বয়স হতে হতে মানুষের বন্ধুবান্ধবের সংখ্যা কমতে থাকে। একসময় যারা ঘনিষ্ট ছিল তাদের সাথে দূরত্ব বাড়তে থাকে। আমার বন্ধুবান্ধবের পরিধি বেশ বড় হলেও নিয়মিত বন্ধুর সংখ্যা খুব সংকুচিত হয়ে গেছে। এই সংকোচনের প্রধান কারণ রুচির পার্থক্য। Common Interest বা সমান আগ্রহ বলতে যে জিনিসটা আছে সেটার খুব অভাব। অধিকাংশ বন্ধুবান্ধবের সাথে আমি আলাপ জমাতে পারি না এই পার্থক্যের কারণে। তাদের আগ্রহ টাকাপয়সা, ক্যারিয়ার, বৈষয়িক সম্পদ অথবা ধর্মকর্ম। অথচ আমার এই চারটি বিষয়ের একটিতেও আগ্রহ নেই। আমার আগ্রহ বইপত্র। বইপত্রে আগ্রহ আছে তেমন বন্ধু আমার খুব কম। লেখালেখিতেও আমার কোন বন্ধুবান্ধব নেই। যখন আড্ডায় বসি তখন আমার আলাপের বিষয় থাকে না। আমি চুপচাপ বসে থাকি বোরিং শ্রোতা হিসেবে। অতি ধার্মিক কিছু বন্ধুবান্ধব তো রীতিমত উৎপাতের মতো। তাদের্ উপস্থিতিই আমি সহ্য করতে পারি না। অথচ এরা একসময় কত আধুনিক প্রগতিশীল ছিল। কিন্তু এরা কেউ কেউ এমনসব অশিক্ষিত অযৌক্তিক কথাবার্তা বলে মনে হয় এরা মাত্র গ্রামের মক্তব থেকে উঠে এসেছে। উচ্চশিক্ষিত বন্ধুবান্ধবের এই অধঃপতন দেখে খারাপ লাগে। কিন্তু যে যার রুচি নিয়ে জীবন কাটাবে তাতে আমার আপত্তি করার কিছু নেই। আমি শুধু এড়িয়ে থাকি। ফলে আমার আড্ডা দেবার মতো লোকের মধ্যে বাস্তবের বন্ধু খুব কম। তবু এর মধ্যে একটা সৌভাগ্য যে দুজন ঘনিষ্ট বন্ধু এখনো মোল্লাগিরির পথে হাঁটেনি। তাদের সাথে এখনো আগের মতো সময় কাটাতে পারি। ওই দুজনের কারণে আমি এখনো নিঃশ্বাস ফেলার জায়গা পাই। তাদের একজন ভার্সিটির বন্ধু, আরেকজন স্কুল বন্ধু। এই আকালে সেই দুই বন্ধুর কাছে অনেক কৃতজ্ঞতা।
No comments:
Post a Comment