Friday, January 24, 2025

ধর্মীয় আবর্জনা

পৃথিবীতে যত ধর্ম আছে সবগুলোতেই কমবেশি ধর্মব্যবসায়ী আছে। কিন্তু সংখ্যার বিচারে সবচেয়ে বেশি মূর্খ, অবিবেচক, স্বার্থান্ধ ধর্মব্যবসায়ী সম্ভবত দুটো প্রধান ধর্মেই আছে। হিন্দু এবং মুসলমান। এই দুই ধর্মের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভণ্ডামি করা যায়। এইসব ভণ্ডের অধিকাংশ ভারতবর্ষের অধিবাসী। মজার ব্যাপার হলো উপমহাদেশের কোটি কোটি নির্বোধ মানুষ অন্ধের মতো এইসব ভণ্ডকে অনুসরণ করে। এরা নিজ নিজ ধর্মকে মহাবিশ্বের শ্রেষ্ঠ হিসেবে জাহির করে। ধর্মান্ধতার চশমা পরলে যুক্তি কিংবা জ্ঞানবিজ্ঞানের সবকিছু উপেক্ষা করতে পারে। ধর্মব্যবসায়ীদের যে কোনো অযৌক্তিক আহ্বানে প্রাণও বিসর্জন দিতে পারে। মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় এই আবর্জনাগোষ্ঠি রাজনীতির সহজ হাতিয়ার। সুযোগ থাকা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার সমাজ শত শত বছর ধরে বিশৃংখল রয়ে গেছে এই আবর্জনাগুলোর কারণে।

Tuesday, January 21, 2025

চন্দ্রপৃষ্ঠে পৃথিবী উদয়

 


পূর্নিমার পৃথিবী যেন সবুজ মার্বেল। গহীন অন্ধকার আকাশে সেই মার্বেলের আধখানা। সেই ফটোগ্রাফার কী ভাবছিল ছবিটা তুলতে গিয়ে?

This view from the Apollo 11 spacecraft shows the Earth rising above the moon’s horizon. The lunar terrain pictured is in the area of Smyth’s Sea on the nearside. Coordinates of the center of the terrain are 85 degrees east longitude and 3 degrees north latitude. While astronauts Neil A. Armstrong, commander, and Edwin E. Aldrin Jr., lunar module pilot, descended in the Lunar Module (LM) “Eagle” to explore the Sea of Tranquility region of the moon, astronaut Michael Collins, command module pilot, remained with the Command and Service Modules (CSM) “Columbia” in lunar orbit.

Friday, January 3, 2025

লেখক হবার দায়

"আমি ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বাস করি একজন লেখকের পক্ষে মন দিয়ে লেখালেখি করা ছাড়া অন্য কোনও বিপ্লবী বাধ্যবাধকতা নেই। যে কোনও শাসনের অধীনে প্রথাবিরোধী অবস্থান লেখকের জন্য একটি অপরিহার্য বিষয়। এটা এড়িয়ে থাকার কোনও উপায় নেই। কারণ যে কোনও আপোষকামী লেখককে ডাকাতের সাথে তুলনা করা যায় এবং সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে সে অবশ্যই একজন খারাপ লেখক।"

[লেখক হবার দুর্গতি- মার্কেজ]

আমি একসময় নিয়মিত বইমেলায় যেতাম। ছাত্রজীবনে পকেটে টাকা না থাকলেও ধার কর্জ করে ঢাকা বইমেলায় গিয়ে ঘুরে বেড়াতাম খালি পকেট নিয়ে। বইয়ের জগতের আবহাওয়ায় প্রাণভরে শ্বাস নিতাম। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনটা আমার খুব প্রিয় ছিল। পুকুর পাড় ঘিরে বইয়ের ছোট ছোট স্টলে টিমটিমে আলো জ্বলতো। খুব বেশি ভিড় হতো না। বইমেলার কথা উঠলে সেই মেলাই এখনো আমার চোখে ভেসে ওঠে। তখনো সেলফি টিকটকের যুগ আসেনি। মানুষ বইয়ের জগতে গেলে বই নিয়েই সময় কাটাতো।

এখন অনেক কিছু বদলে গেছে। আমি আর আগের মতো বইমেলায় যাবার উৎসায় পাই না। গত দশ বছর আমি ঢাকা বইমেলায় যাইনি। চট্টগ্রামের মেলায় যাওয়াও কমিয়ে দিয়েছি। বই প্রকাশ হতে শুরু করার পর থেকে বইমেলায় যেতে ইচ্ছে করে না। বইমেলার প্রচলিত কিছু দৃশ্য আমার পছন্দ নয়। লেখক নিজের বই হাতে নিয়ে পোজ দিয়ে ছবি তুলছে পাঠকের পাশে দাঁড়িয়ে, এটা অনেকের পছন্দের। কিন্তু আমার ভালো লাগে না। আমি কখনো নিজের বই হাতে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করিনি।

আমি মেলায় গিয়ে পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করি না। আমি চাইনা আমাকে দেখে চক্ষুলজ্জায় কেউ বই কিনুক। বই তার নিজস্ব যোগ্যতায় পাঠকের চোখে পড়বে এটাই আমার চাওয়া। আমার প্রথম বই থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত তাই হয়ে এসেছে। পাঠক আমাকে চেনে না, কিন্তু আমার বই চেনে। এটা ভালো লাগে। অনেক পাঠক আমার সাথে দেখা করতে চায়, অটোগ্রাফ চায়। আমি পারতপক্ষে এড়িয়ে থাকতে চায়। নেহাত সামনাসামনি হয়ে গেলে তখন এটা করতে হয়। আমি কখনো কাউকে বলি না আমার বই ভালো, আমার বই কেনো। আমার বইয়ের ভালোমন্দ নিয়ে পাঠকই বলে।

আমার সব অচেনা পাঠক, অচেনা ক্রেতা। আমার চেনাজানা আত্মীয় বন্ধুদের মধ্যে আমার বইয়ের ক্রেতা পাঠক খুব কম। আমি পরিচিত অনেকেই জানে না আমার লেখালেখির জগত নিয়ে। আমি তাদের কাছ থেকে নিজেকে আড়ালে রাখি। আমার এই আড়ালপ্রিয়তা প্রকাশকের ব্যবসাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে কিনা জানি না। কিন্তু এখনো কোনো প্রকাশক সেটা নিয়ে অভিযোগ অনুযোগ করেনি। তারা আমার কাছে শুধু পাণ্ডুলিপিটা চায়। বই বিক্রিতে আমার অংশগ্রহন চায় না। এটা আমার জন্য খুব স্বস্তির বিষয়। আমি শুধু লেখালেখির ভেতরে নিজেকে আটকে রাখতে চাই। সভাসমিতি, লোকসমাগম, আলোচনাসভা ইত্যাদি আমার ভালো লাগে না। আমি সব ধরণের ভিড় এড়িয়ে চলি। ঘনিষ্ঠ দুয়েকজন লেখক বন্ধু বাদে আমার তেমন কারো সাথে যোগাযোগ নেই। অর্থাৎ লেখকদের যে সমাজ সেখানেও আমি যোগ দেই না।

আমি আসলে লেখক সমাজের কেউ না। আমি মূলত পাঠক। আমি পড়তে পড়তে কিছু টুকিটাকি বিষয় লিখে ফেলি। সেই লেখা জমতে জমতে বই হিসেবে প্রকাশিত হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। আমার লেখক জীবনে ব্যাপার শুধু এটুকুই।

Thursday, January 2, 2025

চায়ের বিজ্ঞাপন ১৯৪০

 


মধ্যবিত্ত বাঙালি চা খেতে শিখেছে চল্লিশ দশক থেকে। সেই চা খাওয়াতে কত কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে, কত লোভ দেখাতে হয়েছে তার অনেক ইতিহাস আছে। এখানে চায়ের বিজ্ঞাপনের সামান্য একটা নমুনা দিলাম। ১৯৪০ সালের একদিনের পত্রিকার পাঁচটা চায়ের বিজ্ঞাপন। ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি বিশাল বিজ্ঞাপন দিয়ে সরকার জনগণকে উৎসাহিত করছে এই উপভোগ্য ফসল থেকে মানুষ যেন বঞ্চিত না হয়। কিভাবে চা বানাতে হবে সেটাও শিখিয়ে দিচ্ছে বিজ্ঞাপনের পাতায়। চা নিয়ে হঠাৎ করে এমন উঠে পড়ে লাগার রহস্য কী?



আসলে ত্রিশ চল্লিশ দশকে দুনিয়াজোড়া মহামন্দা এবং মহালড়াইয়ের কারণে চা রপ্তানী বন্ধ হবার পথে। সাহেবদের পকেট খালি। গুদামে চায়ের বস্তা জমে আছে। তাই দেশের ভেতরে যে কোনো উপায়ে চা গেলাতে পারলে কিছুটা রক্ষা। যদিও তার একশো বছর আগ থেকে ভারতে চা উৎপাদন শুরু হয়েছিল, কিন্তু প্রায় সবই রপ্তানী হতো সারা দুনিয়াতে। তখন দেশীয় প্রজাদের কখনো চায়ের দাওয়াত দেয়নি ঔপনিবেশিক সরকার।