১.
বিশ্বজুড়ে মানবজাতি কান্নাকাটি করছে। তাদের বিরাট সর্বনাশ হয়ে যাচ্ছে। সর্বশক্তিমানের কাছে করুণাভিক্ষা করছে। খুব স্বাভাবিক। সবাই নিজ নিজ প্রাণ রক্ষায় নিশ্চয়ই আকুল হবে। কিন্তু মানবজাতির এই দুর্দশায় অন্য প্রাণীগুলো কী ভাবছে? তারা কী বুঝতে পারছে মানুষ প্রাণীটা হঠাৎ করে অন্যরকম আচরণ করছে কেন? এটুকু নিশ্চয়ই বুঝতে পারছে মানুষের গতিবিধি নড়াচড়ার ধরণ বদলে গেছে মাসখানেক ধরে। গতিবিধির পরিবর্তন ছাড়া অন্য প্রাণীরা মানবজাতির এই দুর্দশা সম্পর্কে কিছুই বুঝতে পারছে না। মানুষ ছাড়া আর কোন প্রাণী তো লিখতে পড়তে শেখেনি। বনের পশুপাখিরা যদি পড়াশোনা জানতো আমেরিকা হয়তো এই সংকট উত্তরণের ভ্যাকসিনের জন্য চীনের দিকে তাকিয়ে না থেকে আফ্রিকার জঙ্গলে বিজ্ঞানীদের মিশন পাঠাতো। ২.
মানুষ জগতের শ্রেষ্ঠ প্রাণী বলে দাবী করে। কিন্তু সেই জগতের আকার কতখানি মানুষ সেটাও জানে না। অনেক উচ্চশিক্ষিত মানুষও জানে না আমাদের গ্যালাক্সিতে পৃথিবীটা করোনা ভাইরাসের চেয়েও ক্ষুদ্র। তবু যুগে যুগে চেঙ্গিজ, হালাকু, হিটলার, ট্রাম্পের মতো হাজারো নির্বোধ শক্তিমানেরা ইতিহাসের ক্ষুদ্র অংশ দুষিত করে যায় শ্রেষ্ঠত্বের নামে।
৩.
জীবনের উদ্দেশ্য কী? আমরা কেবল ভাববো অন্য প্রাণীরা জন্মেছে মানুষের সেবার জন্য আর মানুষ জন্মেছে তাদের খতম করার জন্য। অন্য প্রাণীদের উপর খবরদারী শেষে নিজেদের মধ্যে বিভেদের বেড়াজাল তৈরী করে পৃথিবীর সুস্থ বায়ুকে অসুস্থ করে তুলবো।
প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে অন্য সকল প্রাণীর প্রবৃত্তির শিক্ষায় জানে, পৃথিবীতে দুপেয়ে একটা প্রাণী আছে। তাদের হাতে থাকে বাড়তি অস্ত্র। তারা যখন তখন কারণ অকারণে আক্রমণ করতে পারে। তাদের দেখামাত্র পালাবার নির্দেশ আছে প্রবৃত্তির কাছ থেকে। মানুষ ছাড়া আর কোন প্রাণী নিজের দাঁত নখের বাইরে কোন অস্ত্র ব্যবহার শেখেনি এখনো। তাই মানুষের কাছ থেকে সাবধানে থাকে সব প্রাণী। শক্তি সুযোগ থাকলেও পরিকল্পিতভাবে মানব সমাজের উপর আক্রমণ করে না কখনোই। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষের কেশও স্পর্শ করে না কোন প্রাণী। কিন্তু অতি ক্ষুদে জীবানুরা মানুষকে নিয়ে কোন ভাবনা চিন্তা করে না। মানুষ যে এমন শ্রেষ্ঠ একটা জীব সেটাও তারা জানে না এবং তারা মানুষের বড় অস্ত্রের আঘাতে মরে না। তাই সুযোগ পেলে তারা মানুষের শরীরকে নিজেদের কলোনী বানিয়ে বংশবিস্তার করার চেষ্টা করে।
এপ্রিল ১৯, ২০২০
No comments:
Post a Comment