প্রায় ৩৩ বছর পর রবির সাথে দেখা। আমার ছেলেবেলার বন্ধু। জোর করে বাসায় নিয়ে গেল। গল্প করতে করতে রবি পুরোনো দিনের স্মৃতির অ্যালবাম খুলে বসলো। আমাদের মধ্যে সবচেয়ে শান্ত সুবোধ ছেলে রবি। কিন্তু ভেতরে ভেতরে সে যে কত অশান্ত ছিল তা গত তিন দশকেও জানতে পারিনি। এখন পড়ন্ত বেলায় অবলীলায় গল্পের ঝুড়ি খুলে বসেছে। সারাদিন ওর বাসাতে কেটে গেল গল্পে আড্ডায় স্মৃতিচারণায়। ভেবে অবাক লাগে সেই ৩৩ বছর আগে আমরা কলেজে পড়তাম। সেদিনের কথা যেন। তখনো ভালো করে গোঁফও ওঠেনি।
কলেজে ভর্তি হবার প্রথমদিনে হঠাৎ করে পুলিশের হাতে পড়ে গিয়েছিলাম। এরশাদের সামরিক শাসনের কাল। যে সময়ে ছাত্রদের মিছিলে ট্রাক তুলে দেয়া হয়েছিল তার পরের বছর আমরা কলেজে উঠি। পথে পথে মিলিটারী ট্রাকে হেলমেট পরা জলপাই বাহিনী। তখনো রাজনীতি বুঝি না। তবু কলেজের প্রথমদিনই পুলিশ এসে আমাদের গ্রেফতার করেছিল কলেজের ভেতর থেকেই। ১৪৪ ধারা অমান্য করে মিছিল করে পেছনের পথে পালিয়ে গিয়েছিল তাদের বদলে আমাদের ৩৫ জন নবীন ছাত্রকে ধরে একটা প্রিজন ভ্যানে ঠাসাঠাসি করে ইঁদুরের মতো ভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল কোতোয়ালী থানায়। রবিও ছিল সেই দলে। ছাড়া পেয়েছিলাম পরে। নিরপরাধ বলে নয়, আমাদের সাথে প্রভাবশালী সরকারী কর্তার পুত্রও গ্রেফতার হবার কারণে সেই রাতেই মুচলেকা দিয়ে ছাড়া পেয়েছিলাম সবাই।
আমাদের কেউ কেউ রাজনীতি করতো, কেউ কেউ প্রেম করতো, কেউ ছিল সিরিয়াস পড়ুয়া। এর মাঝে আমরা কয়েকজন মিছিল ও কলেজ দুটোকে ফাঁকি দিয়ে সিনেমা দেখতে যেতাম লায়ন সিনেমার ব্যালকনিতে বসে ৬ টাকা দামের টিকেট কেটে। রবি আর আমি ছিলাম নিয়মিত দর্শক।
এতটা ঘনিষ্ট হয়েও কিছু কথা রবি কখনোই বলেনি আমাকে। আজকে জানালো তুচ্ছ এক ঘটনায় রবিকে কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী একদিন কলেজের এক কর্ণারে নিয়ে ক্ষুর দিয়ে ভয় দেখিয়েছিল খুন করে ফেলবে। তখন ক্ষুর বহন করতো মাস্তান ছেলেরা। ঝামেলা লাগলে পেটে একটা আঁক দিয়ে ভুড়ি ফাঁসিয়ে দিত।
রবি ভয় পেলেও কাউকে কিছু বলেনি সেদিন। এত বছর পর জানালো- মনে মনে কেমন ক্ষুব্ধ হয়েছিল। তখন শুধু নিজেকে বলতো আরো সাহসী হতে হবে, আরো সাহস চাই। মরণকে ভয় করা চলবে না। ভয়কে জয় করার জন্য একদিন সে সিদ্ধান্ত নিল সেও ক্ষুর বহন করবে সাথে। কিন্তু ক্ষুর পাবে কোথায় তা জানে না।
বাসায় একদিন কী জানি খুঁজতে খুঁজতে বাবার ড্রয়ার থেকে ছোট্ট একটা ছুরি পেয়ে গেল। সেই ছোট্ট ছুরিটা এক খাপে ভাজ করা থাকে। খাপ খুলে দুটো ছুরি বের করা যায়। একটা ছোট্ট, আরেকটা একটু বড়। ছুরিটা দিয়ে বড়জোর একটা আপেল কাটা যাবে। দেখতে নিরীহ। তবু তার ধার পরীক্ষা করতে হাতে একটু লাগাতেই আঙুল কেটে রক্ত বের হলো। রবি খুব অবাক। এই ছোট্ট জিনিসের এত ধার। ছুরিটা রবির বাবা বিদেশ থেকে এনেছিল। তখন মাছমার্কা ছুরির খুব জয় জয়কার। রবির শখ ছিল একটা মাছমার্কা ছুরি কিনবে। সেই শখ পুরণ করা সহজ ছিল না। তাই এই ছুরিটাকে আপাতত মাছ মার্কা ছুরির বিকল্প হিসেবে নিয়ে সে বাবার ড্রয়ার থেকে ছুরিটা সরিয়ে নিজের কাছে নিয়ে নিল।
পরদিন কলেজে যাবার সময় পায়ের সাথে একটা বেল্ট দিয়ে বেঁধে নিল ছুরিটা। যারা ক্ষুরের ভয় দেখিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে এই ছুরিটা কাজে লাগাবে। পরপর কয়েকদিন ছুরি নিয়ে কলেজে যাতায়াত করার সময় ওর বুকটা সাহসে ভরে উঠলো। এবার কাউকে ভয় পায় না। কেউ জানে না তার সাথে ধারালো ছুরি আছে। কেউ ঝামেলা পাকালে এই ছুরি হাতে নিয়ে পাল্টা আঘাত করবে।
কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তার সাথে পরে আর কেউ ঝামেলা পাকাতে এলো না। সেই হুমকিদাতা ছেলেদের সাথেও বন্ধুত্ব হয়ে যায় তার। আস্তে আস্তে ছুরির প্রয়োজনীয়তা কমে যায়। ছুরিটা আশ্রয় নেয় তার ড্রয়ারের তলায়। সেই আশ্রয়ে কেটে যায় তেত্রিশ বছর। কিছু কিছু জায়গায় জং ধরলেও এখনো ছুরিটা আছে স্মৃতির সম্বল হয়ে। রবি আমাকে ছুরিটা বের করে দেখালো।
তারপর সেই ছুরি নিয়ে সে আরেকটা গল্প বলতে শুরু করলো।
কলেজ পেরিয়ে ভার্সিটিতে যাওয়ার পর একটা মেয়ের সাথে তার প্রেম হয়েছিল। ঠিক প্রেম না, একরকমের বন্ধুত্ব যেটাকে বাইরে থেকে প্রেমের মতো লাগে। অথবা এটা প্রেমই ছিল। যদিও কখনো মুখ ফুটে বলা হয়নি, ভালোবাসি। মেয়েটা পড়তো একই বর্ষে অন্য ডিপার্টমেন্টে। প্রতিদিন ট্রেন স্টেশনে দেখা হতো দুজনের। নিয়ম মেনে মেয়েটা প্রতিদিন ওর জন্য সিট রাখতো, দুজন পাশাপাশি বসে আসা যাওয়া করতো। বর্ষার দিনে দুজনে মিলে ঝালমুড়ি খেতে খেতে ট্রেনের জানালা দিয়ে ধানক্ষেতের রূপ দেখে মুগ্ধ হয়ে যেতো। শীতের কুয়াশা যখন আড়মোড়া ভাঙ্গতো সকালে, মেয়েটা ওর জন্য অপেক্ষা করতো ষোলশহর স্টেশনে।
মাঝে মাঝে রবির সাথে মেয়েটার মান-অভিমান কিংবা ঝগড়া-বিবাদ হতো। যখনই তেমন কিছু হতো তখন রবির সাথে মেয়েটা কথাবার্তা বন্ধ করে দিত। রবি যতই চেষ্টা করতো মেয়েটা ততই দূরে সরে যেতো। এই যন্ত্রণা ছিল অসহ্য। যন্ত্রণার উপশম ঘটানোর জন্য রবি নুতন একটা যন্ত্রণাকে আমদানী করলো। একদিন মেয়েটার কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হবার পর রবি ঘরে এসে ছুরিটা দিয়ে ওর বাম বাহুতে হালকা একটা আঁক দিল। সাথে সাথে ছিটকে রক্ত বের হতে থাকলো। রবি রক্তের ধারার দিকে তাকিয়ে থাকলো আর মনে মনে বললো, আজ প্রথমদিন। পরের দিনও যদি মেয়েটা কথা না বলতো, তখন রবি আরেকটা আঁক টানতো। এভাবে প্রতিদিন একটা করে আঁক দিয়ে রবি মেয়েটার প্রত্যাখ্যানের যন্ত্রণাকে চিহ্নিত করতো। রবি ঠিক করেছিল যদি পরপর সাতদিন মেয়েটা সাড়া না দেয় তাহলে সে হাতের রগ কেটে জীবনাবসান ঘটিয়ে ফেলবে। সে জানতো ছুরিটা ওই কাজে পারঙ্গম। কিন্তু কপালগুনে মেয়েটা কখনোই পাঁচদিনের বেশী দূরে থাকেনি- রবি এটা ভেবে অবাক হতো। সে কখনো মেয়েটাকে বলেনি তার এই গোপন আত্মপ্রতিশোধের যন্ত্রণার কথা।
একদিন মেয়েটার বিয়ে হয়ে গেল। আশ্চর্যের বিষয় যে রবি তখন কিছুই করেনি। কোন আঘাত পাওয়ার লক্ষণ দেখায়নি। বরং দাওয়াত পেয়ে ছোট্ট একটা উপহার নিয়ে বিয়ের আসরে উপস্থিত হয়েছিল লাজুক মুখে। দুজনেই চোখাচোখি হতে হেসে দিয়েছিল। রবি এখনো হাসতে লাগলো পুরোনো কথা মনে করে। বলে, ভাগ্যিস ওকে বিয়ে করিনি। এখন সে বুড়ি নানী হয়ে যে চেহারায় দাঁড়িয়েছে তাতে ভাবতে শিউরে উঠি ওকে কখনো ভালোবাসতাম ভেবে।
আমি রবির নিষ্ঠুরতার দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেলাম। কী অবলীলায় একসময়ের প্রণয়িনীকে বুড়ি নানী বলে উপহাস করছে। যার জন্য একসময় ছুরিতে হাত কেটে ফেলতে দ্বিধা করতো না। এইই হলো প্রেমের আরেক বাস্তবতা।
হাসতে হাসতে জিজ্ঞেস করলাম, হাতের সেই দাগগুলো এখনো আছে নাকি। রবি শার্টের হাতা গুটিয়ে দেখালো, অনেকগুলো সারিবদ্ধ দাগ এত বছরেও মুছে যায়নি পুরোপুরি।
আমাদের গল্পের মাঝে ভাবী নাস্তার ট্রে হাতে উপস্থিত হলে রবি একটু থতমত খায়। রবির শার্টের গুটানো হাতা দেখে ভাবীও হেসে দিয়ে বললেন, তোমার সেই ঐতিহাসিক বীরত্বের দাগগুলো নিয়ে গল্প করে যাচ্ছো?
রবি চুপ করে থাকলো। আমি বোকার মতো হাসলাম কিছু না বুঝে, রবির থতমত খাওয়া চেহারার দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম, ভাবী কী জানে এই কাহিনী? রবি মুখ খোলার আগেই ভাবী বলতে শুরু করলেন, বুঝলেন ভাই, আপনার বন্ধু জীবনে একবারই বাঘের সাথে লড়াই করে বেঁচে ফিরেছে, সেই বীরত্ব দিয়ে বাকী জীবন কাটিয়ে দিল। আমি বিয়ের এই আঠারো বছরে আর কোন বীরত্ব দেখলাম না।
আটকে রাখা দমটা বোধহয় রবি ছাড়তে পারল এবার। আমার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপে দিল। বুঝলাম ভাবীর কাছে বাঘের গল্প হয়ে উপস্থাপিত হয়েছিল সেই ঘটনাটি। রবি তাড়াতাড়ি প্রসঙ্গ পাল্টে বললো, আমার কথা বাদ দে - তোর বীরত্বের কথা শুনি এবার।
আমি বললাম, আমার বীরত্ব সেই ছাত্রজীবন শেষ হবার আগেই ফুরিয়ে গেছে। দেখানোর সুযোগ পেলাম কই? কলেজে পড়ার সময় মার্শাল আর্ট শিখে জিমন্যাস্টিকে ভর্তি হয়েছিলাম, সেখানে জাম্প করতে গিয়ে একজনকে কিক মেরে কাবু করে দেবার পর ইনস্ট্রাকটর আমাকে ঘাড় ধরে বের করে দিয়েছিল। বীরত্বের সুযোগ ওখানেই শেষ।
ভাবী ভেতরে চলে গেলে রবি একটু কেশে বললো, আচ্ছা সেই মেয়েটির কথা মনে আছে? কলেজে তোকে সিগারেট খেতে দেখে বকুনি দিয়েছিল? আমরা সবাই খাচ্ছিলাম কিন্তু বকাটা তোকেই দিল কেন বুঝতে পেরেছিলি?
ঘটনাটা আমার মনে পড়লো। শিপ্রাকে আমি পছন্দ করতাম, কিন্তু বকা কেন দিয়েছিল এত বছর পর মনে থাকার কোন কারণ নেই। আমি মাথা নাড়লাম। না, জানি না।
রবি হেসে দিল এবার। বললো, আসলে শিপ্রাকে আমি খুব পছন্দ করতাম। একদিন ছুটির পর একা পেয়ে যখন ওকে বলার চেষ্টা করেছি সে একটুতে বুঝে গেল আমি কোন পথে যাচ্ছি। চট করে বলল, সরি, আমি তো একজনকে কথা দিয়েছি। আমি তখন নাম জানতে চাইলে বললো- নাম বলা যাবে না। সেদিন নাম না বললেও আরো বছর দশেক পর ওর সাথে মার্কেটে দেখা হয়েছিল। তখন বিয়ে হয়ে গেছে ওর। বাচ্চার জন্য কী একটা কিনতে এসেছে। দেখা হবার পর দুজনে চা খেলাম পুরোনো দিনের গল্প করলাম। তারপর আস্তে করে জিজ্ঞেস করলাম, যাকে কথা দিয়েছিলে তাকেই বিয়ে করেছো? সে একটু বিমর্ষ হয়ে মাথা নাড়লো। তারপর জিজ্ঞেস করলাম, এখন কী নামটা বলা যায়? সে একটু ভেবে যে নামটা বললো তাতে আমি সত্যি চমকে গিয়েছিলাম।
আমি জানতে চাইলাম - কার নাম বলেছিল সে?
রবি হাসতে হাসতে বললো, অবিশ্বাস্য মনে হলেও সে তোর নাম বলেছিল।
এবার আমি এতখানি অবাক হলাম যে মুখ দিয়ে কয়েক সেকেণ্ড কোন শব্দ বের হলো না। শিপ্রা কখনো আমাকে ঘুণাক্ষরেও কখনো বলেনি বা ইঙ্গিত দেয়নি আমার প্রতি তার কোন দুর্বলতা আছে। তাহলে 'কথা দিয়েছে' বলার মানে কী?
রবিকে সেটার ব্যাখ্যাও দিয়েছিল শিপ্রা। বললো, আমি ওকে পছন্দ করতাম ঠিকই। আবার এটাও জানতাম যে ওর বয়স এখনো অনেক কম, আমাদের ধর্ম আলাদা, সব মিলিয়ে এই সম্পর্কটা আমাদের মধ্যে দাঁড়াবে না। তাই ওকে মুখ ফুটে বলিনি। তবে নিজেকে মনে মনে কথা দিয়েছিলাম, ওকে ভালোবাসবো। বেসেছিলামও। বোকাটা বোঝেনি কিছুই।
মনে পড়লো ক্লাস শেষ করে আমি আর শিপ্রা দুজনে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতাম বারান্দায়। আমার অপেক্ষা ছিল অন্য ডিপার্টমেন্টের এক বন্ধুর জন্য, শিপ্রা করতো তার এক বান্ধবীর জন্য। সেই স্বল্প সময়ে আমরা দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ কথা বলতাম। এলোমেলো। অর্থহীন। সেই এলোমেলো অর্থহীন কথা বলার সময়টা যে প্রেমঘটিত কোন ব্যাপার হতে পারে সেটা বোঝার বয়স বা মানসিক বোধ আমার ছিল না।
আজ এত বছর পর পুরোনো বাগানের একটা ফুল ফোটার সংবাদে কেমন একটা অপ্রত্যাশিত পুরস্কার প্রাপ্তির মতো উদ্বেলিত হয়ে গেল মনটা।
আরো কিছুক্ষণ গল্প সেরে রবির কাছ থেকে বিদায় নিলাম। গলিপথ পেরিয়ে বড় রাস্তায় এসে একটা রিকশা নিলাম। একটা শীতল দমকা হাওয়া এসে শরীর জুড়িয়ে দিল। বিকেল থেকেই টুকরো টুকরো মেঘ জমতে শুরু করেছিল আকাশ জুড়ে। খানিক পরেই বৃষ্টি নামবে অঝোর ধারায়। বাতাসে বৃষ্টির মাতাল করা ঘ্রাণ উড়ছে। আমি হারিয়ে যাওয়া মেঘের ডানায় ভাসতে ভাসতে বাসার দিকে রওনা দিলাম। রবির সাথে সারাদিনের মন ভরানো আড্ডা মাঝ বয়সের ক্লান্তিকে অনেকটা দূর করে দিল। সেই সাথে ভুলে যাওয়া অনেক পুরোনো স্মৃতি নতুন করে আনন্দ জাগাতে শুরু করলো।
যে নারীর সাথে জীবনে আর কখনো যোগাযোগ হবার কোন সম্ভাবনা নেই, সেই নারীকে ঘিরে অপরূপ কিছু স্মৃতি আমার আকাশে ভিড় করতে শুরু করলো। আর ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টির কণা স্মৃতির মণিমুক্তো হয়ে মাথার উপর ঝরতে থাকে। রিকশার হুড না তুলে আমি উপভোগ করতে লাগলাম সেই বর্ষণ।