয়ে যায়। যার সমাপ্তি তার নয়, তার চেয়ে বেশী ক্ষতি হয় তার উপর নির্ভরশীলদের। অপ্রস্তুত সমাপনীকে এড়াবার কোন উপায় আছে? নাই।
অনেকগুলো অসমাপ্ত ভ্রমণ রয়ে গেছে। হিমালয় যাবার বাসনা বহুকালের। ছেলেবেলায় কাঞ্চনজংঘা নামে একটা কিশোর উপন্যাস পড়েছিলাম। সেই থেকে মাথার ভেতর কাঞ্চনজংঘা দেখার ভুত চেপেছিল। দার্জিলিং গিয়ে সেই সাধটা পুরন করা কোন ব্যাপার না এখন। তবু যাওয়া হয়নি। হিমালয়ের আরেক কন্যা ভূটান যাবার চেষ্টা করছি গত পাচ বছর। ছুটিছাটার অভাবে তাও হয়নি। আন্দামান দ্বীপপুঞ্জের উপর পড়াশোনা করার পর দেখতে পাই পৃথিবীর আদিম অবস্থারা খানিক চিত্র এই দ্বীপগুলোতে আছে। সেখানেও যাওয়ার সুযোগ পেলাম না আজো। এরকম আরো অনেক ভ্রমণ অসমাপ্ত থেকে যাবে। সম্প্রতি মরে যাওয়া আরেকটি স্বপ্ন ভ্রমণের অপ্রস্তুত সমাপ্তি দেখে রীতিমতো বিষাদগ্রস্থ। আমার কোন ভ্রমণই সফলতা পেলো না। মানুষের জীবনটাই আসলে অসমাপ্ত ভ্রমণ। আক্ষেপ করে কাজ নেই।
তার চেয়ে অজয় শুনি আরেকটা।
|
আমি ফুলকে যেদিন ধরে বেঁধে আমার সাজি ভরেছি
আমি সেদিন থেকে জেতা বাজি হেরেছি।
আমি ঝড়কে যেদিন কেঁদে সেধে আমার মাঝি করেছি
আমি সেদিন থেকে সেদিন থেকে জেতা বাজি হেরেছি
মুক্তো ছিল ঝিনুকে আমি হাতে তুলে নিয়েছি
বুঝিনি সেদিন বড় সাধের বুকে দুলিয়ে দিয়েছি
এখন শূণ্য ঝিনুক ছিন্ন হৃদয় একি আলো ধরেছি
মিথ্যে ফাগুন সাজিয়ে আমি কোকিল বধুকে কাছে ডাকি
তাই নিজের চোখে জল এনে সে আমায় দিয়েছে ফাঁকি
নাগের মাথায় যে মনি মানায় তাকে ছিঁড়ে এনেছি।
মনি যে সবার সাজে না, সে মনিকে ম্লান দেখে জেনেছি
এখন অন্ধ নাগের বিষে বিষে দেহমনপ্রান ভরেছি।
Thursday, August 18, 2011
কাসপারেস্কি
কোন দিন যায় যা চলে গেলে আর আসে না।
হৃদয় বাসনা নিয়ে আকুল যতই চাওয়া,
কালের সাগরে এসে আর ভাসে না ।
এমনও তো দিন আসে যা শুধু সময় নাশে
মনের কলিজা কোন আশা রাখে না
অন্তর ফিরে চায় নিঠুর সময় হায়
হারানো সেদিন কেন ফিরে আসে না
অনেকদিন পর অজয় চক্রবর্তী শুনছি। গতকাল থেকে। কিছু সময় আসে তখন অজয় খুব মনে ধরে। গতকাল এক বন্ধুর কাছ থেকে অজয়ের গান পেয়ে আবার শুরু হলো অজয়যাত্রা। নেশার মতো শুনছি। এই গানটা আগে শোনা হয়নি, কালকেই শুনলাম প্রথম।
গান কি মানুষকে বর্তমান সময় থেকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে? আমাকে পারে, একেকটাগানের একেকরকম স্মৃতি। সেই সময়কে কানের সাথে ধরে রেখেছে গান। সেই সময়- সুনীলের এই বইটা কতোদিন আগে কেউ একজন নিয়ে ফেরত দেয়নি আর। খুব কষ্ট হয়েছিল। অভাবের সময় কষ্টের টাকা দিয়ে কেনা বইটা। তাই 'সেই সময়' বলতে তাই বইয়ের কথা মনে পড়ে। আমার সেই সময় আর ফিরবে না। কারোরই ফেরে না। একসময় সবাই না ফেরার দেশে চলে যায়। অনিবার্য যাওয়া। প্রিয় মানুষগুলো ছেড়ে যেতে কি খুব কষ্ট হয়। ওটা ভাবলে কষ্ট হয়। কিন্তু যেদিন সত্যি সত্যি চলে যাওয়া হবে, সেদিন কি কারো মুখ মনে পড়ে? যমদুতের সামনে প্রিয়মুখ কি ভাসতে পারে? ওটা জানার জন্য সত্যের মুখোমুখি হওয়া ছাড়া উপায় নেই। যখন ঘটবে তখন জানবো। কিন্তু সেই জানাটা কাউকে বলা হবে না।
একেকটা সুখের সময় আসে মনে হয় এই মুহূর্তে যদি চলে যাওয়া যেতো, তাহলে একটা সুখ স্মৃতি নিয়ে গেলাম। কিন্তু সুখের সময় যেতে দেয় না প্রিয় মানুষেরা। আকড়ে ধরে রাখতে চায়। কিন্তু যখন ঘোর দুঃসময়, তখনো চলে যাবার প্রশ্ন আসে, ইচ্ছে জাগে। তখন কেউ বলে না, যেও না। আরেকটু থেকে যাও, আর কটা দিন, আর কটা বছর। একটা বছর কাটতে ৩৬৫ দিন লাগে। দুইবার ৩৬৫ হলে কতো হয়? ৭৩০ দিন? ৭৩০ দিনের সাথে যদি আরো ৯২ দিন যোগ করা হয় তখন? ৯২২ দিন? নাকি, মুখে মুখে গুনে যোগ করলাম। ক্যালকুলেটার নিতে ইচ্ছে করছে না। আলসেমি ধরে গেছে। খুব ক্লান্তি লাগছে। ৯২২ দিন মানে কি? ৯২২ দিনে কি হতে পারে? কি না হতে পারে। এটা এমন কি একটা সময়। ৯২২ দিনে একটা মানুষ কতোটা বদলে যায়। ২২ দিন বড় নাকি ৯০০ দিন? আজগুবি প্রশ্ন কোন অংকই মেলে না।
উত্তর মেলে না এরকম প্রশ্ন করতে যাওয়াও বোকামী। একসময় চিঠি লিখতাম। প্রচুর চিঠি লিখেছি। বন্ধু ছিল একজন। চিঠি পাগল ছিলাম দুজন। চিঠিতেই জীবন সঁপে দেবার মতো। সেই হাজার চিঠি এখন কোথায়? ধুলোয় মিশে গেছে? তবু মগজ থেকে যায় না কেন? মানুষ এত ক্ষমতার অধিকারি, কিন্তু স্মৃতি মুছে ফেলার ক্ষমতা নেই। যদি থাকতো বেশ কিছু স্মৃতি মুছে চলে আসতাম। দিনের রাতের ঘন্টার মিনিটের। কখনো কখনো ঘন্টাও মিনিটের সমান হয়ে যায়। বিশ্বাস হয়?
মানুষ হলো পেয়াজের মতো। ক্রমাগত খোলস পাল্টাতে পাল্টাতে বেড়ে ওঠে। একটার উপর আরেকটা খোলস পড়ে। প্রত্যেকটাই সত্যি। পেয়াজের প্রতিটি পরতই সত্যি। প্রতিটা পরতই রন্ধনযোগ্য। মানুষের সাথে পেয়াজের তুলনা করলে মানবজাতি কি আহত হবে? মানহানির মামলায় পড়তে হবে?
আমি মানুষকে সহজ প্রাণী মনে করতাম। দুটি হাত দুটি পা একটা মাথা। মাথার ভেতরে ক্রিয়াশীল মগজ। গরুর মগজের চেয়ে মানুষের মগজের পরিমান বেশী? মানুষ কি গরুর চেয়ে বেশী বুদ্ধিমান? তবে ক্রমে টের পেয়েছি মানুষ গরুর চেয়ে উন্নত। কারণ মানুষ মগজের বুদ্ধিগুলি খরচ করে। আর গরু মগজ পুরোটাই অক্ষত রেখে দেয় মানুষের ভোজনের জন্য। মানুষ সহজ প্রাণী নয়। অতীব চালাক প্রাণী। মানুষ পোষা বিপদজনক।
কিছুই সহজ নয়, কিছুই সহজ নয় আর/লেখা, পড়া, চিঠিলেখা, কথোপকথন....আমার কথা না, বুদ্ধদেব বসুর।
আমি বলি, মগজে ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে কাসপারেস্কি আপডেট করা দরকার।
হৃদয় বাসনা নিয়ে আকুল যতই চাওয়া,
কালের সাগরে এসে আর ভাসে না ।
এমনও তো দিন আসে যা শুধু সময় নাশে
মনের কলিজা কোন আশা রাখে না
অন্তর ফিরে চায় নিঠুর সময় হায়
হারানো সেদিন কেন ফিরে আসে না
অনেকদিন পর অজয় চক্রবর্তী শুনছি। গতকাল থেকে। কিছু সময় আসে তখন অজয় খুব মনে ধরে। গতকাল এক বন্ধুর কাছ থেকে অজয়ের গান পেয়ে আবার শুরু হলো অজয়যাত্রা। নেশার মতো শুনছি। এই গানটা আগে শোনা হয়নি, কালকেই শুনলাম প্রথম।
গান কি মানুষকে বর্তমান সময় থেকে উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে? আমাকে পারে, একেকটাগানের একেকরকম স্মৃতি। সেই সময়কে কানের সাথে ধরে রেখেছে গান। সেই সময়- সুনীলের এই বইটা কতোদিন আগে কেউ একজন নিয়ে ফেরত দেয়নি আর। খুব কষ্ট হয়েছিল। অভাবের সময় কষ্টের টাকা দিয়ে কেনা বইটা। তাই 'সেই সময়' বলতে তাই বইয়ের কথা মনে পড়ে। আমার সেই সময় আর ফিরবে না। কারোরই ফেরে না। একসময় সবাই না ফেরার দেশে চলে যায়। অনিবার্য যাওয়া। প্রিয় মানুষগুলো ছেড়ে যেতে কি খুব কষ্ট হয়। ওটা ভাবলে কষ্ট হয়। কিন্তু যেদিন সত্যি সত্যি চলে যাওয়া হবে, সেদিন কি কারো মুখ মনে পড়ে? যমদুতের সামনে প্রিয়মুখ কি ভাসতে পারে? ওটা জানার জন্য সত্যের মুখোমুখি হওয়া ছাড়া উপায় নেই। যখন ঘটবে তখন জানবো। কিন্তু সেই জানাটা কাউকে বলা হবে না।
একেকটা সুখের সময় আসে মনে হয় এই মুহূর্তে যদি চলে যাওয়া যেতো, তাহলে একটা সুখ স্মৃতি নিয়ে গেলাম। কিন্তু সুখের সময় যেতে দেয় না প্রিয় মানুষেরা। আকড়ে ধরে রাখতে চায়। কিন্তু যখন ঘোর দুঃসময়, তখনো চলে যাবার প্রশ্ন আসে, ইচ্ছে জাগে। তখন কেউ বলে না, যেও না। আরেকটু থেকে যাও, আর কটা দিন, আর কটা বছর। একটা বছর কাটতে ৩৬৫ দিন লাগে। দুইবার ৩৬৫ হলে কতো হয়? ৭৩০ দিন? ৭৩০ দিনের সাথে যদি আরো ৯২ দিন যোগ করা হয় তখন? ৯২২ দিন? নাকি, মুখে মুখে গুনে যোগ করলাম। ক্যালকুলেটার নিতে ইচ্ছে করছে না। আলসেমি ধরে গেছে। খুব ক্লান্তি লাগছে। ৯২২ দিন মানে কি? ৯২২ দিনে কি হতে পারে? কি না হতে পারে। এটা এমন কি একটা সময়। ৯২২ দিনে একটা মানুষ কতোটা বদলে যায়। ২২ দিন বড় নাকি ৯০০ দিন? আজগুবি প্রশ্ন কোন অংকই মেলে না।
উত্তর মেলে না এরকম প্রশ্ন করতে যাওয়াও বোকামী। একসময় চিঠি লিখতাম। প্রচুর চিঠি লিখেছি। বন্ধু ছিল একজন। চিঠি পাগল ছিলাম দুজন। চিঠিতেই জীবন সঁপে দেবার মতো। সেই হাজার চিঠি এখন কোথায়? ধুলোয় মিশে গেছে? তবু মগজ থেকে যায় না কেন? মানুষ এত ক্ষমতার অধিকারি, কিন্তু স্মৃতি মুছে ফেলার ক্ষমতা নেই। যদি থাকতো বেশ কিছু স্মৃতি মুছে চলে আসতাম। দিনের রাতের ঘন্টার মিনিটের। কখনো কখনো ঘন্টাও মিনিটের সমান হয়ে যায়। বিশ্বাস হয়?
মানুষ হলো পেয়াজের মতো। ক্রমাগত খোলস পাল্টাতে পাল্টাতে বেড়ে ওঠে। একটার উপর আরেকটা খোলস পড়ে। প্রত্যেকটাই সত্যি। পেয়াজের প্রতিটি পরতই সত্যি। প্রতিটা পরতই রন্ধনযোগ্য। মানুষের সাথে পেয়াজের তুলনা করলে মানবজাতি কি আহত হবে? মানহানির মামলায় পড়তে হবে?
আমি মানুষকে সহজ প্রাণী মনে করতাম। দুটি হাত দুটি পা একটা মাথা। মাথার ভেতরে ক্রিয়াশীল মগজ। গরুর মগজের চেয়ে মানুষের মগজের পরিমান বেশী? মানুষ কি গরুর চেয়ে বেশী বুদ্ধিমান? তবে ক্রমে টের পেয়েছি মানুষ গরুর চেয়ে উন্নত। কারণ মানুষ মগজের বুদ্ধিগুলি খরচ করে। আর গরু মগজ পুরোটাই অক্ষত রেখে দেয় মানুষের ভোজনের জন্য। মানুষ সহজ প্রাণী নয়। অতীব চালাক প্রাণী। মানুষ পোষা বিপদজনক।
কিছুই সহজ নয়, কিছুই সহজ নয় আর/লেখা, পড়া, চিঠিলেখা, কথোপকথন....আমার কথা না, বুদ্ধদেব বসুর।
আমি বলি, মগজে ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছে কাসপারেস্কি আপডেট করা দরকার।
Tuesday, August 16, 2011
ডায়েরী
আমার একটা ডায়েরী আছে। সুন্দর বাধাই করা ডায়েরী। নিয়মিত ডায়েরী লেখার অভ্যেসে ভাটা পড়েছিল ব্যস্ততার কারনে। ডায়েরীর অভাবে। কালো রঙের ডায়েরীটা হাতে আসার পর নিয়মিত লিখতে শুরু করি আবার। প্রতিদিন হাবিজাবি লেখায় ভর্তি করে ফেলি ডায়েরীটা। এত হাজার বাক্য লেখার পরও ডায়েরীটা শেষ হয় না। আমারও লেখায় ক্লান্তি আসে না। আমি দেখতে পাই আমি ডায়েরীর মাঝপথে আছি। বহুদিন ধরে দেখে আসছি। মাঝপথে আসার পর থেকে ভয় ধরেছিল এই চমৎকার ডায়েরীটা শেষ হয়ে গেলে আরেকটা কোথায় পাবো। তার চেয়ে লেখার পরিমান কমিয়ে দেই। দীর্ঘকাল লিখতে পারবো।
কিন্তু অল্প অল্প করে লিখতে গিয়েও টের পেলাম লেখাও শেষ হচ্ছে না ডায়েরীটাও যেন বাড়ছে। অথচ ডায়েরী বন্ধ করলে আগের সাইজে চলে আসে। ডায়েরী খুললেই পাতাগুলো যেন বেড়ে যায়। আমার লেখাগুলো বুকে নিতে আনন্দ হচ্ছে বলে ডায়েরীটা পাতার পর পাতা বৃদ্ধি করে যাচ্ছে? এরকম একটা অলৌকিক বিশ্বাস প্রোথিত হয় আমার ভেতরে। সেই বিশ্বাসের বিস্ময়ে ডায়েরীকে নিরলস বলতে থাকি আমার প্রতিদিনের কথা।
সেদিন ঘুম ভেঙে টেবিলের কাছে এসে ড্রয়ার খুলে অবাক হলাম। কাল রাতে লেখা পুরোনো ডায়েরীটা আজ সকালে এসে কেমন নীল হয়ে গেছে। যেন নতুন একটা ডায়েরী কেউ আলগোছে রেখে গেছে। অথচ ভেতরের লেখা উপরের কভারের লোগেো, সব অবিকল একই। শুধু ডায়েরীর রং বদলে গেছে, আর ডায়েরীর পাতাগুলো শেষ হয়ে গেছে। আমার আজকে লেখার মতো একটা পাতাও খালি নেই। প্রতিটা পাতায় পুরোনো লেখার ফুলঝুড়িতে পূর্ন। ডায়েরীটা হাতে নিয়ে তাকালাম। পাতা খুললাম। কিন্তু ডায়েরীটা আমাকে যেন চিনলোই না। আমার কথা শোনার ধৈর্য তার ফুরিয়ে গেছে। অথচ এখনো অনেক কথা বলার বাকী ছিল।
কিন্তু অল্প অল্প করে লিখতে গিয়েও টের পেলাম লেখাও শেষ হচ্ছে না ডায়েরীটাও যেন বাড়ছে। অথচ ডায়েরী বন্ধ করলে আগের সাইজে চলে আসে। ডায়েরী খুললেই পাতাগুলো যেন বেড়ে যায়। আমার লেখাগুলো বুকে নিতে আনন্দ হচ্ছে বলে ডায়েরীটা পাতার পর পাতা বৃদ্ধি করে যাচ্ছে? এরকম একটা অলৌকিক বিশ্বাস প্রোথিত হয় আমার ভেতরে। সেই বিশ্বাসের বিস্ময়ে ডায়েরীকে নিরলস বলতে থাকি আমার প্রতিদিনের কথা।
সেদিন ঘুম ভেঙে টেবিলের কাছে এসে ড্রয়ার খুলে অবাক হলাম। কাল রাতে লেখা পুরোনো ডায়েরীটা আজ সকালে এসে কেমন নীল হয়ে গেছে। যেন নতুন একটা ডায়েরী কেউ আলগোছে রেখে গেছে। অথচ ভেতরের লেখা উপরের কভারের লোগেো, সব অবিকল একই। শুধু ডায়েরীর রং বদলে গেছে, আর ডায়েরীর পাতাগুলো শেষ হয়ে গেছে। আমার আজকে লেখার মতো একটা পাতাও খালি নেই। প্রতিটা পাতায় পুরোনো লেখার ফুলঝুড়িতে পূর্ন। ডায়েরীটা হাতে নিয়ে তাকালাম। পাতা খুললাম। কিন্তু ডায়েরীটা আমাকে যেন চিনলোই না। আমার কথা শোনার ধৈর্য তার ফুরিয়ে গেছে। অথচ এখনো অনেক কথা বলার বাকী ছিল।
বদলে যাও, বদলে নাও, পুরোনো সময়
বদলে যাওয়া একটি মৌলিক অধিকার। কেউ বদলে যেতে চাইলে বদলে যেতে দেয়া উচিত। একঘেঁয়ে সময় কাটাতে বদলে যায় মানুষ। নতুন সুখের অন্বেষণে বদলে যায় মানুষ। নতুন সম্পর্কের ছোঁয়ায় বদলে যায় মানুষ। আর্থিক অবস্থান পরিবর্তনে বদলে যায় মানুষ। চারপাশে টাল খাওয়া পোড় খাওয়া বদলে যাওয়া মানুষের ভেতর সুশীলতায় ভরপুর মানুষেরাও বদলে যায় সময়ে সময়ে।
প্রয়োজনের কোন শেষ নেই, একের পর এক নতুন চাহিদা এসে মানুষের বদলে যাওয়াকে তরান্বিত করে। বদলে যাওয়া মানুষের মুখ দেখতে খুব অসহ্য লাগে যদি, তাহলে গর্তে গিয়ে চোখ ঢাকো। চেনামুখ যখন অচেনা গলায় কথা বলবে, তখন পালিয়ে বাঁচো। নয়তো সয়ে যাও সয়ে যাও, যদ্দিন সয়ে যেতে পারো তদ্দিন তুমি সুশীলতম মানুষ। সইতে না পারলে যুতসই একটা মুখোশ এঁটে নাও মুখের উপর, কিংবা ঠুলি পড়ে অন্ধ হয়ে যাও। বদলে যাওয়া অতিচেনামুখ দেখে তোমাকে আর চমকে উঠতে হবে না।
তুমি বদলাবে না? কেন বদলাবে না? তুমিও বদলাও। নইলে একদিন ঘুম ভেঙে দেখতে পাবে বদলে গেছে দৃশ্যপট, সবাই নিজ নিজ মুখোশ বদলে ফেলেছে, চেনামুখগুলো কেউ চেনা নেই, সবাই তোমাকে ফেলে চলে গেছে নতুন সময়ের ডাকে। আর....আর তুমি না বদলানোর প্রতিজ্ঞায় আটকে থেকে দেখলে তুমি একা। তোমার কোথাও যাবার নেই। তোমার কোন গন্তব্য নেই। তোমার ভ্রমণের টিকেট হয়ে গেছে অপাঙক্তেয়।
প্রয়োজনের কোন শেষ নেই, একের পর এক নতুন চাহিদা এসে মানুষের বদলে যাওয়াকে তরান্বিত করে। বদলে যাওয়া মানুষের মুখ দেখতে খুব অসহ্য লাগে যদি, তাহলে গর্তে গিয়ে চোখ ঢাকো। চেনামুখ যখন অচেনা গলায় কথা বলবে, তখন পালিয়ে বাঁচো। নয়তো সয়ে যাও সয়ে যাও, যদ্দিন সয়ে যেতে পারো তদ্দিন তুমি সুশীলতম মানুষ। সইতে না পারলে যুতসই একটা মুখোশ এঁটে নাও মুখের উপর, কিংবা ঠুলি পড়ে অন্ধ হয়ে যাও। বদলে যাওয়া অতিচেনামুখ দেখে তোমাকে আর চমকে উঠতে হবে না।
তুমি বদলাবে না? কেন বদলাবে না? তুমিও বদলাও। নইলে একদিন ঘুম ভেঙে দেখতে পাবে বদলে গেছে দৃশ্যপট, সবাই নিজ নিজ মুখোশ বদলে ফেলেছে, চেনামুখগুলো কেউ চেনা নেই, সবাই তোমাকে ফেলে চলে গেছে নতুন সময়ের ডাকে। আর....আর তুমি না বদলানোর প্রতিজ্ঞায় আটকে থেকে দেখলে তুমি একা। তোমার কোথাও যাবার নেই। তোমার কোন গন্তব্য নেই। তোমার ভ্রমণের টিকেট হয়ে গেছে অপাঙক্তেয়।
Saturday, August 6, 2011
লাভ ক্ষতি
যে পরিমাণ ঠকলে আমার ক্ষতি হচ্ছে না, সে পরিমাণ ঠকতে সমস্যা কোথায়, যদি সেই ঠকাটা অন্য কারো মুখে হাসি ফোটায়। ঠকতেও আনন্দ পায় কিছু বোকা মানুষ।
একমুঠো বালিতে একশো রকম খনিজ আছে। প্রত্যেকটা খনিজ আলাদা করার জন্য যে মেধা এবং যন্ত্রপাতি দরকার তা আমার নেই বলেই বালিগুলি মুঠোভরে ধরতে পারছি এবং মনে হচ্ছে বালিগুলো সব অর্থহীন।
মানুষ হলো পেয়াজের মতো। অনেকগুলো খোলসে আবৃত। একেকটা খোলসে একেকটা মানুষ। যদিও স্বাদ গন্ধ সবই একই। তবু একেকটি সম্পর্কের সাথে একেকটি খোলসের মাধ্যমেই পরিচিত সে।
বাংলাদেশে নির্বোধ মানুষের সংখ্যা অত্যধিক। যাদের বিরাট একটা অংশ নিজেদের চালাক মনে করে। মিথ্যে বলার দক্ষতাকে যোগ্যতার অংশ মনে করে। এরাই দেশের সকল সমস্যার মূল। সরকার প্রধান থেকে পথচারী পর্যন্ত কয়েক কোটি মানুষের সমাহার এই নির্বোধ দলে।
পাওয়ার জন্য কাজ করি আমরা দেয়ার জন্য নয়, তাই পাওয়াটাকে কাজের অন্তর্ভূক্ত করি, দেয়াটাকে নয়। যাদের যথেষ্ট পাওয়া হয়ে গেছে তাদের উচিত দেয়ার জন্য কাজ করা। এই দেয়াটা দান নয়, দায়িত্ব।
একমুঠো বালিতে একশো রকম খনিজ আছে। প্রত্যেকটা খনিজ আলাদা করার জন্য যে মেধা এবং যন্ত্রপাতি দরকার তা আমার নেই বলেই বালিগুলি মুঠোভরে ধরতে পারছি এবং মনে হচ্ছে বালিগুলো সব অর্থহীন।
মানুষ হলো পেয়াজের মতো। অনেকগুলো খোলসে আবৃত। একেকটা খোলসে একেকটা মানুষ। যদিও স্বাদ গন্ধ সবই একই। তবু একেকটি সম্পর্কের সাথে একেকটি খোলসের মাধ্যমেই পরিচিত সে।
বাংলাদেশে নির্বোধ মানুষের সংখ্যা অত্যধিক। যাদের বিরাট একটা অংশ নিজেদের চালাক মনে করে। মিথ্যে বলার দক্ষতাকে যোগ্যতার অংশ মনে করে। এরাই দেশের সকল সমস্যার মূল। সরকার প্রধান থেকে পথচারী পর্যন্ত কয়েক কোটি মানুষের সমাহার এই নির্বোধ দলে।
পাওয়ার জন্য কাজ করি আমরা দেয়ার জন্য নয়, তাই পাওয়াটাকে কাজের অন্তর্ভূক্ত করি, দেয়াটাকে নয়। যাদের যথেষ্ট পাওয়া হয়ে গেছে তাদের উচিত দেয়ার জন্য কাজ করা। এই দেয়াটা দান নয়, দায়িত্ব।
Subscribe to:
Posts (Atom)