Monday, January 9, 2017
রবীন্দ্রনাথের ছিন্নপত্র এবং ছিন্নপত্রাবলী নিয়ে
বিখ্যাত কবি সাহিত্যিকদের চিঠিপত্রগুলোই একেকটি শিল্পকর্ম। শুনেছি টলস্টয়ের চিঠির রেকর্ড কেউ ভাঙ্গতে পারেনি। টলস্টয়ের চিঠি পড়া হয়নি জানি না সেই চিঠির রূপরস বৈচিত্র্য। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ও কাহলিল জিবরানের চিঠি পড়ার সুযোগ হয়েছে। এই দুজনের চিঠির মধ্যে যে শৈল্পিক অবয়ব আছে তা যে কোন সংবেদনশীল পাঠককে মুগ্ধ করবে। এই দুজনের চিঠির মধ্যে এমন কিছু উপাদান আছে যা একাধারে শিল্প, দর্শন এবং মনোবিজ্ঞান। মানুষের মনের বিচিত্র অনুভুতি খুব যত্নের সাথে প্রকাশিত হয়েছে এইসব চিঠিপত্রে।
'ছিন্নপত্র' সেরকম একটি বই। রবীন্দ্রনাথের প্রকাশিত চিঠির অধিকাংশ ইন্দিরা দেবীকে লেখা। ছিন্নপত্রে প্রকাশিত ১৫৩টি চিঠির মধ্যে ৮টি বাদে বাকী সবগুলোই ইন্দিরার। ছিন্নপত্রের চিঠিগুলোতে কিছু কাটছাট করা হয়েছে। আবার 'ছিন্নপত্রাবলী'তে সেই কাটছাটকৃত চিঠির সম্পূর্ন অংশ পাওয়া যায়। সম্পূর্ণ রবীন্দ্রসমগ্র হাতে পাওয়ার আগে আমার ধারণা ছিল না 'ছিন্নপত্রাবলী' নামে আলাদা একটি গ্রন্থ আছে। রবীন্দ্রসমগ্রের ১১তম খণ্ডের ছিন্নপত্রাবলীতে মোট চিঠির সংখ্যা ২৫২টি। এখানে ইন্দিরা দেবী ছাড়াও অন্যন্যদের কাছে লেখা চিঠিপত্রও আছে।
'ছিন্নপত্র' এমন একটি বই যা বারবার পড়েও তৃপ্তি মেটে না। এবং বয়সভেদে নানান রকমের মানব দর্শনের সন্ধান পাওয়া যায়। এই বৈচিত্রের কারণেই রবীন্দ্রনাথ আমাদের কাছে কখনো পুরোনো হয়ে যায় না। সব বয়সেই রবীন্দ্রনাথ বাঙালীর জীবনে প্রাসঙ্গিক ব্যক্তি হয়ে থাকেন। ছিন্নপত্রে ইন্দিরাকে লিখিত চিঠিগুলো সম্পর্কে রবীন্দ্রনাথ নিজে যা বলেছেন সেটি চিঠি সম্পর্কের ক্ষেত্রে সার্বজনীন একটি অনুভূতি। সেই অংশটি তাই বিশেষভাবে তুলে রাখার মতো।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment