ক্লাইভের গর্দভ
১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধের পর সারা দুনিয়ার কাছে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে পরিচিতি পেলেও নিজের দরবারে নবাব মীর জাফরের অন্য একটা উপাধি জুটেছিল ঘনিষ্টজনদের কাছে।
পলাশী যুদ্ধের পরের ঘটনা। মুর্শিদাবাদের গদিতে মীর জাফরকে বসিয়ে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি ধুমিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছিল। নবাব মীর জাফর তখন কর্নেল ক্লাইভের পরম নতজানু বন্ধু। দরবারে মীর জাফরের এক ঠোঁটকাটা বন্ধু ছিল। একবার মির্জা সমসের নামের সেই বন্ধুর সাথে ক্লাইভের ইংরেজ বন্ধুদের কোন বিষয়ে বাকবিতণ্ডা হয়েছিল।
কথাটা মীর জাফরের কানে গেলে সে বন্ধুকে ডেকে তিরস্কার করে বললো, "ছি ছি মির্জা! তোমার কী কর্নেল সাহেবের মর্যাদা সম্পর্কে কোন ধারণা নাই? তার বন্ধুদের সাথে এমন ব্যবহারের সাহস হয় কী করে?"
উত্তরে মির্জা সমসের কৃত্রিম ভয় পাওয়া সুরে জানালো, "সে কী কথা জাঁহাপনা? সেটা ভালো করে জানি বলেই তো কর্ণেল সাহেবের মুখের দিকে তাকাবার দুঃসাহসও করি না। প্রতিদিন ভোরে উঠে ক্লাইভের গাধাটিকেই তিনবার কুর্নিশ করে থাকি।"
উপস্থিত সবাই হাসিতে ফেটে পড়লো। ব্যস! সেখান থেকে কথাটা ছড়িয়ে পড়লো। ইংরেজ লিখিত ইতিহাসে ক্লাইভের গর্দভ নামে পরিচিত হলো মীর জাফর।
গর্দভটাকে তিন বছর সহ্য করার পর ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানিও বিরক্ত হয়ে উঠলো। তার কাছ থেকে যতটা লাভ আশা করেছিল ততটা পাওয়া যাচ্ছিল না। তার চেয়ে বড় কথা কোম্পানির কর্মচারিদের খাই বহুগুন বেড়ে গিয়েছিল।
পলাশী যুদ্ধের বকেয়া ২৫ লাখ রুপী
১৭৬০ সালের ফেব্রুয়ারীতে লর্ড ক্লাইভ ইংল্যাণ্ডে ফিরে গেল বাক্সভর্তি স্বর্ণ আর রৌপ্যমুদ্রা নিয়ে। জুলাই মাসের দিকে কোম্পানির নতুন গভর্ণর জেনারেল হিসেবে এলেন হেনরি ভ্যানসিটার্ট। কোম্পানির আর্থিক অবস্থা তখন বেশ খারাপ। কোম্পানির আর্থিক অবস্থা দুর্বল হলেও কর্মচারীদের ব্যক্তিগত অর্থের ভাণ্ডার অনেক বেশী সমৃদ্ধ ছিল। সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর পর মীর জাফরের নতজানু শাসন ব্যবস্থায় ইংরেজ কর্মচারীরাই একেকজন নবাব হয়ে উঠেছিল। লাগামছাড়া দুর্নীতিতে জড়িয়ে বিপুল অর্থ উপার্জন করেছিল একেকজন। অথচ সৈন্যদের বেতন দেবার মতো টাকাপয়সাও নেই তহবিলে। মীর জাফর ক্ষমতায় বসার জন্য ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানিকে মোটা অংকের ঘুষ দেবার চুক্তি করেছিল। সেই টাকার অধিকাংশ পরিশোধ করা হলেও ২৫ লাখ রুপী বকেয়া ছিল। তিন বছর ধরে বকেয়াটা আদায় করতে পারছিল না কোম্পানি।
ভ্যানসিটার্ট দায়িত্ব নিয়ে দেখলেন কোম্পানির তহবিলে নগদ অর্থ মাত্র ১০ লাখ রুপী। যা দিয়ে ইংরেজ সৈন্যদের এক বছরের বেতনও হবে না। সৈন্যদের বেতন বাবদ মাসে এক লাখ রুপীর দরকার হয়। মীর জাফরের কাছেও নগট টাকার সংকট। সব বুঝেশুনে মীর জাফরকে প্রস্তাব দেয়া হল কোম্পানির বকেয়া মেটাতে নগদ অর্থের বদলা হিসেবে চট্টগ্রামের দেওয়ানীত্ব প্রদান করতে। চট্টগ্রামের রাজস্ব আয় দিয়ে কোম্পানি বকেয়া পাওনা তুলে নিতে পারবে। যদি সেটা অসম্ভব হলে চট্টগ্রামে কোম্পানির কুঠি গড়ার একটা জায়গা বরাদ্দ করা হোক। কিন্তু মীর জাফর কোন প্রস্তাবেই রাজী হয় না।
ভ্যানসিটার্ট খুব বিরক্ত হলেন মীর জাফরের প্রত্যাখানে। ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানি তখনো সরাসরি ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ শুরু করেনি। এবার নতুন করে ভাবতে শুরু করে কোম্পানি। আরো একটি কারণ ছিল। কিছুদিন আগে হুগলি নদীতে ওলন্দাজ যুদ্ধ জাহাজকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল মীর জাফর। কোন বড় সমস্যা না হলেও বিষয়টা ইংরেজ শক্তির জন্য অস্বস্তিকর এবং নিরাপত্তার জন্য হুমকি ছিল। সুতরাং মীর জাফরের জায়গায় এমন কাউকে বসানো উচিত যাতে কোম্পানি নিরুপদ্রপ থাকতে পারে। প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানোর ক্ষেত্রে ইস্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানির দক্ষতা অতুলনীয়। কলকাতায় ইংরেজ কর্তাদের আলোচনা শুরু হলো।
প্রথম বিকল্প হিসেবে আলোচনায় এলো মীর জাফরের জামাতা মীর কাশিমের নাম। তার সাথে লর্ড ক্লাইভ এবং ব্ল্যাকহোল খ্যাত হলওয়েলসহ কিছু শীর্ষ ইংরেজ কর্মকর্তার সুসম্পর্ক ছিল। লর্ড ক্লাইভের পদত্যাগ ও ভ্যানসিটার্টের আগমনের মধ্যবর্তী সময়ে হলওয়েল কয়েক মাসের জন্য গভর্ণরের দায়িত্বে ছিলেন । সেই সময়ে মীর কাশিমের সাথে হলওয়েলের সুসম্পর্ক তৈরী হয়। মীর কাশিম বয়সে তরুণ, প্রতিভাবান, দূরদর্শী এবং ইংরেজদের শুভাকাংখী বলে পরিচিত।
কোম্পানি নিজেদের সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করার পর ভ্যানসিটার্টের অনুমোদন নিয়ে গোপনে মীর কাশিমের সাথে যোগাযোগ শুরু করলো। কিছুদিন আগে বজ্রপাতে মীরজাফরপুত্র মীরণের মৃত্যু ঘটার পর থেকে মীর কাশিমের মনে সিংহাসনের লোভ জাগতে শুরু করে। ইংরেজরা জানতো সেটা। তবে সেটা ছিল পাটনার সিংহাসন, বাংলার নবাবীত্ব তো স্বপ্নেরও অগম্য ছিল। কোম্পানির কাছ থেকে বাংলার সিংহাসনের প্রস্তাবটা পেয়ে মীর কাশিম দ্বিগুন আনন্দে রাজী। মীর কাশিমের সাথে চুক্তি সম্পাদন হলো ২৭শে সেপ্টেম্বর ১৭৬০। সেই চুক্তিতে মীর কাশিম শুধু চট্টগ্রাম নয়, সাথে বর্ধমান ও মেদিনীপুরের দেওয়ানীত্বও দিয়ে দিলো। সুযোগ পেয়ে কোম্পানি এই দুটো পরগনা অতিরিক্ত নিয়ে নিল।
মীর জাফরের সাথে আলোচনা প্রহসন
মীর কাশিমের সাথে সমস্ত পরিকল্পনা চুড়ান্ত করার পর মীর জাফরের সাথে আলোচনার একটা সপ্তাহব্যাপী প্রহসনের আয়োজন করে কোম্পানি। প্রহসনের শুরুতে ১২ অক্টোবর ১৭৬০ গভর্ণর ভ্যানসিটার্ট নবাব মীর জাফরের কাছে এসে গুরুতর কিছু সমস্যা তুলে তার সমাধান দাবী করলেন। যেমন- মীর জাফরের নিরাপত্তার কাজে যেসব ইংরেজ সৈন্য আছে দীর্ঘদিন তাদের বেতন বকেয়া, তার নিজের সৈন্যরাও বেতন না পেয়ে বিদ্রোহী, তার মন্ত্রীরা দুর্নীতিবাজ, দেশে পন্য সরবরাহ সংকট, পলাশীর তিন বছর পরও চুক্তির বাকী টাকা দিতে ব্যর্থ, ইত্যাদি। এগুলোর সমাধান না হলে তার জন্য বিপদ।
ভ্যানসিটার্টের বক্তব্য শুনে মীর জাফর টের পেল যে কোথাও একটা ঝামেলা তৈরী হয়েছে। অভিযোগগুলো অপ্রিয় হলেও সত্যি। তবু কোনভাবে উৎরে যাবার উপায় আছে বলে তার বিশ্বাস। ইংরেজরা মীরজাফরকে বিশ্বাস করে।
১৫ অক্টোবর মীর জাফর গভর্ণরের কুঠিতে আসে বৈঠক করতে। সেখানে ভ্যানসিটার্টের সাথে নানান বিষয়ে আলাপ আলোচনা চলে, কিন্তু কোন সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হয় না। ১৬ অক্টোবরও সেইরকম আলোচনার বাহানা চললো।
১৮ অক্টোবর মীর জাফর আবারো কাশিমবাজারে গেলে তাঁকে কোম্পানির অভিযোগ সমূহ পুনরাবৃত্তি করে বলা হলো মীর জাফরের পারিষদগন তার তো অমঙ্গল করছেই, সেই সাথে কোম্পানিরও ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মীর জাফর যেন অবিলম্বে তাদের বরখাস্ত করে নতুন লোক নিয়োগ দেয়।
তারপর ভ্যানসিটার্ট জিজ্ঞেস করলেন- মীর জাফরের চোখে সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি কে?
মীর জাফর একটু ভেবে জানালো- মীর কাশিম।
আসলে মীর কাশিমকে সম্পূর্ণ বিশ্বাস করতো না মীর জাফরও। কিন্তু হাওয়া কোন দিকে সেটা তার জানা ছিল না। ভেবেছিল অন্যদের চেয়ে জামাতা হিসেবে মীর কাশিম তার জন্য নিরাপদ হতে পারে।
উত্তরটা কোম্পানির জন্য অপ্রত্যাশিত কিন্তু খুব কাঙ্খিত ছিল। কাজটা আরো সহজ হয়ে গেল। মীর কাশিমকে বসাবার জন্যই তো এত বাহানা। এখন দরকার রক্তপাতহীন শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের মোক্ষম একটা সময়।
মীর কাশিমের নাম বললেও তার হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিতে রাজী নয় মীর জাফর। বরং আরো কিছু সময় পার করা যায় কিনা সেই পথের খোঁজ করছিল। আপোষে ক্ষমতা ছাড়বে না মনে হওয়াতে মীর জাফরকে এবার ভয় দেখানো হলো। বলা হলো তার মাথার উপর একটা ভয়ানক বিপদ দাঁড়িয়ে আছে। এমনকি নিজের প্রাসাদেও সে নিরাপদ নয়। দ্রুত সিদ্ধান্ত না নিলে বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। তাকে ২৪ ঘন্টা সময় দেয়া হলো বিকল্প প্রস্তাবটা ভেবে দেখার জন্য।
মধ্যরাতের অভিযানে মীর জাফরের পদচ্যুতি
সেই ২৪ ঘন্টা সময় দেয়াও একটি বাহানা। কোম্পানি ১৯ অক্টোবর রাতে মীর জাফরকে সরিয়ে দেবার সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছিল আগেই। সে রাতটা ছিল হিন্দুদের কোন একটা পুজোর রাত। প্রজারা যার যার ঘরে ব্যস্ত থাকবে, বাইরে লোক সমাগম হবে না তেমন। যদিও দেশের তখন যে অবস্থা ইংরেজদের বাধা দেবার কোন শক্তিই নেই কারো। তবু কোন ঝুঁকি নিতে চাইলো না কোম্পানি।
রাত তিনটার দিকে কর্নেল কেলডের নেতৃত্বে ইংরেজ সৈন্যের একটি বাহিনী নদী পার হয়ে মীর কাশিমের বাহিনীর সাথে যোগ দিল। দুই বাহিনী মিলে মীর জাফরের প্রাসাদ ঘিরে ফেললো চুপিসারে। কোন রকম রক্তপাত বা ঝামেলা এড়াতে কর্নেল কেলডের হাতে একটি পত্রও দিয়েছিলেন গভর্নর ভ্যানসিটার্ট। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে যেহেতু মীর জাফর বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কোন পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন সে কারণে কোম্পানি নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে একটা পরিবর্তন ঘটিয়ে ফেলার।
প্রাসাদের ভেতরে ঢুকে কর্নেল কেলড মীর জাফরকে বললো, কোন ঝামেলা না করে সুবোধ বালকের মতো মীর কাশেমের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয় যেন তখুনি।
মাঝরাতে ঘুম ভাঙ্গা চোখে মীর জাফর হতভম্ব। বুঝে ফেললো আর উপায় নাই। সে আগেরদিন আঁচ করেছিল এমন কিছু ঘটতে পারে। কিন্তু এমন অদ্ভুত সময়ে একেবারে অপ্রস্তুত অবস্থায় বিপদটা এসে পড়বে সেটা ভাবেনি। ইংরেজের সব শর্তে রাজী হয়েছিল, তবু ২৪ ঘন্টা না যেতেই তাকে নিজের প্রাসাদেই ঘিরে ফেললো একদল সৈন্য, যাদেরকে নিয়ে তিন বছর আগে সে নবাব সিরাজকে সিংহাসনচ্যুত করেছিল। ইতিহাস যেন অন্যভাবে প্রতিশোধ নিতে তৈরী হয়ে আছে। মীর জাফর প্রথমে ক্ষুব্ধ হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে দেখে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে রাজী হয়ে গেল। এসব করতে করতে ভোর হয়ে আসছিল। দিনের আলোতে নতুন কোন ঝামেলা হতে পারে ভেবে ইংরেজ বাহিনি অসহিষ্ণু হয়ে উঠলো।
কিছুক্ষণ পর ভ্যানসিটার্ট নিজেও এসে উপস্থিত হলেন ঘটনাস্থলে।
আর দেরী করা যায় না। কর্নেল কেলডের ইঙ্গিতে সৈন্যরা পালকি নিয়ে হাজির হলো। কয়েকজন প্রাসাদের ভেতরে প্রবেশ করে মীর জাফরকে প্রায় কোলে করে নিয়ে পালকিতে তুলে দিল। পালকিটা তাকে নিয়ে যাবে নদীর ঘাটে অপেক্ষমান নৌকাতে। নৌকাটি যাবে কলকাতায়।
ক্ষমতাচ্যুত মীর জাফর সেইক্ষণে সিরাজের পরিণতি বরণ করতে যাচ্ছে ভেবে আতঙ্কিত হলো। ক্ষমতার সাথে প্রাণটাও চলে যায় কিনা। তাই পালকিতে উঠার সময় ভ্যানসিটার্টকে দেখে ইংরেজের বন্ধু হিসেবে মিনতি করলো তাকে যেন এখান থেকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়। নইলে মীর কাশিমের বাহিনী তাকে খুন করতে পারে।
বিশ্বাসঘাতকটির জন্য এটা ইতিহাসের একটা তামাশা। যাদের হাতে ক্ষমতাচ্যুতি ঘটলো, তাদের কাছেই আশ্রয় প্রার্থনা! এটা তো কোম্পানিরও চাওয়া। ভ্যানসিটার্ট তাকে আশ্বাস দিয়ে জানালো কলকাতায় সে নিরাপদে থাকবে।
আশ্বাস পেয়ে কলিজায় পানি আসলো তার। পালকিতে ওঠার পর মীর জাফর তার স্ত্রীকে সাথে আসার জন্য আহবান করলো। কিন্তু ঠিক মোক্ষম মুহুর্তে তার বউও বিগড়ে গেল। জানিয়ে দিল মীর জাফরের সাথে যাবে না কিছুতেই। মীর জাফরকে একাই যেতে হবে। সে প্রাসাদে জামাতা ও কন্যার সাথেই থাকবে। স্ত্রীর প্রত্যাখানে মীর জাফরের অবস্থা আরো করুণ। মীর জাফরের স্ত্রী তার সাথে অনিশ্চিত যাত্রার চেয়ে জামাতা ও কন্যার সাথে মুর্শিদাবাদের প্রাসাদে বাস করা শ্রেয় ভেবেছিলেন। বেচারা মীর জাফর। অনেক ধনরত্ন দাসী বাঁদী রক্ষিতাদের নিতে পারলেও নিজের স্ত্রীকে সাথে আনতে পারলো না এই আক্ষেপে দগ্ধ হয়ে নৌকায় উঠে পড়লো।
পূর্বাকাশে তখন সূর্যের আভা। ভ্যানসিটার্ট স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন। বুড়োটাকে এত সহজে কব্জা করা যাবে ভাবেননি তিনি। তেমন কোন ঝামেলা ছাড়াই ভারতের সবচেয়ে সমৃদ্ধ রাজ্যের ক্ষমতার পটপরিবর্তন ঘটানো যাবে সেটাও অপ্রত্যাশিত ছিল। মীর জাফরকে কলকাতা নিয়ে রাখতে কোম্পানির কোন আপত্তি নেই। তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হলেও সে এখনো ইংরেজের বিশ্বস্ত চাকরের মতোই আচরণ করছে। পলাশী যুদ্ধের পর বন্ধুবান্ধবেরা যে তাকে 'ক্লাইভের গর্দভ' উপাধি দিয়েছিল সেটা একটুও অযৌক্তিক ছিল না।
তথ্যসুত্র:
1. A Narrative of the transactions in Bengal from the year 1760-1764 by Henry Vansittart
2. Original Papers relative to the disturbances in Bengal by Henry Vansittart
3. Scotts History of Bengal
4. মীর কাশিম - অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়
৫. Memoirs of the Revolution of Bengal - William Watts
-------------------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment