Tuesday, May 7, 2024

R and R

1.
You may own billions or trillions, but you can consume only what is allocated for you as of your final day. The only benefit of your ownership is a bunch of numbers and your imagination as an owner.

2.
The world should seriously consider whether so-called economic or industrial development should be continued. If development means destroying the environment on this planet, they should stop now. Right NOW!

হাতের কাছে প্রিয় কলম



কলম দিয়ে লেখালেখি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে অনেকদিন ধরে। টুকটাক নোট নেয়া, খসড়া পরিকল্পনার ঘষামাজা কিংবা দুচার পাতা ডায়েরি বাদে আর কিছুতে কলমের ব্যবহার নেই আজকাল। অধিকাংশ মানুষেরই এই অবস্থা। তবু আমার কাছে কলমের মতো প্রিয় জিনিস খুব কমই আছে। লেখালেখি না হলেও আমি কলমের একটা ছোট বাক্স হাতের কাছেই রাখি। আমার গত চল্লিশ বছরের কয়েকটা প্রিয় কলম-পেন্সিল সেখানে মজুদ আছে। সবগুলোই জীবনের নানান পর্বে প্রিয়জনদের কাছ থেকে উপহার পাওয়া। যে কলমগুলো এখনো সচল আছে সেগুলোই এখানে রাখা। যার মধ্যে মেকানিক্যাল পেন্সিলটা সবচেয়ে পুরোনো। পেন্সিল বলেই সচল আছে এখনো।


লেখার কাজ না থাকলেও যে কোন একটি কলম হাতে রাখার পুরোনো অভ্যেস আমার। কী বোর্ডে কাজ করার সময়ও যে কোন একটা কলম আমার পাশে থাকা চাই। কলমের নিঃশব্দ একটা ভাষা আছে। যেটা হাতে নিলেই বলতে থাকে, সময় কম, লিখতে থাকো।


এছাড়া না লিখতে না লিখতে আমার অনেক দামী কলমের কালি শুকিয়ে গেছে, সেগুলো ব্যক্তিগত সংগ্রহশালায় তুলে রেখেছি। সেই কলমগুলো নিয়ে একটা আক্ষেপ থেকে গেছে। শেফার, পার্কার, ওয়াটারম্যান জাতীয় দামী দামী যে কলমগুলো স্কুল বয়সে উপহার পেয়েছিলাম বাবার কাছ থেকে, সেগুলো দিয়ে ঠিকমত একটা পাতাও লিখিনি, ফুরিয়ে যাবার ভয়ে। তখন বুঝিনি, না লিখে রেখে দিলেও যে কোন কলম এমনিতেই ফুরিয়ে যায়।


প্রতিটি কলমের আলাদা গল্প আছে। প্রতিটি কলমের একটা করে ইতিহাস আছে।

১. পাইলট লেড পেন্সিল- ১৯৮৫ সাল: বাবা এনেছিলেন বিদেশ থেকে।
২. কোকাকোলা: ২০১৮ সাল- প্রিয় বন্ধুর উপহার
৩. গ্রীস থেকে আগত: ২০২১- ছোট ভাইয়ের উপহার
৪. কোরিয়া ১৯৯৯: কলিগের উপহার
৫. পেন্সিলটা ফাও, ওটা বাড়ির শিশুর কাছ থেকে নেয়া

Saturday, May 4, 2024

বিশ শতকের সৌভাগ্যবান লাজার সিলবারিস

 


কোনটা যে সৌভাগ্য আর কোনটা দুর্ভাগ্য সেটা মাঝে মাঝে গোলমাল পাকিয়ে যায়। আজকে যে লোকটা ভাবছে সে পৃথিবীর সবচেয়ে দুর্ভাগা, আগামীকাল হয়তো সেই লোকটাই নিজেকে দুনিয়ার সবচেয়ে ভাগ্যবান হিসেবে দেখতে পারে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মার্তিনিক দ্বীপের বাসিন্দা লাজার সিলবারিস ছিল সেরকম বিরল ভাগ্যবান এক মানুষ। বিশ শতকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভাগ্যবান লোক বলা হয় তাকে।
১৯০২ সালের ৭ মে তারিখেও ওই দ্বীপের সবচেয়ে ঘৃণিত মানুষ ছিল ২৬ বছর বয়সের সিলবারিস। ভয়ংকর সব অপরাধের কারণে তাকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল দ্বীপের সবচেয়ে দুর্ভেদ্য কারাগারের নির্জন এক গুহায়। পাহাড়ের গায়ে পাথরে নির্মিত ওই কারাগারে নিঃশ্বাস নেবার জন্য শুধু সামনের অংশে ছোট্ট ফোকর বাদে আর কোন দরোজা জানালা ছিল না। ওই কারাগার থেকে জীবনেও পালানো সম্ভব নয়।
কিন্তু তার ভাগ্যে লেখা ছিল অন্য কিছু। ১৯০২ সালের ৮ মে তারিখ সকালে ভয়ানক এক অগ্ন্যুৎপাতে মাত্র এক মিনিটের মধ্যে ওই দ্বীপের ৩০ হাজার বাসিন্দার সমাধি হয়েছিল উত্তপ্ত লাভার নীচে। চারদিন পর ধ্বংসস্তুপ থেকে আধপোড়া অবস্থায় শুধু একজনকে জীবিত উদ্ধার করা গিয়েছিল। তার নাম লাজার সিলবারিস। দুর্ভেদ্য পাথরের কারাগারই তাঁকে রক্ষা করেছিল।
লাজার সিলবারিস পরবর্তী জীবনে আমেরিকার বিখ্যাত সার্কাস দল বার্নাম এণ্ড বেইলির সাথে যুক্ত হয়ে ছোটখাট সেলেব্রিটি হিসেবে জীবন পার করেছে। তার বিজ্ঞাপনে লেখা থাকতো the man who lived through doomsday.

বাঁশ থেকে চাল

 




দিনাজপুরের সাঞ্জু রায় বাঁশ থেকে চাল সংগ্রহ করে বিস্ময় সৃষ্টি করেছেন। তাঁর দেখাদেখি গ্রামের আরো অনেকে বাঁশঝাড় থেকে ধান সংগ্রহ করে ভাত রান্না করে খাচ্ছেন। পরিবেশবিদরা আশঙ্কা করছেন ধান বাছতে বাঁশ উজাড় হতে পারে।
খবরটা পত্রিকার পাতায় দেখে ঘরের বোটানিস্টের কাছ থেকে মতামত চাইলাম। তিনি ছোটখাট একটা লেকচার দিয়ে বললেন:
"আসলে ভয়ের কিছু নেই। বাঁশের বংশের যখন আয়ু ফুরিয়ে যায় সে ফুলের মধ্যে ধানের জন্ম দিয়ে মৃত্যুবরণ করে।
ধান আর বাঁশ দুজনই একই বংশের ঘাস। মানে দুজনই ঘাস বংশের সন্তান। সেই বংশের নাম পোয়াসি। পোয়াসি বংশের দুই সন্তানের একজন বাম্বুসোইডি(বাঁশ) আরেকজন ওরাইজোইডি(ধান) পরিবারের সন্তান। অর্থাৎ ধান হলো ছোট বাঁশ, বাঁশ হলো বড় ঘাস। ধান-বাঁশ-ঘাসের মধ্যেকার এই সম্পর্ক লক্ষ কোটি বছর পুরোনো।
বাঁশ গাছে ধান পাওয়ার ঘটনা ৬০ থেকে ১২০ বছরের মধ্যে একবার হতে পারে। শতবর্ষে একবারই ফুল ফোটে বাঁশ গাছে। সে কারণে মানুষের চোখে এই ঘটনা খুব কম পড়ে। এতদিন ধরে একটা বাঁশঝাড় টিকিয়ে রাখা তো সভ্য মানুষের কাজ নয়। তবে ঘটনাটা সব বাঁশের ক্ষেত্রে ঘটে কিনা নিশ্চিত নই। দিনাজপুরে ঘটেছে বেরুয়া নামের এক জাতের বাঁশে। যাতে মনে হচ্ছে বিশেষ কোন কারণে বিশেষ কোন প্রজাতির ক্ষেত্রে ঘটনাটি ঘটে।"

অনেক গ্রামে কুসংস্কার আছে বাঁশ গাছে ফুল ফুটলে অমঙ্গল হয়। দুর্যোগ নেমে আসে। দিনাজপুরের মানুষ অবশ্য এটাকে দুর্যোগ হিসেবে দেখেনি। তারা মনের সুখে বাঁশ থেকে চাল সংগ্রহ করে ভাতের পাশাপাশি পিঠা-পুলি খেয়ে যাচ্ছে। শুধু সাঞ্জু রায়ই কয়েক মন ধান বিক্রি করেছেন ৪০ টাকা কেজি দরে। এটা জেনে ভালো লেগেছে।
বাঙালিদের কাছে এটা নতুন মনে হলেও উত্তরবঙ্গের কোন কোন আদিবাসী গোষ্ঠির কাছে এই বিষয়টা অনেক আগ থেকেই জানা। তারা বহুবছর ধরে বাঁশফুল থেকে ধান সংগ্রহ করার রীতির সাথে পরিচিত।
মানুষ গবাদি পশুর চেয়ে উন্নত জাতি হলেও সারা দুনিয়ার মানবজাতি আসলে ঘাস খেয়েই বেঁচে আছে। ধান, গম, যব, ভুট্টাসহ যত ধরণের শস্যদানা আছে সবই কোন না কোন জাতের ঘাস। সবগুলোই পোয়াসি গোত্রের সন্তান। ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে একজন ভাতের দেবী আছেন। তাঁর নাম শ্রীদেবী। ভালো ফসলের জন্য তাঁর পুজা করা হয়। সেই দেবির আদি নামও পোহাসি।
দেখা যাচ্ছে পুরো মানবসভ্যতাই ঘাস খেয়ে টিকে আছে।

রাজু ও মীনার গল্প বনাম বাংলাদেশের আইসিটি শিক্ষার ভুল প্রয়োগ


এটা একটা বাচ্চা ছেলের কাজ। ইন্টারনেট স্পীড চেক করার একটা টুল। বানিয়েছে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া এক কিশোর। ধরা যাক ছেলেটার নাম রাজু। একটা অ্যামেচার প্রোগ্রামার সাইটে টপ-১০ হতে পেরেছে বলে খুশি হয়ে আমাকে জানিয়েছে। কিন্তু বাইরের কাউকে জানানো বারণ। আমি তবু ওকে আড়াল করে পোস্ট করছি। কারণটা পরের অংশে আসবে। আমি জানি এগুলো তার স্কুলের পড়াশোনার অংশ নয়। শখের কাজ। নিজের আনন্দের জন্য করা। কিন্তু বড় হয়ে ওসব নিয়ে পড়াশোনার ইচ্ছে।
রাজুর এসবে খুব আগ্রহ থাকলেও তার বোন মীনা একদম বিপরীত। সে এসব কাজে মোটেও আগ্রহী না। মীনা পড়ে একাদশ শ্রেণীতে। বাণিজ্য বিভাগে। তার আগ্রহ শিল্প সংস্কৃতি। সে ছবি আঁকে, গান গায়। তবে মুশকিল হলো অন্যান্য বিষয়ের সাথে তাকে আইসিটি নামক একটা বিষয় পড়তে হয়। তার শিক্ষা কিংবা ভবিষ্যত ক্যারিয়ার কোনটার সাথে এই বিষয়ের সম্পর্ক নেই। তবু তাকে ওই ঢেকি গিলতে হচ্ছে দিনের পর দিন। কারণ সবার জন্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে বিষয়টি। ওটার জন্য কোচিং লাগে, টিচার লাগে, অনেক সময়ও লাগে। ছোটাছুটি করে সে মোটামুটি গলদঘর্ম। কিন্তু উপায় নেই। নইলে নইলে পরীক্ষা খারাপ হবে। জিপিএ ফাইভের যুগ এটা।
আমি আইসিটির লোক না হলেও একজন প্রযুক্তিবান্ধব মানুষ। পেশাগত কারণে গত পঁচিশ বছর ধরে আইসিটি সেক্টরের সাথে নানাভাবে কাজ করছি। ফলে আমি মীনাদের আইসিটি সিলেবাসটা দেখে খুব অবাক হয়েছি। আমি ভাল করে জানি এই বিষয়টা সাধারণ ক্যারিয়ারের ছাত্রছাত্রীদের কোন কাজে আসবে না। যারা কম্পিউটার বিজ্ঞান কিংবা ওই সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করবে তাদের জন্যই দরকার।
তবু বাংলাদেশে আইসিটি বিষয়ে এমন সব অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে যেগুলো কেবলমাত্র কম্পিউটার বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত। এই বিষয়টা এত কড়াকড়িভাবে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে কেন? এদেশের প্রতিটি ছাত্রছাত্রীকে আইসিটিতে বিশেষজ্ঞ হতে হবে? প্রোগ্রামিং জানতে হবে?
একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শতাধিক বিষয় থাকে পড়ার। একটা দেশে হাজারো পেশার মানুষ থাকে। এত পেশার মধ্যে কয়টা পেশায় ওই বিদ্যা কাজে লাগবে? কম্পিউটার সায়েন্স বাদে আর কোন বিষয়ের ছাত্রছাত্রীর কী এই বিদ্যা কাজে লাগবে?
তবু কেন দেশের কোটি কোটি ছাত্রছাত্রীর অনিচ্ছুক মাথার ভেতরে জোর করে আইসিটির নামে অপ্রয়োজনীয় কিছু সিলেবাস গিলিয়ে দেবার চেষ্টা করা হচ্ছে? সাধারণ কম্পিউটার চালানোর জন্য বেসিক কিছু প্রোগ্রাম বাদে আর কিছুই দরকার নেই। যারা কম্পিউটার নিয়ে বিশেষ কিছু শিখতে চায় তারা নিজের আগ্রহে শিখবে। যেমন রাজু শিখেছে, আরো হাজার হাজার রাজু আছে বাংলাদেশে। কেউ প্রোগ্রামিং, কেউ গ্রাফিক্সে, কেউ ডেটাবেস, কেউ নেটওয়ার্কিং, যার যেটা পছন্দ সেটা বেছে নিবে। এ জন্য বিজ্ঞানের ছাত্র ছাড়াও বাণিজ্য, মানবিক সব বিভাগের ছাত্রছাত্রীকে এক যোগে জাভা, এইচটিএমল,সিএসএস, সি প্লাস প্লাস, এলগরিদম, নেটওয়ার্কিং শিখতে হবে? সবগুলার কাজ কী একই? অদ্ভুত এই নীতি। যারা শিক্ষানীতি তৈরি করেন, তাদের মাথায় কী এসব জিনিস আসে না?
আমি গত বছর নতুন কারিকুলাম নিয়ে অনেক সমালোচনা দেখেছি। স্কুলের ক্লাসে ডিমভাজি আর আলুভর্তা শিক্ষা নিয়ে প্রচুর হাসাহাসি হয়েছে। আমার মনে হয় সব মানুষের জীবনে কোন না কোন সময়ে ডিমভাজির শিক্ষাটা কাজে লাগবে। কিন্তু ৯৯% মানুষের জীবনে একবারও এসব প্রোগ্রামিং শিক্ষা কোন কাজে আসবে না। অথচ ডিমভাজি নিয়ে অভিভাবকদের যেরকম সরব হতে দেখেছি আইসিটি নিয়ে কোন কথা বলতে শুনি না। আমার মতে আইসিটি ডিমভাজির চেয়েও অপ্রয়োজনীয় একটা বিষয়।
আইসিটির মতো বিষয় থাকবে ঐচ্ছিক। ওটা এক্সট্রা কারিকুলামের অংশ। যার ভালো লাগবে সে শিখবে, পড়বে, ক্যারিয়ার গড়বে। কিন্তু আপনারা সারা দেশের সব মানুষকে রাজু বানিয়ে ফেলতে চাইছেন জোর করে। অথচ দেশে রাজু বানাবার মতো কয়টা বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেটা ভেবেছেন? তাছাড়া দেশে কী শুধু রাজু তৈরি হবে? মীনাদের কোন দরকার নেই? যে ছাত্র/ছাত্রী ওই বিষয়ে বিন্দুমাত্র আগ্রহী নয়, তাকে কেন অপ্রয়োজনীয় একটা শিক্ষা জোর করে গিলিয়ে খাওয়াতে হবে?