Monday, April 22, 2024
সেন্ট মার্টিন দ্বীপের বিচিত্র আলোকমালা: বায়োলুমিনিসেন্স
Friday, April 19, 2024
চোখের আলোয় দেখেছিলাম
বাবার নোটবুক ১৯৫৫
হঠাৎ করে আমার বাবার পুরোনো একটা পকেট ডায়েরি আবিষ্কার করলো আমার পুত্র। যে জিনিস আমি নিজেও কোনদিন দেখার সুযোগ পাইনি। দাদীর সাথে খাতির করে তাঁর পুরোনো রত্নভাণ্ডার থেকে এটা উদ্ধার করেছে সে। ব্যক্তিগত জিনিস হলেও শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না কারণ সেখানে বাবার তারুণ্যের দুটো কাব্য প্রতিভার নিদর্শন রয়েছে। যার একটা বাংলা আরেকটা ইংরেজি। যদিও নিশ্চিত নই এগুলো মৌলিক কবিতা নাকি অন্য কারো বই থেকে টুকে নেয়া। কিন্তু বিষয়টা চমকপ্রদ এবং ১৯৫৫ সালের এত চমৎকার একটা ডায়েরি খুঁজে পাওয়াটাই আমার জন্য দারুণ ব্যাপার। ২৭ বছর আগে প্রয়াত বাবার এই স্মৃতিটা এখন আমার কাছে অমূল্য সম্পদ।
লেখা ও শেখা: ক্রমশ...
মাঝে মাঝে দেখি প্রবীন লেখকদের কেউ কেউ বলেন আজকালকার তরুণরা যা লিখছে তা কিছুই হচ্ছে না,তাদের দেবার কিছুই নেই। দুর্ভাগ্য তাঁদের তাঁরা নিশ্চয়ই শুধু খারাপ লেখকদেরই দেখেছেন। আমার সৌভাগ্য আমার চোখে পড়া অধিকাংশ তরুণ দারুণ প্রতিভাবান। আমার বন্ধু তালিকায়ও এমন কয়েকজন আছেন তারা দেশের যে কোন প্রতিষ্ঠিত লেখকের চেয়ে অনেক ভালো লেখে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে অধিকাংশই প্রচারের আলোয় থাকে না। অন্তত মূলধারার সাহিত্য বলে যেটা আছে সেখানে তাদের লেখাপত্রের প্রচার দেখি না।
এটা গেল সাহিত্যের কথা। এবার ইতিহাসের কথা বলি। যেহেতু ইতিহাস নিয়ে একটু পড়াশোনা করি, আমার ধারণা ছিল আমি পৃথিবীর ইতিহাস সম্পর্কে মোটামুটি অনেকদূর জেনে গেছি। সেদিন এক কিশোরকে দেখে আমার সেই ধারণা বড় ধরণের ধাক্কা খেলো। মাত্র আধঘন্টার আলাপে সে আমাকে পৃথিবীর ইতিহাসের এমন গুরুতর কিছু তথ্য শেখালো, যেগুলো আমার জানা ছিল না। যেটা শিখতে গেলে আমার দশটা ভলিউম উল্টাতে হতো। যে যুগে তরুণরা বই পড়ে না বলে দুর্নাম আছে সে যুগে এই তরুণেরা আমাদের জন্য আলোকবর্তিকা হতে পারে।
অতএব, এই আকালের দিনে বাংলা সাহিত্যে যেসব তরুণ ভালো কাজ করছে তাদের উৎসাহ দেয়া উচিত। যেসব প্রতিষ্ঠিত সাহিত্যিক এখন আর ভালো লিখছেন না, শুধু নাম হয়েছে বলে মূলধারার সাহিত্যের আসরগুলো দখল করে আছেন, তাদের উচিত অবসরে যাওয়া। তাঁদের কারণে অনেক প্রতিভাবান তরুণ পত্রিকার পাতায় জায়গা পাচ্ছে না। এই প্রসঙ্গে শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় চমৎকার একটা সরস লেখা লিখেছিলেন। লেখাটি আমার বিশেষ প্রিয় এবং প্রাসঙ্গিক বলে এখানে যুক্ত করলাম। শ্যামল যদিও পশ্চিমবঙ্গের বাস্তবতায় লিখেছিলেন, কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতাও একই বলা চলে।
“পাহাড়ের ক্ষয় আছে। নদী একদিন শীর্ণ হয়ে আসে। বৃক্ষ বৃদ্ধ হয়। এই অবস্থায় লেখক কত দিন লেখক থাকতে পারেন? তাঁরও তো ক্ষয় আছে। শারীরিক ক্ষয়ের প্রশ্ন তো আছেই। লেখক সত্তারও তো ক্ষয় আছে।
সে কথা কতটা মনে থাকে। লিখে লিখে পাঠক তৈরি হয়ে গেলে লেখক লেখক হয়ে যান। তার পর তৈরি পাঠককে লেখক লেখা দিতে থাকেন। একটা সময় আসে— যখন দেখা যায়— পাঠক আর সে লেখা চাইছেন না। পাঠক আর আগের মতো স্বাদ পাচ্ছেন না। উপরন্তু নতুন নতুন পাঠক এসে গেছেন। তাঁরা নতুন খাবার চান। এই পালটে যাওয়া অবস্থা অনেক লেখক মেনে নিতে পারেন না। কিম্বা নিজেও নিজেকে বদলাতে পারেন না। ভাবেন— পাঠক যেমন নিচ্ছিলেন—তেমনই নিতে থাকবেন। এই দুঃখজনক অবস্থা সৃষ্টি হয় প্রধানত লেখকের জন্যে। আর সৃষ্টি হয় সম্পাদকের কল্যাণে। কোনও এক সময় লেখকের লেখা ছেপে সম্পাদক সাড়া পেয়েছিলেন। কয়েক বার সাড়া পেয়ে মনে হয় নিরন্তর সাড়া পেয়ে যাব।
পত্রিকার রথ নিজের গতিতে সর্বদাই কিছুটা গড়গড় করে গড়ায়। সেই গড়গড়ানো লেখকের লেখার সাড়া ভ্রমে সম্পাদক নিরন্তর যদি পাঠকের ওপর লেখককে চাপিয়ে দেন—তখনই দুঃখের ঘটনা ঘটে।
পাহাড়, নদী, গাছের কর্মকাণ্ড বা ক্ষয় হঠাৎ বোঝা যায় না। এদের জয় বা ক্ষয়- দুটোই খুব বড়। কিন্তু ধীরে ধীরে। তাই দেখা যায় না। সে তুলনায় লেখক একজন মানুষ মাত্র। জেমা, অভিমান, অহম্ ইত্যাদির পুঁটুলি এই লোকটির ক্ষয় ও জয় বেশ চোখে পড়ার। তাই বোধ হয় তাঁর অবসর নেওয়ারও একটা সময় আছে।
কিন্তু ঘটনা দেখা যায় অন্য রকম।
আমরা লেখক। অন্য গ্রহ থেকে এসে এই ধরাধামে অবতীর্ণ হয়েছি। নিত্য প্রসবিনী। নিত্য প্রকাশমান। অশক্ত না হওয়া অবধি লিখে যাব।
নিষ্ঠুর সময় বালির ঝাপটায় অপ্রয়োজনীয় জিনিস চাপা দিয়ে ঢেকে ফেলছে। পাহাড়ের গা বর্ষার জলে ক্ষয় হয়ে ধসে পড়ছে। মোহনা থেকে পালটা ধাক্কায় পলি ফিরে এসে নদীর বুকে চর তুলে দিচ্ছে। চার হাজার বছরের প্রাচীন রেড উড গাছ সভ্যতার পর সভ্যতার জন্ম ও মৃত্যুর ফেনা গায়ে মেখে নিয়ে নিজের উচ্ছেদের দিনটি শুনতে থাকে। আর একজন লেখক — সামান্য মানুষ— তিনি কী করে প্রকৃতির নিয়ম অতিক্রম করবেন?
সংঘর্ষ, আবিষ্কার, নিজের মুখোমুখি দাঁড়ানোর ব্যাপারটা লেখকের ভেতর থেকে যেদিন উবে যায়— প্রাকৃতিক কারণেই উবে যেতে বাধ্য— তখন লেখককে প্রধানত মাথার ভেতরে বীজ বুনতে হয় গল্পের। লিখতে লিখতে সেই গল্পগাছের বৃত্তে ফুল আসে। তা দেখতে হয়তো ভালো। কিন্তু তা ফুল নয়।
বিষ্ণুপুর থেকে বাঁকুড়া যাবার পথে জ’পুরের জঙ্গলে দেখেছি— পুরনো গাছের জায়গায় তরুণ শাল চারা বসানো হচ্ছে।
লামডিং থেকে বিশ মাইলের ভেতর চা বাগানে দেখেছি ৬০ বছর বয়সের চায়ের ঝাড়কে লোহার চেনে বেঁধে ট্রাক্টর শেকড়-শুদ্ধ টেনে তুলছে। জানলাম, চায়ের ঝাড়ের আয়ু মানুষের মতোই। পীচে বালক, বিশে জওয়ান, চল্লিশে প্রবীণ, ষাটে বিদায়ী।
তাই— ভাবছিলাম, বৃক্ষ যদি বৃদ্ধ হয়— তাহলে....”
বই প্রকাশ অন্য ব্যাপার। সেখানে অর্থের যোগাযোগ থাকলেও ভাগ্যের একটা গভীর সম্পর্ক আছে। এদেশে অধিকাংশ লেখক নিজের খরচে বই প্রকাশ করেন। এমনকি জনপ্রিয় বিখ্যাত লেখকদের অনেকেই প্রথম বইটা নিজের খরচে প্রকাশ করেছিলেন। তবু কী এক দুঃসাহসে আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আগ্রহী প্রকাশক না পেলে নিজের খরচে কোনো বই প্রকাশ করবো না। ২০১৭ সালে উপনিবেশ চট্টগ্রামের পাণ্ডুলিপি যখন মাঝামাঝি তখন থেকেই সিদ্ধান্তটা পাকা ছিল। আমার মতো অচেনা লেখকের বই কে প্রকাশ করবে নিজের গরজে এবং নিজের খরচে সেটা নিয়ে মাথা ঘামাইনি কখনো। বই লিখে আয় করা তো সুদূর স্বপ্ন। ২০২০ সালের শেষদিকে বই প্রকাশ চুড়ান্ত হবার প্রাক্কালেও আমি পূর্বস্বরের মইনুল ভাইকে বলছিলাম, আপনি খামাকা এতগুলো টাকা বিনিয়োগ করছেন। দশটা বইও বিক্রি হবে না। তিনি আত্মবিশ্বাস নিয়ে মৃদু হেসে বলেছিলেন, এই বইটা বিক্রি হতে দশ বছর লেগে গেলে আমার ক্ষতি নেই। আমি একটা ভালো কাজ করতে চাই। সেই বই ২০২১ সালের মার্চের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ হবার চার মাসের মধ্যে যখন প্রথম সংস্করণ শেষের দিকে শুনলাম, তখন সত্যি বিস্মিত হবার পালা। তখন করোনার সময়, বইয়ের দোকান সব বন্ধ। অনলাইনেই কেনাবেচা। প্রচ্ছদ দেখেই এত বই কিনলো? লেখক হিসেবে আমার নামটা তো পরিচিত নয়। এটাকে ভাগ্য বলছি আমি। মাঝে দুবছর কোনো বই প্রকাশ হয়নি। কিন্তু বেশ কয়েকজন নামকরা প্রকাশক যোগাযোগ করে পাণ্ডুলিপি চাইতে শুরু করেছেন। অগ্রিম রয়েলটিও অফার করছেন। এগুলো সত্যি অভাবিত। ২০২৪ সালে বাতিঘর ও কথাপ্রকাশ থেকে আরো দুটো বই প্রকাশ হলো। ভেবেছিলাম এগুলো তেমন বাজার পাবে না। প্রথমটা কোনো কারণে প্রচ্ছদ দেখে কিনে ফেলেছে। কিন্তু বইমেলার শেষ সপ্তাহে প্রকাশ হবার পর দুই প্রকাশনীতেই দুটো বই বেস্টসেলার তালিকায় উঠে গেল। যার মধ্যে কথাপ্রকাশের বইটা এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় মুদ্রন আনতে হলো। বাতিঘরের বইটা মুদ্রনের অর্ধেক শেষ একসপ্তাহেই। অচেনা অজানা পাঠকদের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা এবং রিভিউর কথা বলতেও সংকোচ হয়। পাঠকের বড় অংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষক এমনকি ভিসিও আছেন। বই প্রকাশের এমন অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে সুখকর।
এই তিনটা বইয়ের মাধ্যমে পাঠকের যে ভালোবাসা পেয়েছি তা এক জীবনের জন্য যথেষ্ট। জীবনে আর লেখালেখি না করলেও কোনো অতৃপ্তি থাকবে না। তবু এখনো লিখছি। কারণ লেখালেখি একটা নেশা। লিখলেও সবটুকু প্রকাশযোগ্য মনে করি না। আমি গত দশ বছরে যে পরিমাণ লিখেছি তার ১০ভাগও প্রকাশ করিনি। অধিকাংশ লেখাই অপ্রকাশিত থেকে যাবে। আমি নিজের আনন্দের জন্য যা লিখেছি তার সবটা পাঠকের ঘাড়ে চাপানোর কোনো মানে হয় না। আমার হাতে অন্তত ৬জন আগ্রহী প্রকাশক আছে, যার মধ্যে চারজনই দেশের শীর্ষ প্রকাশক। এখন চাইলে আমি যে কোনো পাণ্ডুলিপি তাদের দিতে পারি। কিন্তু সেটা করছি না। দুটোর বেশি পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করতে চাই না। ২০২৫ সালের বইমেলার জন্য দুই প্রকাশক ইতোমধ্যে পাণ্ডুলিপি নিয়েছে। সেই বইগুলো পাঠক কিভাবে নেবে জানি না। যদি পাঠক বিমুখ হয়, প্রকাশকের মুখও বেজার থাকবে। তখন লেখককে ভাবতে হবে, পরের পাণ্ডুলিপি প্রকাশ করবে কিনা। অর্ধসমাপ্ত পাণ্ডুলিপিগুলো শেষ করবে কিনা। বুঝতে হবে লেখকের অবসর নেবার সময় হয়ে গেছে। প্রকাশনা জগত থেকে সরে গিয়ে শুধু নিজের জন্য লেখালেখি করতে পারেন। বড়জোর ইবুক প্রকাশ করে বিনামূল্যে বিতরণ করতে পারেন। লেখকের অবসর বিষয়ে একটা দরকারী কথা। লেখকের অবসর দুরকম। একটা হলো পাঠকের কাছ থেকে অবসর নেয়া, আরেকটা হলো নিজের কাছ থেকে অবসর নেয়া। বই প্রকাশ না করলে পাঠকের কাছ থেকে অবসর নেয়া হয়ে গেল। কিন্তু নিজের আনন্দের জন্য যতদিন লিখতে ইচ্ছা করে ততদিন লিখতে পারেন। সেগুলো প্রকাশ না করলে এমন কোনো ক্ষতিবৃদ্ধি নেই। আমার নিজের কাছে যখন মনে হবে আমি পাঠকের জন্য নতুন কিছু দিতে পারছি না, তখনই থামিয়ে দেবো লেখা।
Wednesday, April 10, 2024
ঈদসংখ্যার পাঠক প্রতিক্রিয়া
গত পাঁচ বছর ধরে শুধু সিল্করুটের সংখ্যায় লিখতাম। এই প্রথম একাধিক ঈদ সংখ্যায় লিখেছি। চারটি ঈদ সংখ্যায় লেখা একটু বাড়াবাড়ি। কিন্তু সম্ভব হয়েছে আগে থেকেই তৈরি লেখা ছিল বলে। সম্পাদকগণ অনুরোধ করেছে বলে নয়। ঈদ সংখ্যায় আমি কখনো ফরমায়েশি লেখা লিখিনি। চারটির মধ্যে তিনটি লেখাই অপ্রত্যাশিত পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছিল। তার মধ্যে দুটো এখানে তুলে রাখলাম।
১.
প্রথম আলো : ''রাজকীয় জলদস্যুর দল : সম্রাট আকবর, রানী এলিজাবেথ ও ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির জন্ম''বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা।
আজ পড়লাম হারুন ভাইয়ের ' আমার 'শেখ দীন মোহামেদ' আবিষ্কার' প্রবন্ধটি। প্রায় আড়াইশ বছর আগের কাহিনি। পলাশীর যুদ্ধের দুই বছর পরে জন্ম নেওয়া এক বাঙালি কিভাবে তার উচ্চাকাঙ্খা আর দুরন্ত সাহসে ভর করে এক সাহেবের সঙ্গে করে বিলেতে পাড়ি জমায়, সেখানে সংসার পাতে, ব্যবসায় উন্নতি করে --- সর্বোপরি প্রথম ভারতীয় হিসেবে ইংরেজিতে তার আত্মকাহিনী প্রকাশ করে তার রোমাঞ্চকর বর্ণনা আছে এই লেখাতে। পাটনা থেকে আয়ারল্যান্ড, তারপর সেখান থেকে ব্রাইটন --- পৃথিবীর এ প্রান্তে জন্ম নিয়ে অন্য প্রান্তে যখন এই বাঙালি তার জীবনের অধ্যায় সমাপ্ত করেছেন ততদিনে তিনি হয়ে উঠেছেন ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ দ্রষ্টা এবং সঙ্গত কারণেই, বিখ্যাত জন।
হারুন ভাইয়ের লেখা নির্মেদ, নির্ভার। তার লেখায় ইতিহাস স্পর্শ করে সাহিত্যের মর্যাদা।
তার আরও অনেক লেখা পড়ার আশায় রইলাম।
আনন্দম!
Wednesday, April 3, 2024
বই প্রকাশনার বাস্তবতা: এক প্রকাশকের অভিজ্ঞতা
সুমেরু মুখোপাধ্যায়: