Monday, August 17, 2020

বিদ্যাসাগরের জন্মসার্ধশতবর্ষ ও গ্রাম মধুবনীর নকুল মণ্ডল

জ্যোৎস্নাময় ঘোষের দুষ্প্রাপ্য গল্প

 

 

আরে এই নকুল,নোক্‌লে বাড়ি আচিস?....নকুল মণ্ডলের বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে হাঁক পাড়ে নকড়ি,সেই সঙ্গে সাইকেলের ঘন্টিও বাজতে থাকে জোরে জোরে।


ছিটে বেড়ার দরজা পেরিয়ে নকড়ির হাঁক এবং ঘণ্টির বাজনা ভেতর বাড়ির উঠোনে দাপাদাপি করে বেড়াতে থাকে,কুন্তি গোবরের তাল ফেলে পড়ি-মরি করে ছুটে আসে,বাঁ হাতে ঘোমটা টেনে বেড়ার আড়াল থেকে ফিফিস করে বলে,সি তো বাড়ি লাই,মাটে।


অ। - কথাটা বলেই সাইকেলের বেলের কান মুচড়ে দেয় নকড়ি। -তালে একটা খবর করাও। তার এয়েচে। জরুরী খবর মনে লিচ্চে।


কি এসিচে - বলে কিছুক্ষণ শব্দটাকে নিয়ে নাড়াচাড়া করে অবরুদ্ধ কান্নায় ভেঙে পড়ে কুন্তি,ও আমার কি হঅলো রে বা-বা...।


নকডি অপ্রস্তুত। গাঁয়ের ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসের পিওন সে,খবর বিলনো তার কাজ,অবিশ্যি কালেভদ্রে কখনো-সখনো 'তার'আসে মধুবনী গাঁয়ের ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসে,নকড়ি তার দীর্ঘ ছ-বছরের পিওন জীবনে 'তার' বিলিয়েছে মাত্র পাঁচটি। গাঁয়ের লোকজনের মতো তারও একটা 'তার-ভীতি' রয়েছে,তারের খবর সাধারণত ভাল হয় না। তবু,নকুল মণ্ডলের বর্ষীয়ান বউ কুন্তির এই আকস্মিক বিলাপ-ধ্বনিতে অপ্রস্তুত হয়ে পড়ে সে,এই মুহূর্তের কুন্তিকে যেন চিনতে পারে না নকড়ি,কে বলবে,এই কুন্তির দাপটেই মধুবনী গাঁয়ের পুব পাড়ায় কাক-চিল তিষ্ঠোতে পারে না।