প্রাকৃতিক নির্বাচন বিষয়টা কী পরিকল্পিত হতে পারে? নাকি কেবলই একটি দুর্ঘটনাক্রম। এই যে মহাবিশ্বের বিলিয়ন বিলিয়ন নির্জীব নিষ্প্রাণ বস্তুকণা সমৃদ্ধ নক্ষত্রমণ্ডলীর আমাদের পৃথিবীর এই প্রাণচাঞ্চল্য, এটি কী একটি নেহায়েত দুর্ঘটনা, দৈবাৎ ঘটে যাওয়া ব্যাপার? এরকম দুর্ঘটনা আর কতটি ঘটেছে মহাবিশ্বে?
কয়েকশো কোটি বছরের মধ্যে এমন ঘটনা দ্বিতীয়টি আর কোথাও ঘটেছে কিনা আমরা জানি না। আর কোথাও ঘটেছে কিনা সেটা জানার জন্য যে মাপের অনুসন্ধানী যন্ত্র দরকার তা আমাদের এখনো নেই। ধরা যাক সেরকম একটি যন্ত্র আবিষ্কার হয়ে গেল যা দিয়ে এক কোটি আলোক বর্ষ দূরে বার্তা পাঠানো সম্ভব। সেই যন্ত্র পঞ্চাশ লাখ আলোকবর্ষ পরিধির মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর দুটো জগতের সন্ধান পেল। সেই তথ্য পাওয়ার পর এই পৃথিবীর মানুষ বুঝতে পারবে পঞ্চাশ লাখ বছর আগে ওখানে আরেকটি প্রাণময় জগতের অস্তিত্ব ছিল। কিন্তু সেই জগতটি এখনো বহাল আছে কিনা সেটা নিশ্চিত হবার উপায় নেই। বর্তমান অবস্থা জানতে চেয়ে কোন বার্তা পাঠানো হলে তার জবাব আসবে পঞ্চাশ লাখ বছর পরে। ততদিনে আমাদের এই মানবসভ্যতার কোন অস্তিত্ব পাওয়া যাবে? এক লক্ষ বছর পরে এই পৃথিবীর প্রাণীজগতের কোন অস্তিত্ব থাকবে? এক হাজার বছর পরের অবস্থা কল্পনা করাও কষ্টসাধ্য এখন। মহা বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে অতি নগণ্য এই মানবজাতি তবু প্রতিনিয়ত যেসব বিপুল বৈপ্লবিক চিন্তা চেতনার বিষয় নিয়ে হানাহানি করে সেটা মহাজাগতিক অর্থে নিতান্ত হাস্যকর একটা ব্যাপার। মানুষ দূরে থাক, পৃথিবীর কথাও বাদ দেই, আমাদের যে বিপুল আয়তনের নক্ষত্র সৌরমণ্ডল, সেটাই মহাজগতের প্রেক্ষাপটে একটা জীবাণুরও অধম।
একটি মহাজাগতিক জীবাণু ভাবনা!
No comments:
Post a Comment