হুট করে সেদিন বান্দরবান গেলাম একটা রাত সপরিবারে পাহাড়ের ঘ্রান নিতে। হিলসাইড রিসোর্টের একটা কটেজে বুকিং দিয়েছিলাম আগেই। ওই জায়গায় বরাবরই দারুণ সময় কাটে। এবার ওশিন শিহানকে নিয়ে যাওয়াতে আরো মজা হলো। ওদের এই প্রথম পাহাড়ে যাওয়া। রিসোর্টে ঢুকতেই রিগ্রিখ্যাং রেস্তোরা। এই রেস্তোরায় বেশ প্রশস্ত একটা ছাদের মতো বারান্দা আছে। সেখানে দাড়ালে দূর পাহাড়ের নীরাভ হাতছানি, সামনের জঙ্গল, শংখ নদী। যদিও দশ বছর আগে প্রথমবার দেখার ধাক্কামারা অনুভুতিটা এখন আর নেই, তবু ওটাকে দেখলেই মনে হয় পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তিময় স্থানে চলে এসেছি। হাতে চায়ের মগ নিয়ে দূর দিগন্তে তাকিয়ে চুমুক দেবার আয়েশটার লোভেই আমি বারবার যেতে চাই ওখানে। ওই ভালো লাগার কোন তুলনা হয় না।
রেস্তোরার সামনে একটা জালি দেয়া ঘরে বাচ্চাদের জন্য লাফালাফি করার একটা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ওটা পেয়ে ওশিনরা তুমুল উৎফুল্ল। সারাক্ষণ কেবল লাফাতেই আছে। আমরা আর কোথাও যাইনি। রিসোর্টেই পাহাড় জঙ্গল দেখে ঘুরে কাটিয়েছি। রেস্তোরায় বসে আড্ডা দেয়া, কটেজে ফিরে কিছুক্ষণ গড়াগড়ি। তারপর আবারো রেস্তোরা। পাহাড়ে একটু ঘোরাঘুরি। ছবি তোলাতুলি ইত্যাদি। দিনভর এই করেই কেটেছি। পাহাড়ের বাতাসটা এত মিষ্টি একদম নেশা ধরিয়ে দেয়। আর ইচ্ছে করে ওখানেই থেকে যাই দিনের পর দিন। হঠাৎ হঠাৎ মেঘ এসে ঘিরে ধরে আমাদের। তখন ঝাপসা দশ দিগন্ত। মেঘগুলো এখানে বড্ড নীচুতে ওড়ে। হাত দিয়ে ছুয়ে দেয়া যায় প্রায়।
মাত্র দুদিন আয়েশ করেছি পাহাড়ের গায়ে হেলান দিয়ে। ফিরে আসার পর মনে হচ্ছে যেন সাতদিন কাটিয়ে এলাম। তবু আবারো ফিরে যাবার হাতছানি। আরো দূর পাহাড়ে। এবার আরো দীর্ঘ সময়ের প্রতিশ্রুতি।
No comments:
Post a Comment