Thursday, September 11, 2014

আলো ছায়ার গদ্য

১.
এক সময় রুটিন বদলে যাবে, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। একসময় পৃথিবী বদলে যাবে স্বেচ্ছায়। খোদ সময় বলে সে চলে না কারো ইচ্ছায়। একসময় একা থাকলেও খারাপ লাগবে না। সবকিছু থেকেও তো মাঝে মাঝে খারাপ লাগে। সবকিছু পেয়েও শূন্যতা বুকে বাজে। নির্ভরশীলতার দায় নেই। তবু স্বেচ্ছা নির্ভরশীলতার দায় চাপিয়ে দেই ফাঁকা জানালায়। যে জানালা আকাশ মেঘ বৃষ্টি আর ঝোপ জঙ্গলের আদিম সুঘ্রাণ বয়ে আনে, সেই জানালা কখনো কখনো দুঃস্বপ্নের অনাদরও বয়ে আনে। আমি কি সব জানি, আমি কি সব জানি? আমাদের যতটা জানানো হয় ততটা জানি। সংবাদে প্রকাশিত অংশটুকুই। না জানা অংশটা চমকে যাবার মতো। কখনো না জানাই ভালো। সবটুকু বলা হয় না, শোনার সময় থাকে না, কিংবা ধৈর্য। একসময় রুটিন বদলে যাবে, ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায়। স্মৃতি তখন পুরাকীর্তি। সময় হয়তো কীর্তিনাশা। নাটকের একাংশে সাজানো স্ক্রিপ্ট, অসমাপ্ত বই, ভুল গানের অনাচার, দীর্ঘশ্রুত মিথ্যা, অসময়ের ছেদবিন্দু, প্রতিটি সম্পর্কহীন দৃশ্য, অপাত্রের ফুটো দিয়ে গড়িয়ে হারিয়ে যায়। বিস্মরণ যখন অনন্ত আশ্রয়,তখন তোমার বিলম্বিত উপস্থিতি। শেষ কথাটি বকেয়া থেকেই যাবে।

২.
একটা সত্যি প্লেনের বায়না ধরেছো। আগের প্লেনটি বাতাস ভর্তি শুধু। ভেতরে কিছু নেই, মাকাল ফলটি। দেখতে বড়ো, উড়তে অক্ষম। এখন একটি সত্যি প্লেন আসছে। সত্যি সত্যি, তিন সত্যি। দেখতে ছোট, উড়তে পারে। অনেক দূরে নেবে তোমায়। শুধু রিমোট সামলে রেখো। যাবার আগে আগের প্লেনের বাতাস ছেড়ে ভাঁজটি করে দেরাজে ঢুকিয়ে রেখো। কখনো যদি বিনা বাধায় স্বাধীন কোথাও উড়তে ইচ্ছে করে, ভাজটি খুলে গ্যাস বেলুনের বাতাস ভরে আকাশ জুড়ে পাখা মেলো।

৩.
ওটা এক চিরচেনা ঠাঁই। এই কিছুকাল আগেও। ওখানে শুধুই সবুজ। ভেতরে বাইরে সবখানে। ছিল ছায়া, এলোমেলো ডালপালা জঙ্গল, তরতাজা ভোরের শিউলি, মাধবী লতায় রোদের ঝিলিক। পথিকের মেঠোপথ। মহাসড়ক সুদূর স্বপ্ন। ঘাসের গালিচায় আলোর বিকেল। রাত্রিসজ্জায় জ্যোৎস্নার নকশা। ছায়াপথের আলোয় ঘুমের আয়োজন। এক বাড়ি নিঝুম। ওই ঠাঁই, এই নির্জনতা আমার খুব চেনা। আমি তাদের কখনোই ভুলি না। আমি রাখলেও মহাকাল এসব কিছুই মনে রাখবে না।

৪.
বইটা যথেষ্ট ভালো, কিন্তু মলাট ভালো না। শুধু মন্দ মলাটের জন্য একটা ভালো বই নষ্ট হয়ে যাবে।


No comments: